রাজশাহী :
একাদশ শ্রেণীর মাত্র দু’জন ছাত্রীই ইসলাম শিক্ষা বিষয়ে ক্লাস করত নিয়মিত। কিন্তু ক্লাসে শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম পড়ানোর নামে অপ্রাসঙ্গিকভাবেই যৌনবিষয়ক গল্প জুড়ে দেন। কয়েকদিন বাধ্য হয়েই ছাত্রীরা তা শোনেন। পরে বিব্রতকর অবস্থায় এক ছাত্রী সিরাজুল ইসলামের ক্লাস করা ছেড়ে দেন। এ ঘটনা ঘটেছে রাজশাহী নগরীর জামায়াত সমর্থক প্রতিষ্ঠান ‘মসজিদ মিশন একাডেমি’তে। সিরাজুল ইসলাম নগরীর বোয়ালিয়া থানা জামায়াতের আমীর। অবশেষে এই জামায়াত নেতার যৌন হয়রানি থেকে রক্ষা পেতে কলেজের অধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগও করেছে ছাত্রীরা। কিন্তু গড়িমসি করেই সময় পার করা হচ্ছে। বিচার হয়নি। নির্যাতিত ওই ছাত্রীর লিখিত অভিযোগের একটি কপি যুগান্তরের হাতেও এসেছে। এতে একাদশ শ্রেণীর আরও ১০ ছাত্রী শিক্ষক সিরাজুল ইসলামের এমন কর্মকাণ্ডের সাক্ষী হিসেবে স্বাক্ষর করেছেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, মসজিদ মিশন একাডেমির একাদশ শ্রেণিতে ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের পাঠদানের সময় শিক্ষক সিরাজুল প্রতিনিয়তই ছাত্রীদের অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ গল্প বলেন। এ কারণে এক ছাত্রী ক্লাস করা বন্ধ করে দিয়েছে। অপর ছাত্রীকে ক্লাসে একা পেয়ে যৌনবিষয়ক গল্প বেশি বেশি করে শোনাতে থাকেন। এক পর্যায়ে অতিষ্ঠ হয়ে ওই ছাত্রী ইসলাম শিক্ষা ক্লাসের সময় কমনরুমে গিয়ে লুকিয়ে থাকে। কিন্তু শিক্ষক সিরাজুল তাকে সেখান থেকে ধরে এনে ক্লাসে বসান। এরপর ক্লাসে আবার অশালীন গল্প শোনান। পরদিন থেকে ওই ছাত্রী কমনরুমের টয়লেটে লুকানো শুরু করেন। কিন্তু শিক্ষক সিরাজুল টয়লেটে গিয়ে দরজা ধাক্কিয়ে তাকে বের করে ক্লাসে ধরে আনেন। একদিন ওই ছাত্রী টয়লেটের ভেতরে থাকা অবস্থায় শিক্ষক সিরাজুলের ধাক্কাধাক্কিতে দরজা খুলে যায়। এ ঘটনা কমনরুমের অনেক ছাত্রীই দেখেছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে সিরাজুল ইসলামের ভয়ে ওই ছাত্রী তার এসব কর্মকাণ্ড অধ্যক্ষকে জানাতে পারেননি। কারণ অধ্যক্ষকে জানালে তাকে কলেজ থেকে বের করে দেয়া হবে বলেও তিনি হুমকি দেন। তবে যৌন হয়রানির মাত্রা দিন দিন বাড়তে থাকায় ১৯ এপ্রিল ওই ছাত্রী অধ্যক্ষের কাছে অভিযোগ করে।
মসজিদ মিশন একাডেমির অধ্যক্ষ আকবর আলী বলেন, বুধবার তিনি অভিযোগটি পেয়েছেন। এরপর শনিবার ঘটনা তদন্তে কলেজের শিক্ষক মো. কামরুজ্জামানকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। আগামী ১৬ তারিখের মধ্যে কমিটি তাদের প্রতিবেদন দেবে। এরপর এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া হবে। অভিযুক্ত শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম বলেছেন, তার বিরুদ্ধে একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে। এরই অংশ হিসেবে এ ধরনের অভিযোগ করা হয়েছে। এসব অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই।
রাজশাহী মসজিদ মিশন একাডেমির শিক্ষক জামায়াত নেতা সিরাজের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ
