সৈয়দ মনির আহমদ : নোয়াখালী জেলার চৌমুহানী এস এ সরকারী কলেজের বোটানিকের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক অাজিজুল হক দীর্ঘ ৪ বছর ধরে মৃত্যুশয্যায় সোনাগাজীর ওয়াপদা সড়কের একটি সরকারী বাসায় দিনাতিপাত করছেন। তিনি ইতিপুর্বে ফেনী সরকারী কলেজ ও সোনাগাজী সরকারী কলেজে শিক্ষকতা করেছিলেন।
তাঁর স্ত্রী রহিমুন্নেসা সোনাগাজী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। তিনি তিন ছেলের জনক, বড় ছেলে মোস্তফা অাজিজ শাহিন মেরিন ইঞ্জিনিয়র, মেঝো ছেলে মাহবুব আজিজ এমবিবিএস ডাক্তার বারডেমে কর্মরত অাছেন এবং ছোট ছেলে মেহেদী অাজিজ ঢাকার একটি কলেজে ২য় বর্ষে অধ্যায়নরত অাছেন।
বুধবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, ওই বাড়ীর ২য় তলার একটি নির্জন কক্ষে শুয়ে অাছেন অধ্যাপক আজিজুল হক। নিরব নিস্তব্দ শায়ীত তিনি কারো উপস্থিতি অাঁচ করতে পারেননি। দেখার, শুনার এবং বুঝার শক্তি তাঁর নেই। আধা ঘন্টা পর দেখা মিলল প্রায় ৫০বৎসর বয়ষী এক ভদ্র মহিলা ফজিলাতুন্নেসা। তিনি নিজের পরিচয় দিলেন অধ্যাপকের শ্যালিকা হিসেবে। তাঁর কথা মতে, বোন স্কুলে শিক্ষকতা করে, ভাগিনারা ঢাকায় তাই অধ্যাপকের দেখাশুনার দায়ীত্ব তাঁর।
দুপুরে বালিকা বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা মিলল মিসেস আজিজ এর সাথে। তিনি বাংলার দর্পন কে জানান, অন্যদের মত ভালো ভাবেই চলছিল দাম্পত্য জীবন। ২০১৪ থেকে মরণব্যাধি “ডিম্যানশিয়া” রোগে অাক্রান্ত হন অধ্যাপক আজিজুল হক। অনেক চিকিসকের দারস্থ হয়েছেন উন্নতি হয়নি উল্টো প্রতিনিয়ত তাঁর স্বাস্থের অবনতি হচ্ছে। ২০১৬সালের শুরুতে বারডেম হাসপাতালে ডাঃ আলাউদ্দিন এর বোর্ড গঠন করে তার চিকিৎসা করেও কোন ফল পাওয়া যায়নি। ডাক্তাররা বলেছে, তাঁর ব্রেনের নার্ভ গুলো শুকিয়ে গেছে, ব্রেন কোন প্রকার কাজ করছেনা। সেই থেকে ডাক্তারের পরামর্শে বাসায় রাখা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, অন্যের সাহায্যে সকল প্রকার খাবার তিনি খেতে পারেন। শারিরিক অক্ষমতার কারনে ২০১৬ সালের ৫মে স্বেচ্ছায় অবসর নেয়ার জন্য আবেদন করেছেন।
সর্বশেষ গত সপ্তাহে এম্বুল্যান্স যোগে কলেজে নিয়েছেন, এককালিন পেনশন হিসেবে প্রায় ৯৭ লক্ষ টাকা পাবেন এবং চিকিৎসার জন্য প্রতিমাসে ১৫শ টাকা করে ভাতা পাবেন। মিসেস রহিমু্ন্নেসা আরো জানান, চিকিৎসকের পরামর্শে স্রষ্টার উপর ভরসা করে অাছি, যতদিন বাঁচিয়ে রাখেন তিনি। সকলের কাছে তাঁর সুস্থ্যতার জন্য দোয়া চেয়েছেন মিসেস আজিজ।
অধ্যাপক আজিজুল হক কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার বাসিন্দা।