ফেনীতে জাগরন গ্রুপের  ৩০  কোটি টাকা নিয়ে উদাও জামায়াত নেতা সবুজ! 

ফেনী প্রতিনিধি-ফেনীতে প্রায় তিন শতাধিক গ্রাহকের বিনিয়োগকৃত ৩০  কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছে জামায়াত নেতাদের ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান  জাগরণ গ্রুপ। গা-ঢাকা দেয়ার ঘটনায় এরই মধ্যে বিনিয়োগকারীরা পাঁচটি মামলা করলেও প্রতিষ্ঠানটির কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আটক করতে পারেনি পুলিশ।

 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ‘আস্থার প্রতিচ্ছবি’ স্লোগান নিয়ে ২০০৮ সালে দাগনভূঞা উপজেলায় স্থানীয় কিছু ব্যক্তি প্রতিষ্ঠা করেন জাগরণ কো-অপারেটিভ লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন পূর্ব চন্দ্রপুর মডেল ইউনিয়নের সাবেক  চেয়ারম্যান ও জামায়াত নেতা আবদুল হাই সবুজ।প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ও ব্যবস্থাপনা কমিটিতে বেশিরভাগ জামায়াতের লোকজন ছিল। সবুজের  নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক ও পদ্ধতিগত স্বচ্ছতা থাকায় অল্প সময়ের মধ্যেই গ্রাহকদের বিশ্বস্ততা অর্জনে সক্ষম হয়। এক বছরের মাথায় ফেনী শহরে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয় স্থাপন করা হয়। এখানেও চলে মোটা অংকের বিনিয়োগ ও আমানত সংগ্রহ। ২০১১ সালে জাগরণ কো-অপারেটিভকে রূপান্তর করা হয় জাগরণ গ্রুপে। এরই মধ্যে জাগরণ রিয়েল এস্টেট, জাগরণ সুপার-সপ, জাগরণ লেদার হাউজ, জুতা তৈরি, মিনারেল ওয়াটার বাজারজাতসহ একাধিক নিজস্ব প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে গ্রুপটি।

প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, বছরে ২০-৩০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা দিয়ে ৩৬০ জন গ্রাহকের কাছ থেকে বিনিয়োগ গ্রহণ করে জাগরণ গ্রুপ। ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠানটির নিট সম্পদের মূল্য দাঁড়ায় ৩০ কোটি ৩৪ লাখ ৫৮ হাজার ৭০৭ টাকা। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে তত্কালীন চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন প্রতিষ্ঠানটির এমডি আবদুল আউয়াল সবুজের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে পদত্যাগ করেন। ওই সময় তিনি তার নিজের ও তার রেফারেন্সে জমাকৃত বিনিয়োগ প্রত্যাহার করেন। এরপর থেকেই প্রতিষ্ঠানটির ভাঙন শুরু হয়। গ্রুপটির বিভিন্ন কার্যক্রমে পিছুটান থাকায় একে একে বন্ধ হতে থাকে অঙ্গপ্রতিষ্ঠানগুলো। বিষয়টি বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টিগোচর হলে তারা গচ্ছিত টাকা তুলে নিতে আবেদন করেন। কিন্তু একসঙ্গে এত টাকা ফেরত দিতে না পেরে অফিসে অনিয়মিত ও পরে অফিসে তালা লাগিয়ে সাইনবোর্ড খুলে ফেলেন কর্মকর্তারা।এরপর থেকে গ্রুপের কর্মকর্তারা পলাতক রয়েছেন।তবে কয়েকজন  কর্মকর্তারা শুরু থেকে অন্তরালে থাকার কারনে তারা গ্রাহকেরা টাকা মেরে দেয়ার পরেও  বর্তমানে  তারা স্বাভাবিক অবস্থায় ঘুরাপিরা করছে বলে অভিযোগ উঠেছ।। এরপর বিনিয়োগকারীরা তাদের টাকা ফেরত পেতে অন্তত পাঁচটি মামলা করলেও কোনো সুরাহা হচ্ছে না।এদিকে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সন্ধ্যান দিতে পারলে ১ লক্ষ টাকা পুরস্কার দেয়ার ঘোষনা দেন করিম নামের এক বিনিয়োগকারী।

আবু আহম্মদ নামে এক বিনিয়োগকারী জানান, পাঁচ বছর ধরে তিনি জাগরণ গ্রুপে ২ লাখ টাকা বিনিয়োগের লাভ দিয়ে তিন সন্তানের শিক্ষাব্যয় বহন করতেন। কিন্তু গত বছর থেকে প্রতিষ্ঠানটি অর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তারা কোনো লভ্যাংশ দিচ্ছে না। বিনিয়োগের টাকা উত্তোলন করেও ওই টাকা ফেরত পাননি তিনি।

এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য জাগরণ গ্রুপের কর্মকর্তা অথবা পরিচালনা কমিটির কোনো সদস্যকে পাওয়া যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *