সুনামগঞ্জের সুরমা ইউপি সদস্যদের চত্রছায়ায় চলছে বাল্য বিবাহের মহোৎসব | বাংলারদর্পন

নাইম তালুকদার, সুনামগঞ্জ :
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় অসচেতন অভিভাবক ও ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের চত্রছায়ায় চলছে বাল্য বিবাহের মহোউৎসব। বিয়ের নামে ১৩/১৪ বছরের কিশোরীরা পড়ালেখা বাদ দিয়ে প্রেমের ফাঁদে পা দিয়ে প্রতিনিয়ত ধর্ষনের শিকার হয়ে অল্প বয়সে অন্ধকারেন দিকে ধাবিত হচ্ছে তাদের সুন্দর ভবিষ্যৎ।
আর প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে এসবের আশ্বাস দিয়ে কমবয়সী কিশোর ও কিশোরী মেয়েদের ১৮ বছর থেকে ১৯ বছর দেখিয়ে নিয়মের বাহিরে জন্ম নিবন্ধন দেওয়া হচ্ছে সুরমা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ও চেয়ারম্যান এর যৌথ স্বাক্ষরে। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়ন, জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়ন ও গৌরারং ইউনিয়নে ধর্ষন ও বাল্য বিবাহের মহোৎসব দীর্ঘদিনের রোল মডেল। অভিভাবকদের অসেচেতনা ও ইউ/পি সদস্যদের অনিয়মের জন্য বাল্য বিবাহের মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
সরকার বাল্য বিবাহকে নিষিদ্ধ করলে ও কিছু অসাধু জনপ্রতিনিধি ও অভিভাবকদের গাফলাতির কারনে কম বয়সি ছেলে মেয়েরা প্রেমের ফাদেঁ পা দিয়ে অকালে মৃত্যুর দিকে পতিত হচ্ছে। ভুল করে কোন কোন অপ্রাপ্ত কিশোরীরা জীবন দিয়ে সমাপ্তি দিচ্ছে বাল্য বিবাহের ইতিহাস। আবার কেউ মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে ইউ/পি সদস্যদের আশ্রয়ে জন্ম সনদ জাল করে বয়স বাড়িয়ে সংসার পেতে শিশু জন্ম দিয়ে অল্প বয়সে নানান জটিল রোগের আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর দিকে চলে যাচ্ছেন। কোন কোন কিশোরীরা বিয়ের নামে ভুল করে তাদের ইজ্জত হারিয়ে তার মাসুল দিতে গিয়ে কাজী দিয়ে বিবাহের কাজ সম্পন্ন করেন। বিয়ের কিছুদিন সংসার করে আদালতের বারান্দায় ন্যায় বিচারের বানী শুনতে ধরনা দিচ্ছেন ঐ সমস্ত অপ্রাপ্ত কিশোরীরা।
এমন দৃশ্য দেখাযায় প্রতিনিয়ত চলছে। ২০১৯ সালের জানুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে আজ পর্যন্ত সুরমা ইউনিয়নে কম বয়সী ২/৪টি অপ্রাপ্ত কিশোর কিশোরীরা ঘরবাধাঁর স্বপ্নে বিভোর হয়ে প্রেমিককের হাত ধরে বাড়ী থেকে পালিয়ে মিথ্যা বিয়ের প্রলোভনে কিশোরীরা ধর্ষর্ণের শিকার হচ্ছে। এসব ঘটনাকে এক শ্রেণীর স্থানীয় প্রভাবশালী অসাধুরা বিচারের নামে টাকা খেয়ে বিষয়টিকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে নিজেরাই বাল্যবিবাহের আয়োজন করে ইউ/পি চেয়ারম্যান ও সচিবকে ম্যানেজ করে ভুয়া জন্ম সনদ দিয়ে অল্প বয়সী কিশোর কিশোরীদের বাল্য বিবাহ সম্পন্ন করে দেওয়া হচ্ছে। ন
তুন বছরের প্রথম মাসের শুরু থেকে সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানাযায় এ পর্যন্ত সুরমা ইউনিয়নে চেয়ারম্যানের চত্রছায়ায় তিনটি বাল্য বিবাহের কাজ সম্পন্ন করে রাখা হয়েছিল তারমধ্যে একটি বাল্যবিবাহ সম্পন্ন করা হয়েছে জানুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহে সুরমা ইউনিয়নের পূর্ব সদরগড় গ্রামে অল্প বয়সী সপ্তম শ্রেণীতে পড়ু–য়া এক কিশোরীর এবং সুরমা ইউ/পি চেয়ারম্যান ও সচিবের যৌথ স্বাক্ষরিত একটি জন্মসনদে।
সেখানে মেয়েটির বয়স ১৯ বছর দেখানো হয়েছে। এছাড়াও গত ৩ জানুয়ারী সুরমা ইউনিয়নের হালুয়ারঘাট এলাকায় ৭ম শ্রেনীর এক ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছিল সুরমা ইউ/পি সদস্য ফিরোজ মিয়াসহ কয়েকজন প্রশাসনকে অবগত না করে বিচারের নামে মেয়েটিকে তার মা বাবার কাছে বাল্য বিবাহের আশ্বাস দিয়ে গড়িমসি শুরু করে সময় কালক্ষেপনের মাধ্যমে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছিল।
পরে মেয়েটি পরিবার কোন ন্যায় বিচার না পেয়ে ৮জানুয়ারী মেয়েটিকে সদর হাসপাতালে মেডিকেল চেকআপ সম্পন্ন করে সদর মডেল থানার ওসি মোঃ শহীদুল্লাহ’র স্মরনাপন্ন হলে তার নিদের্শে এস আই মোঃ ইমতিয়াজ এর নেতৃত্ব পুলিশ ধর্ষনকারী মোঃ সুজন মিয়াকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন। পরবর্তীতে থানায় মেয়ের মায়ের দায়ের করা মামলায় ধর্ষনকারী সুজন মিয়াকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হলে বিঞ্জ বিচারক তার জামিন না মুঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ প্রদান করেন।
এছাড়াও গত ১৫ জানুয়ারী ভোর রাতে জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নের ষোলঘর খাইয়েরগাঁও গ্রামের মোঃ শাহের আলীর ছেলে হাফেজ মোঃ মনফর আলী (১৬) পাশ্ব^বর্তী সুরমা ইউনিয়নের বালিকান্দি গ্রামের ১৫ বছরের এক অপ্রাপ্ত কিশোরীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে এবং প্রেমিক লম্পট হাফেজ মনফর আলী প্রেমিকরা অপ্রাপ্ত মেয়েটিকে নিয়ে পালানোর সময় গ্রামবাসী প্রেমিক যুগলকে হাতেনাতে ধরে আটক করে চেয়ারম্যানের কাছে হস্তান্তর করেন ।
কিন্তু চেয়াম্যান প্রশাসনকে অবগত না করে প্রেমিক যুগলের অভিভাবকদের আশ্ব^স্ত করে আগামী শুক্রবার বাল্যবিবাহের সকল প্রস্তুুতি সম্পন্ন করে রেখেছেন ।
বিষয়টি থানা পুলিশ সাংবাদিকসহ কাউকে কিছু না জানানোর জন্য ছেলের পক্ষ ও মেয়ে পক্ষকে সাবধান করে দেন ইউ/পি চেয়ারম্যান মো: আব্দুস সাত্তার এ ঘটনার বিষয়টি সংবাদকর্শীদের জানান প্রেমিক যুগলের পরিবারের লোকজন ।
বাল্যবিবাহ ও শিশু ধর্ষণ বন্ধের জন্য প্রশাসন ও জন প্রতিনিধিরা নিরলসভাবে কাজ করবেন এমটা দাবী জানান সুশীল সমাজের লোকজন।
এ ব্যাপারে সুরমা ইউনিয়নের সচিব মোছা: রোহেনা বেগমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন কোন জন্ম সনদ দেইনি কেউ আমার সাক্ষর ও সীল জাল করেছে।
এ ব্যাপারে সুরমা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো: আব্দুস সাত্তারের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে জন্মসনদ এর বিষয়টি ভ’য়া বলে দাবী করেন এবং বাল্যবিবাহের বিষয়টি এখনো সস্পন্ন হয়নি তবে বিষয়টি বিচারাধীন আছে।
Related News

শ্রীমঙ্গলে বিষাক্ত পটকা মাছ খেয়ে বউ শ্বাশুড়ির মর্মান্তিক মৃত্যু | বাংলারদর্পণ
সিলেট সংবাদদাতাঃ শ্রীমঙ্গলে বিষাক্ত পটকা মাছ খেয়ে বউ শ্বাশুড়ির মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সরজমিনRead More

হুন্ডি জালনোট ইয়াবা কারবারী সেই রুবেল জেলহাজতে!
নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের এপার ওপারে দামী ব্রান্ডের মোটরসাইকেল চুরি করে বিক্রি করাই যার মূলRead More