কুসিক নির্বাচনে   সুষ্ঠ ভোট চায় আওয়ামীলীগ

 

কুমিল্লা প্রতিনিধি :

আগামী ৩০ মার্চ কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন। গত বুধবার থেকে কুসিক প্রচারণা শুরু হয়েছে। মেয়রসহ অন্যান্য প্রার্থীরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন যার যার নির্বাচনী প্রচারণায়। হেভিওয়েট দুই প্রার্থী আওয়ামী লীগ সমর্থিত আঞ্জুম সুলতানা সীমা এবং বিএনপি সমর্থিত বর্তমান মেয়র মো. মনিরুল হক সাক্কু কোমর বেধে নির্বাচনী প্রচারণায় নেমেছেন। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ হবে দাবি করলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএনপি প্রার্থী। বিএনপি প্রার্থীর কর্মী ও সমর্থকদের সন্ধ্যার পর ডিবি পরিচয় দিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা করতে দিচ্ছেন না কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানার ওসির নজরুল ইসলাম। সদর দক্ষিণ থানার ওসি পক্ষপাতিত্বের বিরুদ্ধে অভিযোগ জেলা নির্বাচন অফিসে দিয়েছে বিএনপি। আর সাধারণ ভোটাররা অপেক্ষায় আছেন ভোটের দিনের পরিবেশ কি রকম থাকে তার জন্য। তবে সবার মতেই নির্বাচনী পরিবেশ গড়পড়তায় এখন পর্যন্ত সুষ্ঠু রয়েছে। এই সিটি নির্বাচনে প্রচারণার তৃতীয় দিন গতকাল শুক্রবার সরেজমিন ঘুরে তথ্য জানা গেছে।কুসিকের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসীন্দা, ব্যবসায়ী রিপন বলেন, নির্বাচনী পরিবেশ এখনো ভালো আছে। নির্বাচনী প্রচারণা এখনো জমেনি। কে জয়ী হবে তা এখনি বলা যাচ্ছে না। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীর মধ্যে লড়াই হবে। কুমিল্লা পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মাহমুদুল হাসান বলেন, এই নির্বাচনে জয়ী হওয়ার আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীর সমান সমান সুযোগ রয়েছে। আওয়ামী লীগের মধ্যে সমন্বয়হীনতা রয়েছে তারা এখনো তিনভাগে রয়েছে। যা বিএনপি প্রার্থীর জন্য বাড়তি সুবিধা হতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত নির্বাচনী পরিবেশ ভালো আছে। শেষে অন্যান্যনির্বাচনের মতো হবে কি না জানি না। তবে এখনো মনে হচ্ছে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। তিন নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার ও ব্যবসায়ী আবদুল্লাহ আল বাকী বলেন, নির্বাচনী পরিবেশ এখনো সুষ্ঠু আছে। প্রশাসন চাইলেই এখানে সুষ্ঠু ভোট হওয়া সম্ভব। আর আওয়ামী লীগের মধ্যে একটা সমন্বয়হীনতা রয়েছে। তবে নির্বাচনের আগে বলা যাচ্ছে না কে জয়ী হবেন।তিনি আরো বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট হলে বিএনপির প্রার্থী জয়ী হবেন। অটোরিকশা চালকমো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, নির্বাচনী পরিবেশ এখনো সুষ্ঠু আছে। যেই জিতুক আমরা চাই সুষ্ঠু একটা নির্বাচন হোক। ১০ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার মাখন সরকার বলেন, এখানে কে জয়ী হবেন সেটা এখনি বলা যাচ্ছে না। এখনো পরিবেশ সুষ্ঠু আছে। আমরা চাই এই পরিবেশটা ভোটের দিন পর্যন্ত বজায় থাকুক। তিনি আরো বলেন সরকারি দলে নেতারা বলছেন নারায়াণগঞ্জসিটির নির্বাচনের মতো হবে। সেখানে কেমন হয়েছে তা আমরা জানি না। সে রকম হলে সরকারি দলের প্রার্থী হবে।বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী মো. মনিরুল হক সাক্কু বলেন, আমি এবং আমার দল সব সময় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পক্ষে। তবে প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী ও তার কর্মী সমর্থকরা এরই মধ্যে নির্বাচনী আচরণবিধি ভাঙার মহড়া শুরু করেছেন। এমন অবস্থায় নির্বাচন কমিশন ও রিটার্নিং অফিসার কঠোর অবস্থান না নিলে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত সুন্দর হবে না। আমরা চাই ভোটাররা প্রত্যেকেই অবাধে, নির্ভয়ে ও সুষ্ঠৃ পরিবেশে স্বতঃস্ফ‚র্তভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ পাক। তিনি আরো বলেন, সরকারি দলের সাথে সাথে প্রশাসন আমাদের লোকজনকে হয়রানি করছে।সাক্কুর প্রধান নির্বাচনী সমন্বয়ক অ্যাডভেকেট মো. কাইমুল হক রিংকু অভিযোগ করেন, কুমিল্লা সদর থানা দক্ষিণের ওসি নজরুল ইসলাম আচারণবিধি লঙ্ঘন করে আমাদের সমর্থক ও ভোটারদের মামলার ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরিতে সে প্রধান প্রতিবন্ধক হিসেবেকাজ করছে। তার এ রকম আচরণ চলতে থাকলে নির্বাচন কমিশনের নতুন ভাবমূর্তি গড়ার চেষ্টা বিফলে যাবে। তিনি আরো বলেন, সন্ধ্যানামার সাথে সাথে ডিবি পরিচয়ে আমাদের কর্মী সমর্থকদের নির্বাচনে বাধা দেয়া হচ্ছে। তাদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে সন্ধ্যা হয়ে গেছে যার যার মতো বাসায় ফিরে যান। এ গুলো সবকরছেন ওসি নজরুল। আমি অবিলম্বে তার প্রত্যাহারের দাবি করছি।বিএনপি প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের সন্ধ্যার ডিবি পরিচয় দিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা করতে দেয়া হচ্ছে না এ বিষয়ে ওসি নজরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো কথা বলতে চাননি। কুমিল্লা দক্ষিণের ওসি নজরুল ইসলাম বিএনপি প্রার্থীকে অফিস করতে দিচ্ছে না পাশাপাশি নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা দিচ্ছেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লার পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসাইনবলেন, প্রার্থীকে যে নির্বাচনী প্রচারণা করতে দিচ্ছে না বা পুলিশ যে অসহযোগিতা করছেএমন কোনো অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। এলে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এখনো পর্যন্ত নির্বাচনী পরিবেশ সুষ্ঠু আছে। কোনো রকম হানাহানি রেষারেষি নেই। আশাকরি এখানে একটি প্রতিদ্ব›িদ্বতাপূর্ণ নির্বাচন হবে।আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমা  বলেন, আমি এখনো যেখানে যাচ্ছি সেখানেই ভোটারদের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। এখন পর্যন্ত নির্বাচনের পরিবেশ ভালোই আছে। কেউ আমাকে এখন পর্যন্ত নিরাশ করেননি। উৎসবমুখর পরিবিশে আমরা গণসংযোগ করছি। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার অধীনে যতগুলো নির্বাচন হয়েছে,সবগুলো সুষ্ঠু পরিবেশে নির্বাচন হয়েছে। এইনির্বাচনও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীর হয়রানির অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমি এখনও পর্যন্ত এ বিষয়টি শুনতে পাইনি। আগে জানা ছিল না। অপরদিকে সীমার নির্বাচনী সমন্বয়ক নুর-উর-রহমান মাহমুদ তানিম বলেন, আওয়ামী লীগ নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মডেলে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন করতে চায়। দলীয় প্রধান এবং সাধারণ সম্পাদকের পক্ষ থেকে আমাদের এমন বার্তাই দেয়া হয়েছে। অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখানে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা তৃণমূল পর্যন্ত অনেক বেশি ঐক্যবদ্ধ। নেতৃত্ব পর্যায়ে দ্ব›দ্ব থাকলেও তৃণমূলে এর প্রভাব পড়বে না।কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিবউদ্দিন মন্ডল  বলেন, নির্বাচনী পরিবেশ এখনো পর্যন্ত ভালো।  নির্বাচন কর্মকর্তারা কয়েটি ওয়ার্ডঘুরেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *