অাজ মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শহীদ নুরুল আবছার দিবস – বাংলারদর্পন

 

 

সৈয়দ মনির অাহমদ : অাজ ১১ ডিসেম্বর।  শহীদ নুরুল অাবছার  দিবস। ১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের আগ মুহুর্তে ১১ ডিসেম্বর বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার  নুরুল অাবছারকে সোনাগাজী থানার ভেতরে গুলি করে কতিপয় মুক্তিযোদ্ধারা। ঘটনাস্থলে তিনি নিহত হন।  দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে অাজ সোনাগাজীতে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের অায়োজন করেছে বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন।

মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শহীদ নুরুল অাবছার  সদর ইউনিয়নের ফরাজী বাড়ীর মৌলভী অাহম্মদ করিমের  ছেলে। ৬ ভাই ও ১ বোনের মধ্যে তিনি ২য়। ১৯৭১ সালে ফেনী সরকারি কলেজের মেধাবী ছাত্র ও  ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন।  ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক দিক নির্দেশনামুলক  ভাষন ও ২৬ মার্চে বঙ্গবন্ধু কর্তৃক স্বাধীনতা ঘোষনার পর তৎকালীন সংসদ সদস্য মাস্টার এবিএম তালেব অালীর ডাকে সাড়া দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেন। ১৯৭১এর  এপ্রিলে সোনাগাজী থেকে  সর্বপ্রথম তিনি প্রশিক্ষনের জন্য ভারতের চোত্তাখোলা ক্যাম্পে যান।  প্রশিক্ষন শেষে দেশে ফিরে সোনাগাজীর সোনাপুর গ্রামে রশিদ মেম্বার বাড়ীতে ক্যাম্প স্থাপন করেন। তিনি এফএফ ফোর্সের গেরিলা কমান্ডার ছিলেন।

 

শহীদ নুরুল অাবছারের সহযোদ্ধা ও ঘনিষ্ট বন্ধু অাবু তাহের তানু জানান, সোনাগাজীর প্রথম প্রশিক্ষন প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা শহীদ নুরুল অাবছার। । নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে তার ভুমিকা ছিল অপরিসীম।  অত্যন্ত মেধাবী ও সাহসি যোদ্ধা ছিলেন তিনি। তার নেতৃত্বে সোনাগাজী -ফেনী সড়কের সাতবাড়ীয়া, বাদামতলি সহ কয়েকটি স্থানে  পাক-হানাদার বাহীনির উপর হামলা হয়েছিল। যুদ্ধ চলাকালে দুদফা সুজাপুর গ্রামস্থ নুরুল অাবছার এর বাড়ীতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করেছিল পানাদার বাহীনি। যুদ্ধকালীন এফএফ ফোর্সের গেরিলা ইউনিট কমান্ডার কে এম খুরশিদ অালম জানান, নুরুল অাবছার প্রশিক্ষন শেষে দেশে ফেরার পর যুব সমাজ কে যুদ্ধে অংশ নেয়ার জন্য উদ্ভুদ্ধ করেছিলেন।  তাকে সহ বহু মুক্তিযোদ্ধাকে দফায় দফায় ভারতে প্রশিক্ষনের জন্য নিয়ে গিয়েছিলেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন (অবঃ) মোহাম্মদ সাদেক জানান, তৎকালীন সেনাবাহিনীর সবচেয়ে মুল্যবান  অস্ত্র এসএমজি নিয়ে  এসেছিলেন।  যুদ্ধে যাওয়ার সময় এ অঞ্চলের সবচেয়ে সাহসী যোদ্ধা ও অস্ত্র চালনায় পারদর্শী হিসেবে নুরুল অাবছারের হাতে সে অস্ত্র তুলে দেন।   মহান মুক্তিযুদ্ধে ফেনীর সাহসী জনপদ সোনাগাজীর নুরুল অাবছার সহ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বে ৫ ডিসেম্বর সোনাগাজী মুক্ত হানাদার মুক্ত হয়।  তাঁর ইতিহাস জাতির কাছে চির স্বরণীয় হয়ে থাকবে।

নুরুল অাবছার ও তার সহযোদ্ধাদের সাহসী নেতৃত্বে ফেনীর অাগেই ৫ ডিসেম্বর সোনাগাজী হানাদার মুক্ত হয়।

দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৭১সালে ১৬ই ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের আগ মুহুর্তে ১১ ডিসেম্বর বীর মুক্তিযোদ্ধা  নুরুল অাবছারকে সোনাগাজী থানার ভেতরে গুলি করে হত্যা করা হয়।

পৌরসভাস্থ হাসপাতাল কমপ্লেক্স  সংলগ্ন  ডাঃ দানিয়েল বাড়ীর পারিবারিক কবরস্থানে তিনি চিরনিন্দ্রায় শায়ীত অাছেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *