যে ৫ কারণে ২০ দল থেকেও নেই | বাংলারদর্পন

 

নিউজ ডেস্ক: শীর্ষ নেতাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে মুমূর্ষু বিএনপি। দুর্নীতি মামলায় দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কারাদণ্ডের পর তা আরও ভয়াবহতায় রূপ নিয়েছে। এমনকি ২০ দলীয় জোটভুক্ত শরিক দলের নেতারা জোটে নিজেদের গুরুত্বহীনতাকে মেনে নিতে না পেরে বিএনপিকে আল্টিমেটাম দিচ্ছে। এতে দীর্ঘদিনের দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক জোট ভাঙারও পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে। বিশ্লেষকরা ২০ দলের অনৈক্য, অবিশ্বাস আর মতবিরোধের কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে ৫টি কারণ চিহ্নিত করেছে। যে ৫ কারণে ২০ দল এখন থেকেও নেই। ২০ দলীয় জোটের প্রকৃতি থেকে তারা বিচ্ছিন্ন।

কারণগুলো হলো:

প্রথমত, ২০ দলীয় জোটের নেতা বেগম খালেদা জিয়া দুর্নীতির দায়ে কারাদণ্ড প্রাপ্ত হবার পর নেতৃত্ব নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়। ২০ দলে এমন অনেক নেতা আছেন যারা রাজনীতিতে বিএনপির বর্তমানে যেকোন নেতার চেয়ে অভিজ্ঞ। যেমন কর্নেল (অব.) অলি আহমেদের কথাই ধরা যাক। তিনি এলডিপির নেতা। এক সময় বিএনপির শীর্ষ নেতা ছিলেন। একমাত্র ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার ছাড়া বিএনপির বর্তমান নেতৃত্বের সবাই তার জুনিয়র। বেগম জিয়ার বন্দিত্বের পর ২০ দলের একটি মাত্র বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেখানে আলোচনায় কর্নেল (অব.) অলি আহমেদই বার বার সিদ্ধান্তদাতা হিসেবে উঠে আসছিলেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বা অন্য নেতারা মনে করছেন, ২০ দল সচল থাকলে নেতৃত্ব অলি আহমেদ, সৈয়দ মুহম্মদ ইব্রাহিম কিংবা আন্দালিব রহমান পার্থ’র মতো জনপ্রিয় নেতাদের হাতে চলে যাবে। ২০ দলকে অকার্যকর রাখার এটি একটি বড় কারণ।

দ্বিতীয়ত: ২০ দলীয় জোটের শরিকদের কাছে খবর আছে যে, বিএনপি সরকারের সঙ্গে গোপন সমঝোতা করছে। জোটের অনেক নেতাই প্রায় নিশ্চিত, আন্দোলনের আড়ালে আসলে বিএনপি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এজন্যই ২০ দলীয় জোটের শরিকরা মনে করছে, আগামী নির্বাচনে কোন দল কয়টা আসন পাবে তা এখনই ফয়সালা হোক। কিন্তু বিএনপি এখনই আসন ভাগাভাগিতে যেতে রাজি নয়। শরিকরা বলছে, তাদের ঠকানোর জন্যই বিএনপি লুকোচুরি খেলছে।

তৃতীয়ত: জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করার জন্য বিএনপির উপর আন্তর্জাতিক চাপ রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ভারত বারবার বিএনপিকে বলছে, গণতান্ত্রিক রাজনীতি করতে হলে জামায়াত ছাড়তে হবে। আবার জামায়াত ছাড়া ২০ দলীয় জোট মূল্যহীন। বিএনপি একটি ডান উদারপন্থী জোট গঠনে উৎসাহী।

যেখানে বিকল্প ধারা, নাগরিক ঐক্য, গণফোরাম, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের মতো দলগুলো থাকবে। কিন্তু জামায়াত থাকলে কেউই বিএনপির সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতে চায় না। এজন্যই বিএনপি ২০ দলে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছে।

চতুর্থত: বিএনপি গোপনে সরকারের সঙ্গে নানা দেন-দরবার করছে। বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় সমঝোতার আলোচনা চলছে। নানামুখী আলোচনায় বিএনপি অন্য কাউকে যুক্ত করতে চায় না। কারণ এতে গোপনীয়তা নষ্ট হবে এবং শরিকরা বাড়তি সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করবে।

পঞ্চমত: বিএনপি বলছে, শরিকদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা সরকারের এজেন্ট হয়ে কাজ করছেন। এদের সঙ্গে সরকারের লেনদেন চূড়ান্ত হয়ে গেছে। নির্বাচন প্রশ্নে ২০ দল ভাঙার চেয়ে আগেই এটি অকার্যকর হওয়া ভালো- এমন চিন্তা বিএনপির অনেক নেতারই। ২০ দল কার্যকর থাকলে শরিকরা বিভীষণের ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে এমন শঙ্কা অনেকের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *