বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত কুমিল্লা বিবির বাজার স্থলবন্দর

 

এম,তানভীর আলম :

সমস্যায় ধুঁকছে কুমিল্লা বিবির বাজার স্থলবন্দর। ১৯৯৫ সালে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি আনতে করতে কুমিল্লা বিবির বাজার স্থলবন্দরের মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানি শুরু হয়। কিন্তু বর্তমানে এই স্থলবন্দরের আমদানির পরিমাণ প্রায় শূন্যের কোটায়। সেই সাথে নানা সমস্যায় জর্জরিত কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন অফিস। তবে ওই স্থলবন্দর দিয়ে তুলনামূলক হারে বৃদ্ধিপেয়েছে দুই দেশের নাগরিক ও দর্শনার্থীদেরযাতায়াত। সিএন্ডএফ এজেন্ট ও কাস্টম কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, ব্যবসা-বাণিজ্যে ও প্রযুক্তির যুগে দিন দিন পিছিয়ে পড়ছে বিবির বাজার স্থলবন্দর। ১৫-১৬টি সিএন্ডএফ এর রেজিস্ট্রেশন থাকলেওবর্তমানে রপ্তানি করছে মাত্র ৪টি এজেন্ট।অতীতে এই স্থলবন্দর দিয়ে দৈনিক দেড় শতাধিক গাড়ি মালামাল নিয়ে দু’দেশে যাতায়াত করতো। বর্তমানে এটা প্রায় শূন্যের কোটায় এসে দাঁড়িয়েছে। ২০১৬ সালেরজুলাই থেকে চলতি বছরে এপ্রিল পর্যন্ত রপ্তানি হয়েছে প্রায় ৬০ কোটি টাকার পণ্য। তার মধ্যে শতকরা ৮০ ভাগ সিমেন্ট। অন্যান্য পাথর ও প্লাস্টিক ২০ ভাগ। তবে আমদানির অনুমতি আছে ৭-৮টি এজেন্টের। কিন্তু সব ধরনের মাল আমদানি করার অনুমতি না থাকায় বিপাকে ওই এজেন্টরা। বর্তমানে এই বন্দর দিয়ে আমদানি হচ্ছে জিরা, হলুদ, মরিচ, আদা ও তেঁতুল।কাস্টমস অফিসের কর্মকর্তা সাধন জিৎ চাকমাজানান, প্রতিদিন শত শত পণ্য বোঝাই ট্রাক আমদানি রপ্তানি কাজে বন্দরে প্রবেশ করে। পণ্য বোঝাই ট্রাকের ওজন মাপার যন্ত্র ওয়েট ব্রিজ এবং অবৈধ পণ্য আটকের জন্য ওয়ে ব্রিজ কোনোটিই নেই। এছাড়া কাস্টমস অফিসেরঅবস্থা একেবারে নাজুক, নেই টয়লেট, পানির ব্যবস্থা ও যাত্রীদের বসার জায়গা। একটু বৃষ্টি হলেই চাল ছুঁয়ে পানি পড়ে। এছাড়া রয়েছে জনবল সংকট।রপ্তানিকারক কাজী জাকির হোসেন জানান, এই স্থলবন্দরটি জেলা শহরের খুব কাছে, যা বাংলাদেশের কোনো জেলায় নেই। তারপরও সরকারএই স্থলবন্দরের দিকে নজর দিচ্ছে না। তিনি বলেন, এই বন্দরে কোনো কোনো রপ্তানিকারক বাএকজন চালক খুব দূর থেকে মাল নিয়ে আসছে। ওই মাল রপ্তানি করতে অনেক সময় দুইদিনও লেগে থাকে। তাহলে তাকে ট্রাকেই থাকতে হয়। এখানে নেই কোনো বসার স্থান, খাওয়ার ব্যবস্থা, পানির ব্যবস্থা এমনকি নেই একটি টয়লেটও।চট্টগ্রাম থেকে আসা ট্রাক চালক আমির হোসেন জানান, এই বন্দরে আসতে হলে শহর থেকে ২/১ দিনের খাওয়া নিয়ে আসতে হয়। মাল খালাসের জন্য ২/১দিন সময় লাগলে একটু বসার ব্যবস্থা, খাওয়ার পানি ও টয়লেটের ব্যবস্থা নেই। এতে অনেক সমস্যার সম্মুখীনহতে হয়।কুমিল্লা স্থলবন্দরের সিএন্ডএফ এজেন্ট সমিতির নেতা নির্মল পাল জানান, কুমিল্লা বিবির বাজার স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য রপ্তানির ১৫-১৬ টি সিএন্ডএফ এর রেজিস্ট্রেশন থাকলেও ৩/৪টি এজেন্ট কিছু পণ্য রপ্তানি করছে। কারণ এ বন্দর দিয়ে সব ধরনের পণ্য আমদানি করা যায় না। পূর্বে বিবির বাজার দিয়ে প্রচুর পরিমাণ পাথর রপ্তানি হত। কিন্তু বর্তমানে তা না বললেই চলে। তবে ইতোমধ্যে কিছু পরিমাণ সিমেন্ট রপ্তানি হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *