নিউজ ডেস্ক: কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সামনে রেখে পেছন থেকে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে নতুন করে তৎপরতা শুরু করেছেন ইসলামী ছাত্র শিবিরের সক্রিয় কর্মী মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন ও তার সহযোগীরা। এর আগে কোটা আন্দোলনকে সহিংস রূপ দেওয়ায়, এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসভবনে হামলা করে আন্দোলনকে সরকার বিরোধী আন্দোলনে রূপ দেয়ার অপচেষ্টা চালানোর মতো পরিকল্পনাও বাস্তবায়িত হয় শিবির কর্মী রাশেদের হাত ধরে। আন্দোলনকে সহিংস করতে বাঁশেরকেল্লা, আন্দোলন নিউজ লাইভসহ একাধিক বেনামী ফেসবুক পেজ ও নিউজ পোর্টালে মিথ্যা তথ্য প্রচার করেন রাশেদসহ শিবিবের একাধিক কর্মীরা।
এর আগে ছাত্র শিবিরের সাথে সম্পৃক্ততার জন্য সূর্য সেন হল থেকে রাশেদকে বহিঃষ্কারও করা হয়। আন্দোলনের পৃষ্ঠপোষকতায় ছিলো বিএনপি-জামায়াত-শিবির।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাশেদের জন্ম ঝিনাইদহ জেলার মুরারীদহ গ্রামে। তার বাবা মোঃ নবাই বিশ্বাস এলাকায় একজন স্বীকৃত রাজাকার। তারই আদর্শে গড়ে ওঠা রাশেদ নিজেকে শিবিরের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে গড়ে তোলে। তার বাবা স্বাধীনতা যুদ্ধে দেশবিরোধী অবস্থানের জন্য নিজ এলাকায় ঘৃণিত।
সরকারকে বিব্রত করতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে দেশব্যাপী চরম সহিংসতায় তত্পর ছিল জামায়াত-শিবির ও বিএনপির একশ্রেণীর নেতাকর্মীরা। এতে বিশেষভাবে তত্পর ছিলো জামায়াত-শিবির। তারা দেশজুড়ে আন্দোলনের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পরিকল্পনা করেছিল। মূলত রাশেদকে এজেন্ট হিসেবে ব্যবহার করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পথভ্রষ্ট করে বিশৃঙ্খলা তৈরিই ছিল তাদের মূল উদ্দেশ্য।
জানা যায়, আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণার দুদিন আগে কুষ্টিয়াসহ দেশের কয়েকটি স্থান থেকে শিবির ও ছাত্রী সংস্থার কর্মীদের ঢাকায় জড়ো করা হয়। এর নেতৃত্ব ছিলেন শিবির কর্মী রাশেদ। এ আন্দোলনের মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল, যে ঘোষণাই দেয়া হোক না কেন দাবি না মেনে আন্দোলনকে দীর্ঘায়িত করা এবং নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে ও হামলা চালানো হয়েছে এমন গুজব ছড়িয়ে সারাদেশে আন্দোলন বিস্তৃত করা। এক পর্যায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি এনে বিএনপি জামায়াত একাত্মতা ঘোষণা করলে সরকার পতনের আন্দোলনে রূপদান করা।
এদিকে রাশেদের আদর্শ সম্পর্কে আরোও নিশ্চিত হওয়া যায় তার সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন স্ট্যাটাসের মাধ্যমে। প্রমাণ মিলেছে রাশেদ খাঁনের অ্যাকাউন্ট থেকে শিবিরের বিভিন্ন পেজে লাইক-কমেন্ট শেয়ার থেকেও। নিজের ফেইসবুক একাউন্টের একটি স্ট্যাটাস উল্লেখ করলে বোঝা যায় শিবিরের সাথে তার সম্পৃক্ততা। তিনি লিখেছেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনের মুখপাত্রের নামের তালিকা; কেন্দ্রীয় ছাত্র শিবিরের সাধারণ সম্পাদক মোবারক হোসাইন, কেন্দ্রীয় ছাত্র শিবিরের সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক সালাউদ্দিন আইয়ূবী, কেন্দ্রীয় ছাত্রশিবিরের স্কুল কার্যক্রম বিষয়ক সম্পাদক মাশরুর হোসাইন, কেন্দ্রীয় ছাত্র শিবিরের প্রকাশনা সম্পাদক সালাউদ্দিন মাহমুদ, কেন্দ্রীয় ছাত্রশিবিরের বিতর্ক বিভাগের সভাপতি আল মামুন রাসেল।’ ফেইসবুকের আরেকটি পাতায় মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন লিখেছেন, ‘একমাত্র ইসলামের ছায়াতলে রয়েছে শান্তির ঠিকানা।’ এই শিরোনামের নিচে রয়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জাফর ইকবালের বিকৃত করা ৫টি ছবি।
সূত্র বলছে, শিবিরের সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততা রাশেদ অস্বীকার করে আসলেও নতুনভাবে কোটা আন্দোলনের ব্যানারে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের নির্দেশ পেয়েছে। যা আরও বৃহৎ আকার ধারণ করতে পারে।