দিনে মেসে রান্না করি :রাতে মা ও মেয়ে গার্মেন্টসে কাজ করি

“সুখ-দুঃখ তো সবসময়ই ভাগাভাগি করে নেই, ছবিটাও একসাথেই তোলেন। প্রায় ছয় বছর হয়ে গেলো এইখানে আমি এসেছি। স্বামী সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ার পরে দুই রুমের সংসার ছেড়ে এইখানে ছোট্ট একটা ঘর ভাড়া নিয়ে আছি। সেই থেকে একটা মেসের রান্না করে দেই আর রাতের বেলা গার্মেন্টসের জন্য ফিতা বান্ডেল করার কাজ করি।

 

স্বামী মারা যাওয়ার আগে পর্যন্ত কাজ করতে হয়নি কোন। মোটামুটি ভালোই চলছিলো দিন। কিন্তু উনি এমন হঠাৎ করে চলে গেলেন যে কিছু বোঝার আগেই দেখলাম আমার শ্বশুরবাড়িতে আমার কোন জায়গা নেই। দেবর-ভাসুর বলে দিলো, আমার স্বামী নাকি সব সম্পত্তি ওদের কাছে অনেক আগেই বিক্রি করে দিয়েছে। অনেক যুদ্ধ করলাম, কিন্তু সবশেষে বুঝতে পারলাম এই দেশে জোর যার মুল্লুক তার। তাই আশা ছেড়ে দিয়ে এখানে এসে উঠলাম। এইযে, আমার পাশে মিনু ভাবি, বকুল আপা আর আমিনা চাচী। উনারা সেই তখন থেকেই আমার পাশে আছেন। এই একলা জীবনটা খুব কষ্টের হতো এই মানুষগুলো না থাকলে। অভাব আর টানাটানি সবারই আছে, কিন্তু ওরা না থাকলে কঠিন দিনগুলো পার করার কথা ভাবতেও পারতাম না। ছেলেটা এবার কারিগরি শিক্ষাবোর্ড থেকে এসএসসি পাশ করে গার্মেন্টসে কাজ নিয়েছে। ওকে বলেছি, চাকরি কর আর যেটাই কর, মা’কে যেমন সম্মান কর, এই মানুষগুলোকেও করবে। বিপদে যারা পাশে দাড়িয়েছে তাদের এইটুকু শ্রদ্ধা তো প্রাপ্যই।” – একজন গার্মেন্ট কর্মীর মা।

সম্পাদনা / সৈয়দ মনির।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *