সোনাগাজীতে মাছ বিক্রির পাওনা টাকা চাওয়ায় জেলেকে পিটিয়েছে সন্ত্রাসীরা

ফেনী প্রতিনিধি:

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার ৮ নং আমিরাবাদ ইউনিয়নের কুদ্দুস মিয়ার হাটে মাছ বিক্রির পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে জাহিদুল ইসলাম রিপন(৩৪) নামে এক পাওনাদার হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মো: দুলাল (৪০), মো: মুরাদ(৩০)সহ কয়েক জন বখাটে সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে।

হামলাকারীদের রডের আঘাতে গুরুতর জখম হয়ে তিনি সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তার মাথায় ৫ টি সেলাই দেওয়া হয়েছে বলেও জানান কর্তব্যরত চিকিৎসক।

মঙ্গলবার (১৪ই জুলাই) সকালে সোনাগাজী উপজেলার ৮ নং আমিরাবাদ ইউনিয়নের কুদ্দুস মিয়ার বাজারে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

হামলায় নেতৃত্ব দেওয়া অভিযুক্ত মো: দুলাল ও মো: মুরাদ সহ হামলা- কারীরা সবাই ৮ নং আমিরাবাদ  ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। আহত  জাহিদুল ইসলাম রিপন আমিরাবাদ ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের কৃষক আবুল হাসেমের ছেলে।

গুরুতর আহত জাহিদুল ইসলাম রিপন সাংবাদিকদের বলেন, আমি কৃষি কাজ এবং বাড়ির পাশে খালে জাল ফেলে মাছ ধরে সেগুলো বিক্রি করে কোন রকম জীবিকা নির্বাহ করি। সেই সুবাদে গত ১৪ ই জুলাই মঙ্গলবার রাতে  আমাদের বাড়ীর পাশে প্রতিদিনের ন্যায় খালের মধ্যে জাল পেলে মাছ ধরি। হঠ্যা করে আনুমানিক রাত ১ টার দিকে স্হানীয় বখাটে মো: দুলাল ও মো: মুরাদসহ কয়েকজন লোক আমার নিকট আসে এবং তাদের কে টাকা ছাড়াই মাছ দেওয়ার জন্য বলে, আমি তাদের কে মাছ দিতে রাজী না হওয়াতে তারা সবাই আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে আমাকে দেখে নেওয়ার কথা বলে গালিগালাজ করে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়ে চলে যায়। এরই সুত্র ধরে একপর্যায়ে মঙ্গলবার সকালে জালে ধরা পড়া কিছু ছোট মাছ কুদ্দুস মিয়ার বাজারে বিক্রি করার উদ্দেশ্যে নিয়ে যাই।

আগে থেকে বাজারে অবস্থান নেয় মো: দুলাল এবং মো: মুরাদসহ তাদের লোকজন। মো: দুলাল এসে মাছের দরদাম ১৫০ টাকা করে কথা হয় এবং আমাকে এক-কেজী ছোট মাছ দিতে বলে, আমি এক-কেজী ছোট মাছ পরিমাপ করে দিই এবং পরে আরো এক-কেজী মাছ দিতে বললে আমি তাও পরিমাপ করে তার কাছে দিই।

সর্বমোট ২ কেজী মাছ নিয়ে আমার টাকা পরিশোধ না করে চলে যেতে চাইলে,আমি  মো: দুলালের কাছে টাকা চাইলে দুলাল  টাকা না দিয়ে উল্টো  আমার সব মাছ রাস্তার মাঝে পেলে দেয় এবং লোহার রড দিয়ে আমাকে পিটাতে থাকে আর মো: মুরাদ  আমার গলা ছেপে ধরে শ্বাসরোধ করে মেরে পেলার জন্য চেস্টা করে।

আহত জাহিদুল ইসলাম আরো বলেন, এরা দীর্ঘদিন ধরে আমাকে নানা অঝুহাত দেখিয়ে খালে জাল বসালে টাকা দিতে হবে এবং খালে জাল দিয়ে মাছ ধরলে মাছ দেওয়ার জন্য বিভিন্ন সময় উল্টো ভয়ভীতি দেখাতেন ও আমার বাড়ির ক্ষতি সাধন করারও হুমকি প্রদান করতো। আমি ভয়ে কখনো মুখ খুলিনি।

এছাড়াও প্রত্যক্ষ দর্শীরা জানান, হামলাকারীরা জাহিদুল ইসলাম রিপনকে ধারালো অস্ত্র ও লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে। এলোপাতাড়ি মার খেয়ে জাহিদুল ইসলাম রিপন দৌড়ে বাজার থেকে চলে যেতে চাইলেও তারা আবারো তাকে ধরে বাজারে লোকজনের সামনে রাস্তায় ফেলে মাথায় রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে। একপর্যায়ে তার চিৎকারে বাজারে থাকা আশপাশের মানুষ ছুটে এলে হামলাকারী দুলাল ও মুরাদসহ সবাই চলে যায়।

জাহেদুলের পরিবার জানায়,এতো বড় ঘটনা ঘটিয়ে তারা এখন সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমাদের পরিবারের লোকজনকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন যেন এ বিষয়ে কোথাও কোনো অভিযোগ না দেই।

এ বিষয়ে আমিরাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান জনাব জহিরুল আলম জহির জানান, আমি জেলে জাহিদুল ইসলাম রিপনের উপর হামলার বিষয়ে শুনেছি। তিনি জানান জাহিদুল ইসলাম কোনো রকম কৃষি কাজ ও মাছ ধরে তা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে। বাজারে মাছ বিক্রেতা মাছ বিক্রি করবে। আর ক্রেতা টাকার বিনিময়ে মাছ কিনে নিবেন এটাই স্বাভাবিক।  কিন্তুু মাছ কিনে টাকা না দিয়ে উল্টো জাহিদুল ইসলামের উপর যেই হামলার ঘটনাটি ঘটেছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক।

সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: সাজেদুল ইসলাম জানান, কুদ্দুস মিয়ার বাজারে এক জেলে মাছ বিক্রি করে টাকা চাওয়াতে তার উপর হামলার বিষয়ে আহত জাহিদুল ইসলামের মা জাহানারা বেগম থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। বাংলারদর্পণ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *