একজন পুলিশ সুপারের লালসা : এক এসআইয়ের স্ত্রীর আকুতি

 

বাংলার দর্পন ডটকম ডেস্ক : একজন পুলিশ সুপারের ব্যক্তিগত লোভ-লালসার শিকার হয়ে একজন এসআইয়ের পেশাগত জীবন চরম হুমকির সম্মুখীন। পরিবারের কথা চিন্তা করে ওই এসআই চাকরি হারানোর ভয়ে মুখে কুলুপ এঁটে রাখতে বাধ্য হলেও অনেকটা নিরুপায় হয়েই মুখ খুলেছেন তার স্ত্রী নাজমা সুলতানা।

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে মনের আকুতি জানিয়ে হুদয়বিদারক লেখা ঘুরপাক খাচ্ছে। যেখানে ‘দুষ্টের দমন, শিস্টের লালনের দীক্ষায় দিক্ষিত সুশৃঙ্খল পুলিশ বাহিনীর উর্ধতন কর্তাদের কাছে সুবিচার প্রার্থণা করেছেন তিনি।

তার লেখায় শুধু অভিযোগ তোলা হয়েছে তা নয়; এর স্বপক্ষে যথেষ্ট যুক্তি প্রমাণের ভিডিও যুক্ত করা হয়েছে। যাকে তিনি এ ভিডিওকে শুধু ভিডিও নয় চরম বাস্তবতার দলিলও বলে উল্লেখ করেছেন। এরপরও কি পুলিশ বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে সুবিচার পাবেন তিনি?

সুবিচারের আশায় লেখাটি পুলিশ বিভাগের যথাযথ উর্ধতন কর্মকর্তার কাছে পৌছে দিতে ন্যায়পরায়ণ বন্ধুদের সহযোগীতা কামনা করেছেন তিনি। তাঁর হৃদয়বিদারক লেখাটি হুবহু আমাদের পাঠকদের জন্য নিম্মে তুলে ধরা হলো :-

আমি নাজমা সুলতানা বলছি-

আমার স্বামী জনাব মোঃ আনোয়ার হোসেন এসআই (নিঃ)/বিপি নাম্বার ৮০০০০৮৬৩৫৭. বর্তমানে বিএমপি বরিশালে কর্মরত আছেন। আমার স্বামী ২০১২ সালে ভোলা সদর থানা থেকে আবেদনক্রমে বদলী হয়ে ঝালকাঠি সদর থানায় যোগদান করেন।

২০১৩ ও ২০১৪ সালে ঝালকাঠি সদর থানায় কর্মরত থাকা অবস্থায় সমগ্র দেশব্যাপী যখন একটি গোষ্ঠী কর্তৃক ধ্বংসযজ্ঞে মেতে উঠতে চেয়েছিল। মানুষ পুড়িয়ে, যানবাহন পুড়িয়ে দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চেয়েছিল তখন বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এসব সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সফলভাবে প্রতিহত করতে সক্ষম হয়। যার ফলশ্রুতিতে জনগণের নিরাপত্তা রক্ষার্থে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে সকল সামাজিক সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী মহল থেকেও এই বাহিনীর ভূয়সী প্রসংশা করা হয়। যা এই বাহিনীর প্রতিটি সদস্যের জন্য গর্বের ও অনুপ্রেরনার।

আর আমার স্বামীও তার একজন গর্বিত অংশীদার কারন সমগ্র দেশের ন্যায় ঝালকাঠীতেও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করার মানসে ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড পরিচালনার অপতৎপরতা রোধকল্পে ঝালকাঠি জেলা শহরের গ্রেফতার হওয়া এসব রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসীদের মধ্যে শতকরা ৯০ ভাগ আমার স্বামী একাই গ্রেফতার করিয়াছিলেন। আর সেই থেকেই অজানা কারনে চক্ষুশূল হয়ে যান আমার স্বামীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তা গাইবান্ধা জেলার সুন্ধারগঞ্জ থানার বাসিন্ধা তৎকালীন ঝালকাঠি জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জনাব মহিদুল ইসলাম সাহেবের।

ইহা ছাড়াও মহিদুল সাহেবের ব্যক্তিগত নারী সংগঠিত একটি স্বার্থ হাসিলের জন্য চিরকুটের মাধ্যমে আসামী গ্রেফতার করিতে আমার স্বামীকে নির্দেশ করিলে তিনি উক্ত অবৈধ আদেশ পালনে অস্বীকৃতি জানায় তখন মহিদুল সাহেব উল্টো আমার স্বামীকে গ্রেফতারের হুমকি প্রদান করিয়াছিলেন যাহা পোস্টকৃত ভিডিওটার মধ্যে স্পষ্টই প্রতিয়মান হয়।

মহিদুল সাহেব অবৈধ উদ্দেশ্যে লাভবান হওয়ার আশায় তাহার স্ত্রীর নামে ঝালকাঠি পৌরসভা থেকে দুই বছরের পিছনের তারিখে একটি ট্রেড লাইসেন্স ‌বের করে দেওয়ার জন্য আমার স্বামীকে লিখিত নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং তিনি তাহার নির্দেশ মোতাবেক আড়াই হাজার টাকা খরচ করে একটি ট্রেড লাইসেন্স করিয়ে দিয়েছিলেন এবং তাহাকে নগদ এক লক্ষ টাকা ধার হিসেবে প্রদান করিয়াছিলেন কিন্তু মহিদুল সাহেব আমার স্বামীর কাছ থেকে ধারকৃত টাকা অদ্যবধি ফেরত প্রদান করেন নাই। যাহার যথাযথ প্রমান রহিয়াছে।

উপরোক্ত বিষয়রে প্রেক্ষিতে মহিদুল সাহেব বিভিন্ন সুযোগ খুজতে থাকেন আমার স্বামীকে শায়েস্তা করার জন্য। আর সেই সুযোগ পাওয়াটা তার জন্য খুব একটা কষ্টসাধ্য নয় কারন তাহাদের বাহিনীর বিধান অনুযায়ীই মহিদুল সাহেবের হাতে তাহাকে পর্যবসিত করার অনেক উপায় ন্যাস্ত ছিল। সেই সুযোগটাকে তিনি শতভাগই অপব্যাবহার করেছেন। সেই সাথে তার পদটাকেও তিনি কলঙ্কিত করেছেন ক্ষমতার অপব্যাবহারের মাধ্যমে।

আমার স্বামীর মতো দিনরাত মাঠে পরিশ্রম করা এসআইদের কাছে তার ঐ চেয়ারটা অভিভাবকতূল্য এবং অতীব সম্মানের। সেখানে একজন মহিদুল ইসলামের কারনে অন্য অফিসারদের প্রতি ভ্রান্ত ধারনা জন্ম নেয়াটা অমূলক নয়। স্বভাবতঃই আমি তাহার কলিগের পরিবার, নিকটাত্মীয়দের সাথে বিষয়টি নিয়ে পর্যালোচনা করেছি সেক্ষেত্রে তাঁদের মনেও এরূপ ধারনা জন্ম নিতে পারে যে সকল অফিসারই বোধ হয় এরূপ। প্রকৃতপক্ষে তা নয়।

আমার স্বামী ভোলাতেও চাকুরী করেছিলেন সেখানে অভিভাবকতূল্য আচরনে তাহার কর্ম স্পৃহা বহুগুন বাড়িয়ে দিয়েছিল। সর্বশেষ আমার স্বামী বিএমপি, বরিশালের গোয়েন্ধা শাখা (ডিবি) তেও বেশ কয়েকবার শ্রেষ্ঠ এসআই হিসাবে মাননীয় পুলিশ কমিশনার মহোদয় নির্বাচিত করিয়াছিলেন। তাহার কর্মক্ষেত্রে ভুল হলে যেমন তাহাকে শাসন করেছেন তেমনি ভাল কাজে আবার বাহবা দিয়েছেন।

কিন্তু একজন মহিদুল ইসলামের ব্যাক্তিগত আক্রোশে তাহার জীবন তথা আমাদের জীবন তছনছ হয়ে যাবে সেটা কোন ক্রমেই মেনে নেওয়া যায় না। আমার স্বামীর বিধবা বৃদ্ধা মাতা তাহাকে অনেক কস্ট করে লেখা পড়া শিখিয়েছেন কিন্তু আমরা কি পেরেছি আমাদের সেই বৃদ্ধা মাতাকে চিন্তা মুক্ত পরিবেশে রাখতে। আমাদের দুইটি ছেলে সন্তান ওরা কেবলমাত্র স্কুলে লেখাপড়া করিতেছে কিন্তু আমরা কি পেরেছি আমাদের সেই নিস্পাপ শিশু বাচ্চাদেরকে চিন্তা মুক্ত পরিবেশে শিক্ষা প্রদানের ব্যবস্থা করে দিতে। তাহলে এর জন্য প্রকৃত দায়ী কে?

মহিদুল সাহেবের দেওয়া মিথ্যা মনগড়া প্রতিবেদনে আমার স্বামীর নামে ঝালকাঠি জেলার বিভাগীয় মামলা নং-০৪/২০১৪, তারিখ-২৯/০৫/২০১৪ ইং তদন্ত শেষে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় গত ১৪/০৮/২০১৪ ইং তারিখ চূড়ান্ত রিপোর্টের মাধ্যমে নথিভুক্ত করা হয় এবং ঝালকাঠি জেলার বিভাগীয় মামলা নং-০৪/২০১৫, তারিখ-০৬/০৯/২০১৫ ইং তদন্ত শেষে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় গত ০৫/০৬/২০১৬ ইং তারিখ চূড়ান্ত রিপোর্টের মাধ্যমে নির্দোষ হিসেবে অব্যহতি দিয়ে নথিভুক্ত করেন।

ঐ রিপোর্ট অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিদুল ইসলাম সাহেবের মনপুত না হওয়ায় আমার স্বামীর প্রতি আক্রোশ আরো বেড়ে যায়। তাই রিপোর্টকে চ্যালেঞ্জ করে আমার স্বামীকে মহিদুল সাহেবের নিজস্ব লোকজন দ্বারা (পাবলিক) শারীরিকভাবে সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়ার উদ্দেশ্যে অন্য আর একটি প্রতিবেদন দাখিলের মাধ্যমে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ঢাকার স্মারক নং-নিয়োগ/৮৭২০১৪/২০০৫/১(২৭), তারিখ-২৯/০৫/২০১৪ ইং মুলে ঝালকাঠি জেলা হইতে তাহার বাড়ী গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ থানার নিকটস্থ কুড়িগ্রাম জেলার কচাকাটা এবং ঢুষমারা থানায় বদলী করিয়াছিলেন আর এটা তিনি জেনে যাওয়ায় এবং ঝালকাঠিতে কর্মরত থাকাকালীন মহিদুল সাহেবের দেওয়া হত্যার হুমকির কারনে যথাসময়ে রংপুর রেঞ্জে যোগদান করিতে না পারিয়া মাননীয় মহা-পুলিশ পরিদর্শক, ঢাকা এর কাছে ন্যায় বিচারের প্রার্থনা করিলে তিনি তাৎক্ষনিক মাননীয় ডিআইজি, বরিশাল রেঞ্জ মহোদয়কে বিষয়টি দেখিবার জন্য বলিলে ডিআইজি মহোদয় সহকারী পুলিশ সুপার জনাব ফজলুল করিম (স্টাফ অফিসার টু ডিআইজি রেঞ্জ কার্যালয়, বরিশাল) কে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ করে।

কিন্তু মাহিদুল ইসলাম সাহেব একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আর তদন্তকারী কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ সুপার হওয়াতে তিনি (তদন্তকারী কর্মকর্তা) আমার স্বামীকে না ডেকে তাহার কোনরূপ আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে মহিদুল সাহেবের পক্ষে প্রতিবেদন দাখিল পূর্বক উল্টো আমার স্বামীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যাবস্থা গ্রহনের সুপারিশ করেন।

উক্ত সৃজিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে কুড়িগ্রাম জেলার বিভাগীয় মামলা নং-০১/২০১৫, তারিখ-০৮/০১/২০১৫ ইং রুজু করিয়া পুনরায় একইভাবে নিয়ম বর্হিভুতভাবে ক্ষমতার অপব্যবহারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধের অভিযোগ একজন সহকারী পুলিশ সুপার কর্তৃক অনুসন্ধান করানো হয়।

তদন্তকারী কর্মকর্তা জনাব মোঃ মনিরুজ্জামান, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার, উলিপুর সার্কেল, কুড়িগ্রাম তদন্ত করে পদাবনতি সাজা প্রদান করার সুপারিশ করিয়া উক্ত বিভাগীয় মামলাটি নথিভুক্ত করেন। আমার স্বামী কুড়িগ্রাম জেলায় যোগদানের পর উক্ত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিদুল সাহেব তাহার নিজস্ব লোকজন দিয়া আমার স্বামীকে শারিরিকভাবে লাঞ্চিত করিয়াছেন। সেই ‍বিষয়টিও কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন না করিয়া উল্টাে আমার স্বামীর উপর বর্তাইয়াছেন। যাহা পরবর্তীতে বিভাগীয় মামলায় সংযুক্ত করিয়াছিলেন।

কুড়িগ্রাম জেলায় মাত্র ০৬ মাস চাকুরী করার পর পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ঢাকার বিজ্ঞপ্তি নং-নিয়োগ/১০৮-২০১৫/৪১৬৫, তারিখ-০৮/০৭/২০১৫ ইং মুলে আমার স্বামীকে কুড়িগ্রাম জেলা হইতে নৌ-পুলিশে বদলী করানো হয়। সকল অত্যাচার সহ্য করার পর আমি আমার বাচ্চাদেরকে নিয়ে আমার নিজ এলাকার জনপ্রতিনিধি বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের চীফ হুইপ মাননীয় সাংসদ জনাব আ.স.ম ফিরোজ মহোদয়ের শরনাপন্ন হইলে তিনি মাননীয় স্বরাস্ট্র মন্ত্রী জনাব আসাদুজ্জামান খান কামাল মহোদয়ের নিকট বিস্তারিত ঘটনা বলেন।

তখন মাননীয় স্বরাস্ট্র মন্ত্রী উপরোক্ত বিষয় খোজ খবর নিয়ে ঘটনার সত্যতা খুজে পাওয়ার পরে তাহার হস্তক্ষেপে আমার স্বামীকে কুড়িগ্রাম জেলা থেকে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ঢাকার বিজ্ঞপ্তি নং-নিয়োগ/১০৮-২০১৫/৪১৬৫, তারিখ-০৮/০৭/২০১৫ ইং মুলে জারীকৃত কুড়িগ্রাম জেলা হইতে নৌ-পুলিশে বদলীর আদেশ বাতিল পূ্র্বক পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ঢাকার স্মারক নং-নিয়োগ/২৩৮-২০১৩/৫০১২/১(৬), তারিখ-২৩/০৮/২০১৫ ইং মুলে বিএমপি বরিশালে বদলী করেন। এতদস্বত্বে আমার স্বামী কুড়িগ্রাম জেলা এবং বিএমপি, বরিশালে প্রায় দুই বছর বিনা বেতনে চাকুরী করিয়া আসিতেছিলেন। তথাপিও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিদুল সাহেবের আক্রোশ না কমিলে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ঢাকার বিজ্ঞপ্তি নং-নিয়োগ/১০৪-২০১৬/৪৬৭২/১ (২০), তারিখ-৩১/০৭/২০১৬ ইং মুলে পুনরায় হত্যার উদ্দেশ্যে আমার স্বামীকে বিএমপি বরিশাল হইতে ট্যুরিস্ট পুলিশে বদলীর আদেশ করিয়ে থাকেন। তখন আমি পুনরায় বাচ্চাদেরকে নিয়ে আমার বড় ভাইর সহায়তায় পুলিশ বিভাগের হৃদয়বান কর্মকর্তা জনাব ফাতেমা বেগম এ্যাডিশনাল আইজিপি (অর্থ) পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, ঢাকা মহোদয়ের নিকট সার্বিক ঘটনার বর্ননা করি।

অবশেষে তাহার বারংবার হস্তক্ষেপ করায় আমার স্বামীকে বিএমপি, বরিশাল হইতে ট্যুরিস্ট পুলিশের বদলীর আদেশ বাতিলসহ বকেয়া দুই বছরের বেতনভাতা পরিশোধ করার নির্দেশ প্রদান করিয়াছিলেন। সর্বোপরি বাহিনীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করিয়া আমার স্বামী সব কিছু মেনে নিয়ে চাকুরী করিতেছিল। কিন্তু বিধিবামঃ পূনরায় তিনি (মহিদুল ইসলাম) আবার তাহাকে জব্দ করার মানসে ঝালকাঠি জেলার ২০১৫ সালের নিস্পত্তিকৃত বিভাগীয় মামলা নতুনভাবে উপস্থাপনের মত বিরল ঘটনার সৃষ্টি করিয়েছেন (তাহার সংশ্লিষ্টতা আমি প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু মাধ্যমের সহায়তায় জানতে পারি)।

সেই পূনরুজ্জ্বীবিত মামলা এম এম মাহামুদ হাসান ঝালকাঠি জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মহোদয়ের নিকট তদন্তাধীন রহিয়াছে। এবার হয়তো আমরা সুবিচার পাইবো বলে আশাবাদী নতুবা আমার স্বামী অধঃস্তন কর্মকর্তা হিসেবে উচ্চ পদস্তের কাছ থেকে পূর্বের ন্যায় অবিচার পাইলেও আশ্চর্য হইবো না কারন আমরা প্রতি পদে পদে উপলব্ধি করিয়াছি অধঃস্তন হয়ে কিছু কিছু উর্ধতন কর্মকর্তার রোষানল কতটা তীব্র থেকে তীব্রতর হতে পারে, কতটা মানসিক যন্ত্রনায় আমাদের মতো আরো কত পুলিশ বিভাগের পরিবাবের লোকজন নিরবে সহ্য করে যাচ্ছে। পরিবারের উপার্জনের একমাত্র সম্বল চাকুরী হারাবার ভয়ে, আমরা প্রত্যক্ষ করেছি কতটা সামাজিক হেয় প্রতিপন্নতার শিকার হতে হয় নিরপরাধ হয়েও, আমরা অহর্নিশ সহ্য করে যাচ্ছি আমাদের পরিবারের আকুতি, আমরা প্রতিনিয়ত অসহায় বাবা মা হয়ে যাচ্ছি আমাদের দুই সন্তানের কাছে।

সর্বোপরি দেশমাতৃকার কল্যানের ব্রত নিয়ে দুষ্টের দমন শিষ্টের পালন শপথে বলীয়ান হয়ে যে প্রিয় পুলিশ বাহিনীতে অংশ গ্রহন করেছিলেন ছাত্রলীগের রাজনীতি ছেড়ে সে বাহিনীর প্রতি দ্বায়িত্বোবোধের যে চরম বোঝা আমার স্বামী বয়ে বেড়াচ্ছেন তা আর বইতে পারছেন না। মহিদুল সাহেবের অন্যায় আর অত্যাচারে তিনি অল্প বয়সে উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদ রোগে আক্তান্ত হয়ে এখন অনেকটাই মৃত্যু পথযাত্রী। অত্যাচারের কারনে যেকোন সময় আমার স্বামীর জীবনে অঘটন ঘটলে পরে আমার সন্তান দুইটির ভবিষ্যৎ কি হবে?

অতএব আমরা চাই না আর কোন পুলিশ পরিবারকে এই ভাবে রোষানলে পরতে হয় এবং তাহাকে নির্দোষ ঘোষনা করতেও বলছি না। আমি শুধু চাই সুষ্ঠু তদন্ত হোক এবং সেটা তার (মহিদুল ইসলাম) অধঃস্তন কিংবা সমমর্যাদার কোন কর্মকর্তা না হয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তা দ্বারা তদন্ত করানো হয়। স্বাভাবিকভাবেই তখন প্রভাবিত করার সুযোগ ক্ষীন হয়। ভবিষ্যতে আমার স্বামীকে যেকোন বড় ধরনের ফৌজদারী মামলায় আসামী করে জেল হাজতে প্রেরন কিংবা অপহরন অথবা ক্রোস ফায়ারে শেষ করে দেওয়ার ঘটনাটাও অস্বাভাবিক নয়।

ইতিমধ্যে তিনি তাহার বিভিন্ন আলামত উপলব্ধি করতে পেরেছেন। বাংলাদেশের সাধারন মানুষের ন্যায় তিনি পারছেন না তাহার ব্যক্তি নিরাপত্তার স্বার্থে বিষয়টি সাধারন ডায়রীভুক্ত করে রাখতে। ইহা ছাড়াও ডায়রীভুক্ত করার চেস্টা করিলে পূর্বের ন্যায় মানে অভিযোগ দাখিলের পরবর্তী ঘটনার মতো যেকোন অঘটন ঘটাবেনা তার কি নিশ্চয়তা আছে।

আমি বাংলাদেশের একজন সাধারন নাগরিক হিসাবে পুলিশ বাহিনীর অভিভাবক গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় স্বরাস্ট্র মন্ত্রী এবং বর্তমান বাংলাদেশের আস্থার স্থপতি, জাতির জনকের কন্যা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র সদয় দৃষ্টি কামনা করছি। নতুবা এভাবে অত্যাচারিত হয়ে তাহার মতো অনেককে এই বাহিনী থেকে বাহিনীর প্রতি ঋনী থেকেই ঝরে পরতে হবে আর সমাজে এই বাহিনীর পূনরুদ্ধারিত সুনাম বিনস্ট হবে। হয়তো এ কথা তাহার মতো একজন আনোয়ার হোসেনের নয়। হয়তো একথা তাহার মতো অনেক আনোয়ার হোসেন বলছেন আপন মনে, অবচেতনে।

পরিশেষে যাঁরা এতক্ষন ধরে মূল্যবান সময়ের হানি করে আমার কথাগুলো পড়লেন তাঁদেরকে আমি আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই। মহিদুল সাহেবের অযথা হয়রানির কারনে আমরা সুবিচার পাওয়ার আসায় বিভিন্ন জায়গায় এই ২/৩ বছর যাবৎ ঘুরতে ঘুরতে আর্থিকভাবে প্রায় সর্বশান্ত। অপরদিকে দারুন ক্ষতি হয়েছে বাচ্চাদের লেখাপড়ার। উক্ত অযথা হয়রানির সুযোগে ইতিপূর্বে আমাদেরকে শুভাকাঙ্খীর নাম করে বিভিন্ন হঠকারী সিদ্ধান্ত ‌নিতে প্ররোচিত করিয়াছেন। যেমন সংবাদ সম্মেলন, মানবাধিকার কমিশনে যোগাযোগ ইত্যাদি ইত্যাদি।

নিরূপায় হয়ে অসহায় অবলা নারী হিসাবে আজকে আমার দুইটি মাসুম বাচ্চাদের শিক্ষা এবং বেচে থাকার স্বাধীনতা রক্ষার উদ্দেশ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলা কথা গুলো মানবিক দৃষ্টিকোন বিবেচনায় এই পোস্টটি শেয়ার করে যথার্থ স্থানে পৌছে দিলে আমি চিরকৃতজ্ঞ থাকিব। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে ভাল রাখুন। অবিচার আমাদের যেন নীতিভ্রষ্ট্র না করতে পারে সেই তৌফিক দান করুন।

– খোদা হাফেজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *