লাকসাম আনোয়ারুল আজিমসহ বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মীর পদত্যাগ

আব্দুর রহিম বাবলু,নাঙ্গলকোট কুমিল্লা প্রতিনিধি:-

অগণতান্ত্রিকভাবে ‘অখ্যাতদের’ নিয়ে কুমিল্লার লাকসাম উপজেলা ও পৌরসভা এবং মনোহরগঞ্জ উপজেলা যুবদল-ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার প্রতিবাদে পদতাগ করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ারুল আজিম।
তার সঙ্গে শতাধিক নেতাকর্মীও পদত্যাগ করেছেন বলে বৃহস্পতিবার রাতে সাংবাদিকদের জানান কুমিল্লা-৯ (লাকসাম-মনোহরগঞ্জ) আসনের সাবেক এই সাংসদ।
গত মার্চে দলের জাতীয় কাউন্সিলের পর অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আনোয়ারুল আজিমকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে বিএনপি।
আনোয়ারুল আজীম বলেন, “সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিকভাবে স্থানীয় যুবদল ও ছাত্রদলের কমিটি করায় সেখানকার নেতাকর্মীরা হতাশ। বিষয়টি আমি কেন্দ্রকে জানিয়েছি। কিন্তু কোনো প্রতিকার পাইনি বলে আমি গতকাল নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করে পত্র জমা দিয়েছি।”
তিনি বলেন, “বৃহস্পতিবার বিকালে মহাখালী ডিওএইচএসের রাওয়া ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে কুমিল্লার লাকসাম পৌরসভা, উপজেলা ও মনোহরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ পদত্যাগ করেছেন। সেই অনুষ্ঠানে আমিও কুমিল্লা দক্ষিণের সিনিয়র সহসভাপতি, লাকসাম উপজেলা, লাকসাম পৌরসভা ও মনোহরগঞ্জ উপজেলার এক নম্বর সদস্যপদ থেকেও পদত্যাগ করেছি।”
তিনি জানান, মনোহরগঞ্জ উপজেলার সভাপতি ইলিয়াস পাটোয়ারি, সাধারণ সম্পাদক শরীফ হোসেন শরীফ, সিনিয়র সহসভাপতি মোবারক মজুমদার, লাকসাম উপজেলার সাধারণ সম্পাদক নুর উল্লাহ রায়হান, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ আলম, লাকসাম পৌরসভার সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম খোকনসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ পদত্যাগ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে তারা সবাই ছিলেন বলে জানান আজিম।
সম্প্রতি ঘোষণা করা এসব কমিটির সভাপতি-সম্পাদকসহ উল্লেখযোগ্য পদে দায়িত্ব পেয়েছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শিল্প বিষয়ক সম্পাদক ও লাকসাম উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল কালাম ওরফে চৈতি কালামের অনুসারীরা।
কুমিল্লা-৯ (লাকসাম-মনোহরগঞ্জ) আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল আনোয়ারুল আজিম ও আবুল কালামের মধ্যে। তবে বিএনপির মূলধারার নিয়ন্ত্রণ ছিল আনোয়ারুল আজিমের হাতেই।
আনোয়ারুল আজিম বলেন, “আমি দীর্ঘ দুই যুগ ধরে বিএনপির রাজনীতি করছি। এই এলাকায় নেতাকর্মীরা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে সংগঠিত। তারা সরকারের নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার।
“অথচ আবুল কালাম (চৈতি কামাল) যিনি কেন্দ্রীয় শিল্প বিষয়ক সম্পাদক তিনি অগণতান্ত্রিকভাবে প্রভাব খাটিয়ে যুবদল ও ছাত্রদলের কমিটি করেছেন, যাতে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ। এমতাবস্থায় কেন্দ্রকে বিষয়টি অবহতি করেছি, কোনো জবাব পাইনি। ফলে নেতাকর্মীদের আবেগ-অনুভুতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
এ প্রসঙ্গে আবুল কালাম ওরফে চৈতি কালাম মন্তব্য করেননি।
তবে আনোয়ারুল আজিমসহ শতাধিক নেতাকর্মীর পদত্যাগের বিষয়টি ‘পরিষ্কার নয়’ বলে মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *