ফেনীতে ২১ প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত

ফেনী প্রতিনিধি :
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ফেনীর তিনটি আসনে জয়ী তিন প্রার্থী ছাড়া অন্যদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এই নির্বাচনে তিনটি আসনে ২৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

এর মধ্যে ফেনী-১ (ফুলগাজী, ছাগলনাইয়া, পরশুরাম) আসনে ৬ জন, ফেনী-২(সদর) আসনে ৮ জন এবং ফেনী-৩ (সোনাগাজী-দাগনভুঞা) আসনে ১০ জন প্রার্থী ছিলেন।

এর মধ্যে বিজয়ী তিন প্রার্থী ছাড়া বাকি ২১ প্রার্থীই নিয়মানুযায়ী বৈধ ভোটের আট ভাগের এক ভাগ ভোট না পাওয়ায় জামানত হারিয়েছেন। জেলা রিটানিং কর্মকর্তা কর্তৃক ঘোষিত ফলাফলে এমন তথ্য জানা গেছে।

ফেনী-১ আসনে ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৩১৫ জন ভোটার। এর মধ্যে ১ লাখ ৯৭ হাজার ৩৭ জন ভোটার দেন। এ হিসেবে জামানত ফিরে পেতে প্রার্থীকে অন্তত ২৪ হাজার ৬২৯ ভোট পেতে হত।

ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায় এই আসনে তার মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম ১ লাখ ৮২ হাজার ৭৬০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন।

এছাড়া পরাজিত প্রার্থীদের মধ্যে জাতীয় পার্টির শাহরিয়ার ইকবাল লাঙ্গল প্রতীকে ৪ হাজার ১৯৫ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল হাসেম চৌধুরী ঈগল প্রতীকে ৩ হাজার ২৪ ভোট, তৃণমূল বিএনপির মো. শাহজাহান শাজু সোনালী আঁশ প্রতীকে ১ হাজার ৪ ভোট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ প্রার্থী কাজী মো. নুরুল আলম মোমবাতি প্রতীকে ২ হাজার ৫৬৪ ভোট ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের মাহবুব মোর্শেদ মজুমদার ছড়ি প্রতীকে ৭৮৮ ভোট পেয়েছেন ।

এ আসনে ৫ প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়।

ফেনী-২ (সদর ) আসনে মোট ভোটার ছিল ৪ লাখ ১০ হাজার ৭২১ জন। তাদের মধ্যে ২ লাখ ৫৪ হাজার ২৪ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এ হিসেবে জামানত ফিরে পেতে কোনো প্রার্থীকে অন্তত ৩১ হাজার ৭৫৩ ভোট পেতে হত।

ঘোষিত ফলে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নিজাম উদ্দিন হাজারী ২ লাখ ৩৬ হাজার ৫৯৮ ভোট পেয়ে বিজয়ি হয়েছেন।

তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী আমজাদ হোসেন ভূঞা সোনালী আঁশ প্রতীকে ৭০২ ভোট, জাতীয় পার্টির খোন্দকার নজরুল ইসলাম লাঙ্গল প্রতীকে ৪ হাজার ৮৫৮ ভোট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের প্রার্থী মাওলানা নুরুল ইসলাম মোমবাতি প্রতীকে ১ হাজার ১৯০ ভোট, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের নুরুল আমিন ভূঞা ছড়ি প্রতীকে ৪০৮ ভোট, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মোহাম্মদ হোসেন ডাব প্রতীকে ৬২৭ ভোট, খেলাফত আন্দোলনের আবুল হোসেন বটগাছ প্রতীকে ১ হাজার ৭০৪ ভোট ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এএসএম আনোয়ারুল করিম ঈগল প্রতীকে ৪ হাজার ৪৮ ভোট পান।

এ হিসেবে ৭ প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়।

ফেনী-৩ আসনে মোট ভোটার ছিল ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৩৫২ জন। তাদের মধ্যে ১ লাখ ৭১ হাজার ২৭৫ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এ হিসেবে জামানত ফিরে পেতে কোনো প্রার্থীকে অন্তত ২১ হাজার ৪০৯ ভোট পেতে হতো।

ঘোষিত ফলে জাতীয় পার্টির লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী লাঙ্গল প্রতীকে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৭৬০ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেন।

স্বতন্ত্র প্রার্থী হাজী রহিম উল্যাহ ঈগল প্রতীকে ৯ হাজার ৬২৬ ভোট, তৃণমূল বিএনপির আজিম উদ্দিন আহমেদ সোনালী আঁশ প্রতীকে ১ হাজার ৯৫৯ ভোট, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির তবারক হোসেন একতারা প্রতীকে ৭৮৯ ভোট, ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশের আবু নাছির চেয়ার প্রতীকে ৯৬৩ ভোট, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের নিজাম উদ্দিন মোমবাতি প্রতীকে ৫০৫ ভোট, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের জোবায়ের ইবনে সুফিয়ান ছড়ি প্রতীকে ১৬১ ভোট, আবুল কাশেম আজাদ ট্রাক প্রতীকে ৪ হাজার ৯২০ ভোট, ইঞ্জিনিয়ার ইশতিয়াক আহম্মেদ সৈকত কাঁচি প্রতীকে ৭০৯ ভোট ও আনোয়ারুল কবীর (রিন্টু আনোয়ার) বাঁশি প্রতীকে ১৭৩ ভোট পান।

এ হিসেবে ৯ প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়।

প্রসঙ্গত, তিনটি আসনে মোট ভোটারের সংখ্যা ছিল ১২ লাখ ৪০ হাজার ৫৫৭ জন। তার মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ লাখ ৩৮ হাজার ২৮৫ জন, নারী ভোটার ৬ লাখ ২ হাজার ৪৭১ জন। এছাড়া তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ছিল ৩ জন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *