জয়নুল আবেদীন চৌধুরী রনি >>>
ফেনীতে ইসলামী ছাত্রশিবির ও জামাতের শীর্ষ নেতাকর্মীরা কৌশলে সাংবাদিকতায় জড়িত এই হলো জামাত শিবিরের নতুন মিশন। নিজেদের সুরক্ষা ও সাংগঠনের ঢাঁল হিসাবে যুক্ত করে সাংবাদিকতার পেশাকে বেচে নেওয়াটি পরিকল্পিত।
৭১’ স্বাধীনতার বাংলাদেশের রাজনীতির মঞ্চে স্বাধীনতা বিরোধী সংঘঠন “জামাতে ইসলামী বাংলাদেশ” নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করতে বার বার বহুরূপি ও কৌশলি ভুমিকায় অবতির্ণ হয়েছিলো এমনই তথ্য সকলেরই জানা। নিজেদের স্বার্থে যখন যাকে প্রয়োজন, তখন তার সাথে সখ্যতা গড়েছে যখন যে পাত্রে ঠাঁই নিয়েছে, সেই রং ধারণ করেছেন।
.
ধর্মের লেবাসধারি সংগঠনটি ধর্মের দোহাই দিলেও, ইসলাম ধর্মের প্রকৃত অনুশাসন কখনোই এঁরা অনুস্মরণ করেনি। ধর্মটাকে ওরা শুধু বর্ম হিসাবেই ব্যাবহার করেছে। জামাতের শীর্ষ নেতারা একে একে ৭১ এর কৃতকর্মের জন্যে বিচারের সম্মুখীন হয়েছে, অনেকেরই ফাঁসির রায় কার্যকর হয়েছে, অনেকে কারাগারে রয়েছে। বিচার বাধাগ্রস্ত করতে দেশব্যাপী নাশকতা সৃষ্টি, জঙ্গি হামলা, ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ডে লিপ্ত হওয়ায়, জামাত শিবিরের অধিকাংশ নেতাকর্মী অভিযুক্ত হয়ে চলে যায় আত্ম গোপনে, প্রকাশ্যে সাংগঠনিক তৎপরতা বন্ধ হয়ে যায়।
.
বর্তমানে প্রশাসনের নজরদারি ও তৎপরতা শিথিল হওয়ায়, অনেকেই গর্ত থেকে প্রকাশ্য হয়েছে, কেউ কেউ খোলস পাল্টে নিজ নিজ এলাকায় অবস্থান করছেন। এ অবস্থায় কৌশলে নিজেদের সংগঠিত করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্তরের অর্থাৎ অপেক্ষাকৃত কম সাংগঠনিক পরিচিতি সম্পন্ন দলিয় অনুসারিদের কাজে লাগাচ্ছে, প্রাথমিক পদক্ষেপ অনেকটা নির্বিঘ্নে সফল করেছে তারা, পূর্বে ঝিমিয়ে থাকা চিন্হিত নেতাকর্মীরাও বর্তমানে অনেকে প্রকাশ্য হতে শুরু করেছে।
.
আজ কে আমার লেখার উদ্দেশ্য ফেনীর জামাত শিবিরের বর্তমান কৌশলি সাংবাদিকতার পরিচয় জুড়িয়ে দিয়ে সাংগঠনিক তৎপরতা নিয়ে। আগে থেকেই অনেক ক্ষেত্রে অনেকেরই জানা ছিলো যে, জামাত শিবিরের অনেক নেতাকর্মী বা অনুসারি বর্তমান ক্ষমতাশিনদের কারো কারো সাথে সক্ষ্যতা গড়ে তুলে নিজেদের নিরাপদ রাখতে সক্ষম হচ্ছে, দু’চার জনতো কৌশলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীর লেবাসও জুড়ে নিয়েছেন নিজেদের নামের পাশে। এমন অভিযোগও আমাদের কমবেশী সবাইর জানা। শোনা যায় অনেক ক্ষেত্রে, সত্যি মিথ্যা যাই হোক, এ সবই পুরাণো কথা।
.
আরে বর্তমান কৌশলতো আরো শংঙ্কিত হওয়ার মতো, তারা সাংবাদিকতার লেবাস জুড়ে নিচ্ছে নিজেদের নামের পাশে। তাঁদের সাফল্য অর্জনের ভিত্তিতে তাঁরা নাশকতার পরিকল্পনা প্রমান বিলুপ্ত করতে এবং নিজেদের বলয় শক্তি বৃদ্ধি লক্ষ্যে রাজপথে নেমে সাংবাদিক পরিচয়ে ঘাঁপটি মেরে ঢুকে থাকা সূকৌশলে সাংবাদিতার শব্দটি জুড়ে দিয়ে রাজপথে নেমে গেছেন। এঁদের মধ্যে অনেকেই টাকার বিনিময়ে সমর্থন দিচ্ছেন, অনেক বিএনপি সাংবাদিক গুলো সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন। অনেক আওয়ামী লীগের সাংবাদিক পরিচয়ে থাকা তাঁদের বলয় শক্তি বৃদ্ধির জন্য জামাত শিবিরের অভিযুক্ত সাংবাদিক গুলোর সঙ্গে আপোষ করেই সমর্থন দিচ্ছেন এমনটা দেখা যাচ্ছেন।
.
অত্যান্ত সুপরিকল্পিত মিশন নিয়েই এগুচ্ছে জামাত শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্ব প্রদান কারী বর্তমান সাংবাদিক জুড়ে দেওয়া ব্যক্তিগুলো। এর পিছনে সুদুরপ্রসারি পরিকল্পনা আছে বলেই সচেতন মহল মনে করে। অনেক চিন্তা ভাবনা ও জামাতের অর্থায়নে তাঁরা সাংবাদিকতার পেশায় সম্পৃক্ত হওয়ার কৌশল গ্রহণ করেছেন বলে মনে করেন সচেতন মহল। ফেনীর জামাত-শিবিরের কর্মকাণ্ডের উপর নজর রাখেন এমন বেশ কয়েকজন প্রগতিশীল ধারার রাজনৈতিক সচেতন ব্যাক্তির সাথে কথা বলে, এ বিশয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
.
নিজেদের সাংগঠনিক কর্মকান্ড নির্বিঘ্ন করতে বর্তমানে সাংবাদিকতার লেবাস ধারণ করে সাংবাদিকদের মাঠে অবস্থান করতে উৎসাহিত করছেন। এটা তাঁদের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের কৌশল হিসাবেও কাজে লাগাতে চাচ্ছেন।
.
সব কিছু প্রত্যাক্ষ করে ও বিশ্লেষণ করে মনে হচ্ছে, এটা শুধু ফেনীতে হচ্ছে এমন নয়, বিজ্ঞমহলের ধারনা সমগ্র বাংলাদেশেই জামাত-শিবির পরিকল্পিত ভাবে সাংবাদিকতা পেশাকে কাজে লাগাতে চাচ্ছেন। ফেনীর চিত্র প্রত্যাক্ষ করে, ও ভিবিন্ন সূত্র থেকে তাদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পাওয়া যায়। সাংবাদিকতার লেবাসকে তারা প্রথমত নিজেদের সুরক্ষার কার্যকর ঢাল হিসাবে ব্যাবহার করতে চাচ্ছে, এটা প্রধান কারণ হলেও, একমাত্র কারণ নয়, এর পিছনে বহুমুখী উদ্দেশ্যে রয়েছে_____
যেমনঃ
(এক) তারা ধরে নিয়েছে সাংবাদিক পরিচয় তার জামাত ও শিবির পরিচয়টা আঁড়াল করবে, সে নিরাপদ থাকবে।
(দুই) প্রশাসনের সান্যিধ্যে যাওয়া ও সখ্যতা গড়া সহজ হবে, প্রশাসন কিছুটা হলেও সমীহ করবে।
(তিন) সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মসুচিতে অবাধ যাতায়াত করা যাবে, নিজেদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সহজ হবে।
(চার) অনেক তুচ্ছ বিষয়, ছোট খাটো ঘটনাকে ফুঁলিয়ে ফাফিয়ে প্রচারের মাধ্যমে সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করতে চেষ্টা করবে। উস্কানীমুলক তথ্য প্রচার করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে সচেষ্ট থাকবে। (যার কিছুটা প্রমান নুসরাত হত্যা নিয়ে, বর্তমান চলমান গুজবের, কোটা ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে ফেনীর চিত্র দেখলেই মিলবে)।
(পাঁচ) এলাকা ভিত্তিক কট্টর আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ সহ দলীয় নেতাকর্মী, যারা দলের স্বার্থ রক্ষায় নিবেদিত প্রাণ, উগ্র ধর্মান্ধ মৌলবাদ বিরোধী কঠোর অবস্থান নিতে দৃঢ় প্রতিশ্রুতি বদ্ধ, সাংগঠনিক ভাবে দক্ষ, সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহন যোগ্য, এমন সব নেতাদের, ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করা, হেয় প্রতিপন্ন করতে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো, এ ক্ষেতে নিজ দলের প্রতিপক্ষ নেতাকর্মীদের সাথে আঁতাত করে, তাদের সহযোগিতায় সমালোচিত করতে চেষ্টা করা।
-এ জন্যে জামাত শিবিরের বিভিন্ন স্তরের নেতা কর্মীদের প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিক হিসাবে যুক্ত করছে। বর্তমানে ফেনীতে তুলনামূলক বেশী জামাত শিবির নেতাকর্মী সাংবাদিকতার পেশায় যুক্ত হয়েছে, আগামীতে আরো বেশিও হতে পারে। এ তালিকায় একাধিক প্রতিষ্ঠিত টিভি চ্যানেল ও জাতীয় পত্রিকার সংবাদদাতাও রয়েছেন। আবার বেশ কয়টি ফেনীর আঞ্চলিক পত্রিকাও রয়েছেন। ইতিমধ্যে এ সাংবাদিকরা পরিকল্পনা অনুযায়ী বিভক্ত হওয়া একাংশের সাংবাদিক সংগঠনও প্রতিষ্ঠা করেছেন। যাঁরা এঁদের সমর্থন কারী হয়ে রাজপথে নেমে অবস্থান করবে ব’লেই এঁদের প্রতিশ্রুতি। আর এ সব সংগঠনের সভার আঁড়ালে, জামাত শিবিরের দলিয় সভা পরিচালনা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছেন। জামাত শিবিরের চিহ্নিত নেতা, যারা এক সময় উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে শীর্ষ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন তাঁদের দৈনিক পত্রিকা ফেনীতে বেশ আলোচিত স্থানে রয়েছেন। এঁদের প্রতিহত করতে পূর্ব বর্তমানে সকলেই ব্যর্থ। বর্তমানে যেই পূর্বের বর্তমানের নাশকতার পরিকল্পনা প্রমান পাওয়ার অপরাধীরা সুকৌশলে সাংবাদিক পরিচয়ে আঁড়াল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে এবং কি এই জামাত শিবিরের অভিযুক্ত প্রোডাকশন গুলোকে রাজপথে অবস্থানে পূর্বেও ছিলো বর্তমানেও রয়েছে।
ইতিমধ্যে ঐ জামাতশিবিরের প্রতিষ্ঠান সাংবাদিকদের নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ভিন্ন ভিন্ন নামে সামাজিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠা করেছেন। শুধু এসব করেই ক্ষ্যান্ত হননি। এইসব নামে বেনামির সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের আড়ালে তারা জামাত শিবিরের সাগঠনিক সভাও করছে নির্বিঘ্নে।
আর সবচেয়ে বিশ্ময়কর ও দুঃখজনক তথ্য হচ্ছে, অনেকের মুখেই শোনা যায় প্রতিষ্ঠিত এই-ঐ টিভি চ্যানেল বা প্রিন্ট মিডিয়ার জেলা প্রতিনিধি হতে জামাত শিবিরের অভিযুক্ত প্রোডাকশন গুলোকে সহায়তা করেছেন। জেলা পর্যায়ের শীর্ষ আওয়ামীলীগ নেতারাও, এর সত্যতা খুঁজতে গেলেই প্রতিষ্ঠিত সাংবাদিকদের সাথে কথা প্রসঙ্গে শিবির জামাত ক্যাডার হটাৎ হঠাৎ কিকরে টিভি বা প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিক হয়? এমন প্রশ্ন তুলতেই তারা প্রায় বলেন, আওয়ামীলীগের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে সূ-সমপর্ক বকশিসে তাঁরা চলতে পারলে, চ্যানেলের বা প্রিন্ট মিডিয়ার আর দোষকি!
সাংবাদিকতার পেশাতে পূর্বের ইতিহাসের সবচেয়ে গর্বিত সন্তান হওয়া সন্মানিত সাংবাদিক গুলোকে খুঁজে পাবো কি তা আস্তে আস্তে মৃত্যু বরণ করছেন!
ছবিতে লেখক :
জয়নুল আবেদীন চৌধুরী রনি। সাহিত্য সম্পাদক- বাংলাদেশ ছাত্রলীগ , ফেনী শাখা।