ফেনীর পরশুরামে নির্যাতনের শিকার আরেক গৃহকর্মী

ফেনী প্রতিনিধি :

নির্যাতনের শিকার হয়ে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সের বিছানায় ছটপট করছে ফাতেমা (১৪) নামের আরেক গৃহকর্মী। ৭ জুলাই শুক্রবার নির্যাতন শিকার হয়ে পালিয়ে পরশুরাম উপজেলার বাঁশপদুয়া গ্রামের বাড়ীতে আসলে মূমর্ষ অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করায়।

নির্যাতিতার মা রাশেদা আক্তার জানান, চলতি বছরের মে মাসে এক নিকটাত্মীয়ের মাধ্যমে ফেনীর নাজির রোডে বাবু নামের এক মোবাইল ব্যবসায়ীর বাসায় মাসিক ১ হাজার ৭শ’ টাকা বেতনে কাজে দেন বড় মেয়ে ফাতেমা আক্তার (১৪)। কয়েকদিন যেতে না যেতে গৃহকর্তার স্ত্রী ঝিলিক তার উপর নানা ভাবে নির্যাতন শুরু করেন। ঠিকমতো খাবার না দিয়ে মেঝেতে ঘুমাতে দিত। বিষয়টি মাকে ফোনে বলার পর ফাতেমার উপর নির্যাতনের মাত্রা বাড়তে থাকে। সর্বশেষ ৭ জুলাই শুক্রবার তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গৃহকর্তী ঝিলিক ফাতেমাকে ঝাড়– দিয়ে পিটাতে থাকে। অকর্থ ভাষায় গালি-গালাজ করে চোখে মুখে ও শরীরে বিভিন্ন স্থানে কিল ঘুসি মারতে থাকে। এক পর্যায়ে গলায় পা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। এসময় ঝিলিক বলে ‘তোর কেউ নেই, তোকে মেরে ফেললে তোর লাশ নিতে কেউ আসবেনা’। এক পর্যায়ে ঝিলিকের ফোন বেজে উঠলে ফাতেমাকে ছেড়ে দিয়ে কল রিসিভ করতে গেলে আরেকটি বাসায় পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নেয় ফাতেমা। পরদিন শনিবার তাকে পরশুরামের গাড়িতে করে বাড়িতে পাঠায় আশ্রয়দাতা বাসার মালিক। ওইদিনই তাকে মুমুর্ষ অবস্থায় পরশুরাম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় নির্যাতিতার পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

এদিকে মঙ্গলবার শহরের নাজির রোড় এলাকায় গৃহকর্তী ঝিলিকের বাসা তালাবদ্ধ দেখতে পায় পুলিশ। স্থানীয়রা জানায়, গত দু-তিন ধরে ওই বাসা তালাবদ্ধ দেখতে পায় তারা।

পরশুরাম স্বাস্থ কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা.আবু তাহের জানান, হাত-পাসহ তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ফাতেমাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

পরশুরাম থানার পরিদর্শক (ওসি) আবুল কাশেম চৌধুরী জানান, বিষয়টি জেনে তদন্তের জন্য পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

এর আগে আমেনা নামের আরেক গৃহকর্মীর উপর অমানুষিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। রবিবার স্থানীয় এক পথচারী তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে খবরটি প্রকাশ পায়। পরে মঙ্গলবার পুলিশ নির্যাতনকারী আফরোজা আক্তারকে গ্রেফতার করে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *