নিজস্ব প্রতিবেদক, ফেনী :
৩০ জানুয়ারি শনিবার ফেনী পৌরসভার নির্বাচনে ভোটগ্রহণ। শেষ মুহুর্তে এসে উৎসবের চেয়ে আতঙ্ক আর শঙ্কাই বেশি বিরাজ করছে প্রার্থীদের মাঝে। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী কর্তৃক কেন্দ্র দখল, জাল ভোট ও নির্বাচন কেন্দ্রে প্রভাব খাটানোর আশঙ্কা করছেন প্রার্থীরা। আবার ভোট কেন্দ্রে নিরাপদে ভোটাধিকার প্রয়োগের ব্যাপারে জনমনে নানা শঙ্কা বিরাজ করছে। ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফেনী পৌরসভার ১৮ টি ওয়ার্ডের ৪৫ টি কেন্দ্রকেই ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে।
সে হিসেবে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা। ফেনী জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা মতো প্রতিটি ওয়ার্ডেই ১ জন করে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি সদস্যরা। মোতায়েন থাকবে। ফেনী জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও পৌরসভা নির্বাচনের রিটার্র্নিং অফিসার মো. নাছির উদ্দিন পাটোয়ারী জানান, এবার পৌরসভার ১৮টি ওয়ার্ডের ৪৫টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হবে।
এ পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ৯১ হাজার ৬’শ ৬২ জন। পুরুষ ভোটার ৪৭ হাজার ৩’শ ৭ জন ও মহিলা ভোটার ৪৪ হাজার ৩শ ৫৫ জন। নির্বাচনে মেয়র পদে আ’লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী, বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী আলাল উদ্দিন আলাল, ইসলামী আন্দোলনের হাতপাখা প্রতীকে গোলামুর রহমান আজম ও এনডিএম প্রার্থী তারিকুল ইসলাম সিংহ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।
পৌরসভার ১৮টি ওয়ার্ড ও ও ৬টি সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডের মধ্যে ১৫ জন কাউন্সিলর পদে প্রার্থী না থাকায় ইতিমধ্যে বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন।
একাধিক ভোটারের সাথে কথা বলে জানা যায়, এই ভোটে ফলাফল পুর্ব নির্ধারিত। পরাজিতরা আগেই পরাজয় মেনে নিয়েছে। তাই ভোটারদের আগ্রহ নেই। আমেজও নেই।
এদিকে পৌরসভার ৪৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ৮টি কেন্দ্রকে ‘অধিক গুরুত্বপূর্ণ’ (অধিক ঝুঁকিপূর্ণ) হিসাবে চিহ্নিত করেছে ফেনী জেলা পুলিশ প্রশাসন। শুক্রবার নির্বাচন কেন্দ্রের নিরাপত্তা বিষয়ে জেলা পুলিশ প্রশাসনের প্রস্তুতি দেখতে ফেনী পরিদর্শন করেন চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইজি আনোয়ার হোসেন। এসময় তিনি নির্বাচনী প্যারেড গ্রহণ ও জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন।
এছাড়া পৌর এলাকার ৩৭টি কেন্দ্রকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ (ঝুঁকিপূর্ণ) চিহ্নিত করেছে জেলা পুলিশ। নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় ১ জন এসআই’র নেতৃত্বে প্রতি কেন্দ্রে ৭ জন পুলিশ ও ৯ জন আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবে।
১জন ম্যাজিষ্ট্রেটের সাথে থাকবে ৪ জন পুলিশ সদস্য। নির্বাচনের দিন মাঠে থাকবে পুলিশের ১৫টি মোবাইল টিম, ৮টি স্ট্রাইকিং ফোর্স, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ৭টি টিম ও পুলিশের স্ট্যান্ডবাই টিম। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ছাড়াও মোতায়েন থাকবে ৩ প্লাটুন বিজিবি।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আরো জানান, ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন ৪৫ জন প্রিসাইডিং অফিসার, ২৪১ জন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও ৪৮২ পোলিং অফিসার।
ফেনী জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজজামান জানান, সুন্দর পরিবেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কোথাও কোন অনিয়ম করতে দেওয়া হবে না। নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতির বিষয়ে সভা আহ্বান করে সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে। ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে তার জন্য বিপুল পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত রয়েছে।
বাংলারদর্পণ