আমি কমিশন খাই না – ওবায়দুল কাদের | বাংলারদর্পন

নিউজ ডেস্কঃ

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমার মন্ত্রণালয়ের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে মিডিয়ায় রিপোর্ট আসে। এটা অত্যন্ত কষ্টদায়ক। মন্ত্রণালয়ের কোনো কাজের অনিয়ম-দুর্নীতি হলে মন্ত্রী হিসেবে কি আমি দায় এড়াতে পারব? ফর নাথিং আমি এ দায়টা কেন নেব? আমি তো নিজে আপনাদের কাছ থেকে কাজের জন্য পার্সেন্টেজ নিই না, কমিশন খাই না। প্রমোশন দিয়ে টাকা নিচ্ছি না। কাউকে বদলি করে টাকা খাওয়া, সেটাও এখন তো বন্ধ। এক সময় তো চিফ ইঞ্জিনিয়ার হতেও টাকা লাগত। প্রমোটেড হতেও টাকা লাগত। সেটাও তো নেই না। তাহলে অসুবিধাটা কোথায়। কেন দায় বহন করতে হবে?

মঙ্গলবার সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের বিভিন্ন পর্যায়ের প্রকৌশলী, প্রকল্প পরিচালক ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন > সোনাগাজী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সৈয়দ দীন মোহাম্মদ।

ওবায়দুল কাদের বলেন, রাস্তা নির্মাণ হলো, এক পশলা বৃষ্টি হলো, রাস্তা থাকে না। ছাল-বাকল সব উঠে যায়। তাহলে এই রাস্তা করার দরকার কি? রাস্তার জন্য বড় বড় বরাদ্দ। কিন্তু কিছু দিন গেলেই নানা সংকট দেখা দেয়। কোথাও গর্ত, কোথাও দেবে যায়, ছেঁড়া কাঁথার মতো রাস্তায় ফাটল দেখা যায়। এসব কেন হবে?

তিনি বলেন, আমাদের এখানে ওভারওয়েট একটা প্রবলেম, সেটা সবাই জানি। তাই বলে এত দ্রুত কেন রাস্তার বেহাল দশা হবে? নির্মাণ কাজের যে ত্রুটি আছে, যথাযথ মানের রাস্তা তৈরি করার জন্য সরকারের যে নির্দেশনা, তা ঠিকমতো বাস্তবায়ন করতে হবে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, আমার নিজের জেলার বেগমগঞ্জেও একটা সড়কের কাজে ত্রুটিপূর্ণ নির্মাণসামগ্রী দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছিল। অভিযোগ পাবার পর তদন্তেও সেটা প্রমাণিত হয়। মন্ত্রীর নিজের এলাকাতেও যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে অন্য এলাকায় কী অবস্থা হতে পারে?

কাদের বলেন, আপনাদের প্রতি আমার প্রধান নির্দেশনা হচ্ছে, রাস্তার কাজের মান যেন নিশ্চিত করা হয়। কাজটা যেন ৩, ৪ বা ৬ মাসে নষ্ট না হয়ে যায়। কাজটা দেশের কাজ। এটা সবাইকে মনে রাখতে হবে। আর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কাজ করার মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। অনেক সময় প্রয়োজনে রাতেও কাজ করতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, কাজের কোয়ালিটি খারাপ হলে দায় নিতেই হবে। কারণ, আজকাল কিন্তু ফেসবুকে লোকজন রাস্তার ছবি তোলেন। ভোগান্তির ছবি ফেসবুকে ছেড়ে দেন। কোনো কিছু আর হাইড করা যায় না। সোস্যাল নেটওয়ার্কের কারণে মুহূর্তেই ভোগান্তির তথ্য প্রচার পায়। সুতরাং অনিয়ম দুর্নীতির ব্যাপারে সতর্ক থাকা দরকার। কাজের ব্যাপারে মনোযোগী থাকা দরকার আপনাদের।

তিনি বলেন, আগে তো অনেক তদবির হতো। প্রথম মন্ত্রী হওয়ার পর প্রথম ৩-৪ বছর রুলিং পার্টির তদবিরের জ্বালায় থাকা ছিল দায়। এখন সেটাও নেই। এখন সাহসও পায় না। কারণ এখন তদবিরে কাজ হয় না।

ওবায়দুল কাদের বলেন, রাস্তা মেরামত ও কাজের কোয়ালিটি নিয়ে প্রশ্ন আছে। আগামী রমজানের ঈদের আগেই সব ধরনের ভাঙা রাস্তা মেরামত করতে হবে। চলতি কাজ শেষ করতে হবে। মানুষ যাতে ভোগান্তিতে না পড়েন, রাস্তা ইউজেবল (চলাচলে উপযোগী) করতে হবে।

এ জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণে সড়ক ও জনপদ বিভাগকে নির্দেশ দেন মন্ত্রী।

সভায় সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী, সওজের ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেস উইং, টেকনিক্যাল সার্ভিসেস উইং, ব্রিজ ম্যানেজমেন্ট উইং, পরিকল্পনা ও রক্ষণাবেক্ষণ উইং ও যান্ত্রিক উইংসহ বিভিন্ন পর্যায়ের প্রকৌশলী এবং প্রকল্প পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *