লামা (বান্দরবান) থেকে :
লামায় প্রবাসীর খুনের শিকার দু’কন্যা ও স্ত্রীর মধ্যে মা-মেয়ে দু’জনের শরীরে ধর্ষণের আলামত খুঁজে পেয়েছে পুলিশ। একইভাবে তাদের তিন জনের শরীর, কপাল, পিঠ ও বুকে রক্তাক্ত যখমের চিত্র উঠে এসেছে ময়নাতদন্তের পূর্বে করা পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনে। প্রবাসীর ওই বাসায় ডাকাতির আলামতও রয়েছে। খোয়া গেছে, নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার। পুলিশের ধারণা, খুনিরা পূর্বপরিচিত।
এদিকে এই খুনের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া ছয় সন্দেহভাজককে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও লামা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আলমগীর হোসেন বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর আটক ছয়জনকে মুচলেকায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, প্রয়োজনে তাদের আবার আটক করা হতে পারে। তবে ঘটনার চার দিন গত হতে চলছেও খুনের রহস্য রহস্যাবৃত রয়েগেছে।
কুয়েত প্রবাসী নুর মোহাম্মদ দেশে ফেরার পরই রোববার দিনগত রাত দশটার দিতে তার দু’কন্যা ও স্ত্রীকে দাফন করা হয়েছে। সে সময় ওই এলাকায় অবতারণা হয় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের। পুরো এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া।
এরআগে শুক্রবার (২০ মে) দিনগত রাত তিনটার দিকে লামা পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের চাম্পাতলী গ্রামের তালাবব্ধ বাসা থেকে প্রবাসী নুর মোহাম্মদের দু’কন্যা নুর-এ জান্নাত রীদা প্রকাশ নুরী (১০) ও সুমাইয়া ইয়াছমিন প্রকাশ রাফি (১৬) এবং স্ত্রী মাজেদা বেগম (৩৭) এর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে ওই রাত আটটার দিকে তালাবব্ধ এই বাসায় লাশ আছে এমনটা জানিয়ে পুলিশকে খবর দেয় নুর মোহাম্মদের ভাই আব্দুল খালেক।
পুলিশ লাশের প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, বাসার রান্না ঘরের পাশের কক্ষের মেঝেতে মাত্র ১০ মাস বয়সী কন্যা নুর-এ জান্নাত রীদা প্রকাশ নুরী, তার অদূরেই মা মাজেদা বেগম এবং শোয়ার কক্ষে খাটের উপর দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমাইয়া ইয়াছমিন প্রকাশ রাফি’র (১৬) লাশ পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে কন্যা সুমাইয়া ইয়াছমিন প্রকাশ রাফি ও তার মা মাজেদা বেগম এর শরীরে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে।
এই ঘটনার পরই প্রবাসী নুর মোহাম্মদের দু’ভাই আব্দুল খালেক ও শাহ আলম এবং মৃত মাজেদা বেগমের বোন রাহেলা বেগম ও ভগ্নিপতি মো. আব্দুর রহিমকে আটক করে। একইভাবে নুর মোহাম্মদের বাসার পাশের মসজিদে গেল রমজানে তারাবির নামাজ পড়ানো হাফেজ মো. সায়েদুর রহমান এবং স্থানীয় প্রতিবেশী যুবক মো. রবিউল হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের হেফাজতে নেয় পুলিশ।
এই ঘটনায় মৃত মাজেদা বেগমের লাল মতি বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামীদের বিরুদ্ধে লামা থানায় মামলা করেছেন।