নিউজ ডেস্কঃ
কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ উপজেলার মধ্যবর্তী সুরমা নদীতে একটিমাত্র সেতুর অভাবে দুর্ভোগের পড়েছেন দুইপারের মানুষ। সিলেট-৫ সংসদীয় আসনের অর্ন্তগত কানাইঘাট উপজেলার ১নং লক্ষীপ্রসাদ ইউনিয়নের কাড়াবাল্লা ও জকিগঞ্জ উপজেলার কাজলশার ইউনিয়নের আটগ্রাম গ্রামের মাঝামাঝি স্থানে সুরমার উপরে সেতু না থাকায় বেশিই ভোগান্তিতে রয়েছেন নদীর উত্তর পারের মানুষ। নদীর দক্ষিণ পারে রয়েছে বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিদিনই সহস¯্রাধিক শিক্ষার্থীকে যাতায়াত করতে হয়। জীবিকার তাগিদে নদীর দক্ষিণ পারটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়েছে উত্তর পারের জন সাধারণের কাছে। এছাড়াও প্রতিনিয়ত জরুরী কাজে তাদেরকে আসতে হয় নদীর দক্ষিণ পারের আটগ্রাম তথা জকিগঞ্জসহ সিলেট শহরে। কিন্তু যাতায়াতের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে সুরমা নদী। বর্ষার মৌসুমে নৌকাযোগে তাদেরকে এপারে আসতে হয়। শুকনো মৌসুমে স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত বাঁশের সাঁকো পারাপারে নানা প্রতিকুল পরিস্থির সম্মুখীন হতে হয় কাড়াবাল্লাবাসীকে।
একটি বাঁশের সাঁকো দিয়ে দুই দিকের মানুষের মালামালসহ পারাপারে নিতে হয় অনাকাক্সিক্ষত ঝুঁকি। এছাড়াও গুরুতর অসুস্থ রোগীর ক্ষেত্রে এই কাজটি যেনো আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে।
জানা যায়, আটগ্রাম ও কাড়াবাল্লার মধ্যভাগে অবস্থিত বাঁশের সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন সহস্রাধিক জনসাধারণ ও স্কুল-কলেজ এবং মাদরাসা শিক্ষার্থীরা তাদের কর্মস্থল কিংবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পৌঁছাতে হয়। সেতুর অভাবে কর্মজীবনে যেমন স্তবিরতা নেমে আসে তেমনি অনাগ্রহতা সৃষ্টি হয় প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ক্ষেত্রে।
স্থানীয়রা জানান, শুকনো মৌসুমে বাঁশের সাঁকো-ই হচ্ছে পারাপারের একমাত্র মাধ্যম। অল্প বৃষ্টিজলে নদীগর্ভে ডুবে যায় সাঁকোটি। ফলে ডুবন্ত সাঁকো দিয়ে কিংবা ইঞ্জিন চালিত নৌকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পার হন কোমলমতি শিক্ষার্থী ও অত্রাঞ্চলের প্রায় ২০-২২ হাজার মানুষ। ডোনা, বড়চাতল, কাড়াবাল্লা থেকে প্রতিনিয়ত ছাত্রছাত্রীদের জকিগঞ্জ সরকারি কলেজ, ইছামতি কামিল মাদরাসা, ইছামতি ডিগ্রী কলেজ, সড়কের বাজার উচ্চ বিদ্যালয়’ লুৎফুর রহমান স্কুল এন্ড কলেজ, আটগ্রাম আমজদিয়া দাখিল মাদরাসা এবং আটগ্রাম বাজারের পার্শ্বস্থ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যেতে হয়।
অথচ নদী পারাপারে প্রতিদিনই ঘটছে ছোটখাটো কোন দুর্ঘটনা। এসব দুর্ঘটনায় অনেক সময় মানুষের প্রাণহানীসহ বিভিন্ন ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়ে থাকে। আর তা মোকাবেলা করতে হয় বিশেষ করে উত্তর পারের মানুষদের। সব রকম দুর্ঘটনা বা অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে দুই পারের মানুষের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি ছিলো একটি মাত্র সেতু। স্থানীয় সরকার বা সংসদীয় নেতার সুদৃষ্টিই পারে এই সেতুর দাবিটি বাস্তবায়িত করতে, এমনটি মনে করেন স্থানীয়রা।
তারা বলেন, দুই পারের মানুষের কথা চিন্তা করে, তাদের দাবি বিবেচনায় নিয়ে সংসদ সদস্য যদি বিষয়টি সংসদে উত্থাপন করেন, তাহলে হয়তো এখানকার মানুষের প্রাণের দাবি বাস্তবায়নে সরকার পদক্ষেপ নিতে পারেন। তারা বলেন, আমরা বার বার স্থানীয় সরকারসহ সাংসদের কাছে দাবি উত্থাপন করেছি। উনারা এই বিষয়ে যথেষ্ট অবগত রয়েছেন। এখন আর নতুন করে তাদের বলার কিছু নেই। শুধুমাত্র তাদের সদিচ্ছাই পারে একটি সেতুর ব্যবস্থা করে দিতে।