সন্দ্বীপ (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি :
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাব ও অরক্ষিত বেড়িবাঁধের অভাবে চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলার সারিকাইত, দীর্ঘাপাড় ও উরিরচর ইউনিয়নের আংশিক প্লাবিত হয়েছে। দুপুর ১ টায় সাগরে জোয়ার বেড়ে যাওয়ায় পর সারিকাইত ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের ৩ টি অংশে বেড়িবাঁধ ছিড়ে লোকালয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে প্রায় ২ শতাধিক বাড়িঘর প্লাবিত হয়।
ইউনিয়নের এসময় ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের বেড়িবাঁধ থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকায় ৩ থেকে ৪ ফুট পানিতে প্লাবিত হয়। উরিরচর ও দীর্ঘাপাড় ইউনিয়নে বেড়িবাঁধ না থাকায় জোয়ারের পানি ঢুকে মাছের প্রজেক্ট ভাসিয়ে নেয়। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে জানমালের কোন ক্ষয়ক্ষতি ঘটেনি। তবে এসব এলাকার মাছের প্রজেক্ট ও ফসলি জমির ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এছাড়াও মাইটভাঙ্গা ইউনিয়নের ১ ও ২ নং ওয়ার্ডের পুরাতন বেড়িবাঁধের কয়েকটি অংশে ফাটল দেখা যায়। তবে ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে দ্রুত মেরামতের কারণে জোয়ারের পানি প্রবেশ করতে পারেনি। জোয়ারের সময় সন্দ্বীপের পশ্চিমে মেঘনার পানি স্বাভাবিকের চেয়েও প্রায় ৬ থেকে ৮ ফুট পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে দেখা গেছে। তবে জোয়ারের সময় বাতাসের গতিবেগ তুলনামূলক কম থাকায় অনেকটা রক্ষা হয়েছে বলে ধারণা করছে সংশ্লিষ্টরা।বেড়িবাঁধ ও নিম্নাঞ্চল এলাকার বাড়িঘর থেকে কেউ নিরাপদ আশ্রয়ে যায়নি।
সারিকাইত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম পনির বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সারিকাইত ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ৩ টি অংশে প্রায় ১০০ মিটার বেড়িবাঁধ ছিড়ে যায়।রাতের জোয়ারে আরো কিছু অংশ ছিড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
তিনি ক্ষোভের সাথে আরো বলেন, সন্দ্বীপের সবচেয়ে অভাগা ইউনিয়নের বাসিন্দা আমরা। আমার এলাকার ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের মানুষ ঘূর্ণিঝড় ছাড়াও প্রতিমাসে দুই থেকে ৪ বার জোয়ারের পানিতে ডুবতে হয়। একেবারে বঙ্গোপসাগরে মুখে থাকার পরেও দীর্ঘ ৩ বছরেও সারিকাইত ইউনিয়নের টেকসই বেড়ীবাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ হয়নি। এখানে এখনো ১ হাজার মিটার অরক্ষিত বেড়িবাঁধ রয়েছে। যেকোনো সময় তা ছিড়ে পানি ঢুকে জানমালের ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেপি দেওয়ান ত্রিপুরা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ মামুন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।জেপি দেওয়ান ত্রিপুরা জানান, আমরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছি। যেসব যায়গায় বেড়িবাঁধ ছিড়ে গেছে সেখানে দ্রুত মেরামত করানো হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাব মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসন থেকে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।