দক্ষিন আফ্রিকায় ছাগলনাইয়ার যুবক রিপন খুন | বাংলারদর্পন

ফেনী প্রতিনিধি :
বছরের মাঝামাঝিতে বাড়ি ফেরার কথা ছিল ছাগলনাইয়া উপজেলার পুর্ব ছাগলনাইয়ার আব্দুল মোমিন মুহুরী বাড়ির আবুল বশরের মেঝ ছেলে প্রবাসী তাজুল ইসলাম রিপনের (৩০)। কিন্তু বিশ্বব্যাপী করোনা পরিস্থিতির কারণে বিমান যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রিপনের বাড়ি ফেরা পিছিয়ে গিয়েছিল।

পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এ বছরের শেষের দিকে বাড়ি ফিরবেন বলে বাবাকে জানিয়েছিলেন রিপন। তার বিয়ের জন্য মেয়েও দেখতে শুরু করেছিলেন বাবা-মা। কিন্তু স্বপ্নই শুধু স্বপ্নই হয়ে গেল রিপনের। দক্ষিণ আফ্রিকার পুমালাঙ্গা প্রদেশের এয়ারমেলো নামক এলাকায় মালাউই কর্মচারীর হাতে খুন হয়েছেন তিনি। আর কখনো স্বশরীরে বাড়ি ফেরা হবে না তার।

বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নিহতের রিপনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ছেলের ছবি বুকে নিয়ে বিলাপ করছেন তার বাবা আবুল বশর। শোকে স্তব্ধ মা, রিপনের শোকে মূর্চ্ছা যাচ্ছেন। শোকে বিহ্বল পরিবার ও স্বজনরা। তাদের বুকফাটা কান্নায় ভারী হচ্ছে এলাকার পরিবেশ।

রিপনের বাবা আবুল বশরের সাথে কথা বলে জানা যায়, পরিবারের হাল ধরতে ৭ বছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় পাড়ি জমায় রিপন। দক্ষিণ আফ্রিকার পুমালাঙ্গা প্রদেশের এয়ারমেলো নামক এলাকায় গড়ে তুলেছিলেন নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। দোকান পরিচালনার জন্য রেখেছিলেন তার পূর্ব পরিচিত এক মালাউই কৃষাঙ্গ নাগরিককে।

দুজনই দোকানে থাকতেন একসাথে। মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) দিনের বেলায় দোকান বন্ধ এবং রিপনের কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে সন্দেহ হয় স্থানীয় বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের। পরে দোকানের ভেতর গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় রিপনের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন তারা।

সেখানকার ব্যবসায়ীদের ধারণা, সোমবার দিবাগত রাতের কোন এক সময়ে দোকানে ঘুমন্ত অবস্থায় রিপনকে তার কর্মচারী মালাউই নাগরিকটি অপর একজনের সহযোগিতায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। এর আগে আরেকজন মালাউই নাগরিক ঘুরতে এসেছিল সেখানে। ওই দুজনের যোগসাজশে রিপনকে ঘুমন্ত অবস্থায় খুন করে তার টাকা-পয়সা লুট করে পালিয়েছে। এ ঘটনা সম্পর্কে স্থানীয় পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে। অভিযুক্তকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

আবুল বশর জানিয়েছেন, তার লাশ দেশে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *