বানিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল অাহমেদ এর মহানুভবতা: ফেইসবুকে ব্যাপক অালোচনা

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ গাড়িতে চড়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ রাস্তায় দাঁড়িয়ে অচেনা বাবা-ছেলেকে সহযোগিতা করার ঘটনায় চমকে গেছেন নাজমুস সাদাত নাজিম নামের এক ফেসবুক ব্যবহারকারী। তাকে এবং তার শিশুপুত্রের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন মন্ত্রী। এ নিয়ে ফেসবুক পোস্টে নিজের অনুভূতি এবং একজন মন্ত্রীর মহানুভবতার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেছেন তিনি।

রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে শিশুপুত্রকে ভ্যাকসিন দিয়ে ফেরার পথে তাকে নিয়ে রোদের উত্তাপে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে দেশের একজন মন্ত্রী গাড়ি থামিয়ে লিফট দেবেন তা কল্পনারও অতীত ছিল নাজিমের। তার ফেসবুক পোস্ট দেখে বাংলা ট্রিবিউন থেকে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘বাণিজ্যমন্ত্রী আমাদের পূর্বপরিচিত নন। বিষয়টি একেবারেই কল্পনার বাইরে। গাড়িতে ওঠার পর তিনি আমাদের খোঁজ নিয়েছেন, আমার সন্তানকে স্নেহ করেছেন, উপহারও দিয়েছেন।’

বৃহস্পতিবার (৪ মে) বিকালে ফেসবুক স্ট্যাটাসে নাজমুস সাদাত লিখেছেন, “ধন্যবাদ জনাব তোফায়েল আহমেদ, সত্যিই মুগ্ধ হলাম। আজীবন মনে রাখার মতো একটা ঘটনা ঘটলো। ছোটগল্প কিন্তু মনে থাকবে আজীবন।

প্রত্যেক মাসের মতো এ মাসেও আমার একমাত্র সন্তান আযানকে নিয়ে গিয়েছিলাম ভ্যাকসিন দিতে। সব কাজ শেষে নিচে নামার সময় দেখলাম বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ হেঁটে বাইরের ফটকের দিকে যাচ্ছেন। সেখানে তার গাড়ি দাঁড়ানো (গত রাতে অসুস্থ থাকায় স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন)। সঙ্গে ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামছুল হক টুকু। আযানকে নিয়ে ততক্ষনে রাস্তায় দাঁড়িয়ে রিকশার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আমার পাশ দিয়ে মন্ত্রীর গাড়ি অল্প একটু যেতেই আবার দাঁড়িয়ে গেলো। জানালার গ্লাস নামিয়ে তোফায়েল আহমেদ স্যার জানতে চাইলেন—

– এই রোদের মধ্যে বাচ্চাকে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন কেন?

– স্যার, রিকশার জন্য।

– কোথায় যাবেন?

– স্যার পান্থপথ সিগন্যালে।

– আমার গাড়িতে উঠুন, আমি ওইদিক দিয়েই যাচ্ছি।

– না স্যার আমি চলে যাবো।

– আরে সমস্যা নাই, আসুন নামিয়ে দিচ্ছি।

 

হতবাক হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম কিছুক্ষণ। মন এবং নিজেকে বিশ্বাস করাতে পারছিলাম না ঘটনাটি সত্যি কিনা। তারপর আযানকে নিয়ে উঠে বসলাম স্যারের পাশে। আমার বাচ্চাকে তিনি আদর করলেন অনেকক্ষণ। ১৫ মিনিটে অনেক কথা হলো। শেষ পর্যন্ত আবার মুগ্ধ করলেন যখন শুনলেন আমার বাচ্চার জন্মদিন ১০ মে। উপহার কেনার জন্য পকেট থেকে ২০০০ টাকা দিলেন। মন্ত্রী বললেন, ‘আমার পক্ষ থেকে ওর জন্য সুন্দর একটা উপহার কিনে দিবেন।’

 

তারপর আবারও আমার বাচ্চাকে আদর করলেন। বাসার সামনে নামিয়ে দিয়ে হাত নেড়ে বিদায় নিয়ে চলে গেলেন তিনি। নিজের প্রাপ্তির জন্য এই কথাগুলো লিখিনি। শুধু লিখেছি একজন বড় মানুষের মহানুভবতা দেখে। ভালো থাকবেন স্যার। দীর্ঘজীবি হোন। আপনার মতো মানুষ আমাদের পৃথিবীতে বড় প্রয়োজন।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *