নারী নির্যাতনে দেশের চতুর্থ পর্যায়ে পটুয়াখালী

অনলাইন ডেস্ক:- গত বছর নারী ও মেয়েশিশু নির্যাতনের ঘটনা সবচেয়ে বেশি পাওয়া গেছে যশোরে। সবচেয়ে কম পাওয়া গেছে মাদারীপুরে। আর চতুর্থ পর্যায়ে রয়েছে পটুয়াখালী জেলা।
ব্র্যাকের সামাজিক ক্ষমতায়ন কর্মসূচির তথ্যভান্ডার থেকে সারা দেশের নারী নির্যাতনের তুলনামূলক এই চিত্র পাওয়া গেছে।
দেশের ৫৫টি জেলার ১২ হাজারের অধিক কমিউনিটিভিত্তিক নারী সংগঠন ‘পল্লি সমাজ’ এবং ব্র্যাকের অন্যান্য কর্মসূচির কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত বছর নারী ও মেয়েশিশু নির্যাতনের এই ডেটাবেইস বা তথ্যভান্ডার তৈরি করে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের সামাজিক ক্ষমতায়ন কর্মসূচি।
তথ্যভান্ডার অনুযায়ী, গত বছর দেশের ৫৫টি জেলায় ৭ হাজার ৪৮৯টি নারী নির্যাতনের ঘটনা পাওয়া গেছে। এর মধ্যে যশোরে ৩৫১টি ঘটনা পাওয়া গেছে। এরপরই রয়েছে সাতক্ষীরা (২৮৮), নরসিংদী (২৮০), পটুয়াখালী (২৫২), ময়মনসিংহ (২৪৮), ফেনী (২২০) ও রংপুরের (২১৯) অবস্থান। সবচেয়ে কম ঘটনা মাদারীপুরে (৩৪)। নির্যাতনের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ২০ শতাংশ হচ্ছে মেয়েশিশু।
সামাজিক ক্ষমতায়ন কর্মসূচি ও তথ্যভান্ডারের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা বলছেন, যেসব জেলায় ব্র্যাক, সরকারের মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন দাতা সংস্থার যৌথ কার্যক্রম চলমান, সেসব জেলায় বেশি ঘটনা পাওয়া গেছে। নির্যাতনের শিকার ২১ শতাংশ নিজে নির্যাতনের তথ্য জানিয়েছেন। নির্যাতনের ঘটনা গোপন রাখার প্রবণতা এখনো বেশি।
বিভিন্ন জেলায় ব্র্যাকের কর্মসূচির জেলা ব্যবস্থাপকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা বেশি, যা মূলত যৌতুক নেওয়াকে কেন্দ্র করে ঘটেছে। আর মেয়েশিশুরা ধর্ষণের শিকার বেশি হয়েছে। তথ্যভান্ডারে স্থান পাওয়া গত বছরের ঘটনাগুলোর মধ্যে ৮২ শতাংশই ঘটেছে পারিবারিক পরিসরে। আর ৫৮ দশমিক ৭৯ শতাংশ নির্যাতনের ঘটনা ঘটিয়েছে পরিবারের সদস্যরা। মানসিক ও অর্থনৈতিক নির্যাতনের ঘটনা এই হিসাবে আনা হয়নি।
তথ্যভান্ডার অনুযায়ী, নির্যাতনের শিকার নারীদের মধ্যে ৭৩ শতাংশ গৃহিণী। ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী এবং ২ শতাংশ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও অর্থনৈতিক কাজে সঙ্গে যুক্ত। বিবাহিত ও দরিদ্র নারীরাই বেশি নির্যাতনের শিকার হন। মেয়েশিশুদের মধ্যে ১২-১৭ বছর বয়সীরা (৬০ দশমিক ৬৩ শতাংশ) সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ধর্ষণের ঘটনায় প্রাপ্তবয়স্কদের চেয়ে শিশুর সংখ্যা ২ দশমিক ৫ গুণ বেশি ছিল।
নির্যাতনের শিকার হওয়া নারী-শিশুদের মধ্যে মাত্র ২৬ শতাংশ আইনের আশ্রয় নেন। গত বছর আইনের আশ্রয় নেওয়ার ঘটনার দুই-তৃতীয়াংশ আসামিই প্রকাশ্যে চলাচল করেন। মাত্র ১১ শতাংশ জেলহাজতে ছিলেন। সূত্র: প্রথম আলো

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *