ফেনী প্রতিনিধি : ফেনী সেনসিভ হাসপাতালের ম্যানেজার ও জেলা যুবদল সভাপতি জাকির হোসেন জসিম ভাড়া নিয়ে ৫ বছর ধরে হাসপাতাল পরিচালনা করে অাসছে। বাড়ি ভাড়া ও আয়-ব্যয়ের হিসাব না দিয়ে নিজেকে চেয়ারম্যান দাবী করে হাসপাতাল দখল করে রাখার অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (১৫আগস্ট) দুপুরে শহরের অতিথি চাইনিজ রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করে হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম ও ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়ালসহ মালিকগন এ অভিযোগ করেন।এছাড়া জসিম চেয়ারম্যান আয়-ব্যয়ের হিসাব না দিয়ে হাসপাতাল জিম্মি করে রাখায় তারা তাদের আত্মীয় স্বজনদের নিয়ে গত শনিবার হাসপাতাল থেকে রোগীদের বের করে দিয়ে প্রতিষ্ঠানে তালা লাগিয়ে পুলিশ সুপারের নিকট চাবি জমা দেন বলে জানান মালিকগন ।
সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, ২০১১ সালে সৈয়দিয়া টাওয়ারের মালিক মো. এনায়েত উল্যাকে ৫৪ লাখ টাকা জামানত দিয়ে সেনসিভ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করি । যন্ত্রপাতিসহ প্রায় ৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা আমরা বিনিয়োগ করি। ২০১১ সালের নভেম্বর প্রতিষ্ঠানটির আনুষ্ঠানিক শুরু হয়। প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান পদে সাইফুল ইসলাম ,ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ ফরিদ স্বপন ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে আবদুল আউয়াল দায়িত পালন করেন।
প্রায় ১৮ মাস ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালন অবস্থায় শেখ ফরিদ স্বপন নানান অনিয়মে জড়িয়ে পড়লে তার বিনিয়োগকৃত টাকা ও মুনাফা দিয়ে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান ফেনীর বাহিরে থাকায় প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করা অসম্ভব হয়ে পড়ে।এ অবস্থায় ২০১৩ সালের জুলাই মাসে সেনসিভ হাসপাতালটি পরিচালনা করার জন্য জাকির হোসেন জসিম চেয়ারম্যানকে ১ লাখ ৮৫ হাজার টাকার বিনিময়ে মৌখিক চুক্তিতে ভাড়া দিয়ে তাকে ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়।তিনি প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করে বাড়ী ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, স্টাফ বেতন, ডাক্তার বেতনসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করে প্রতিষ্ঠান মালিকদের সাথে আয় ও ব্যয়ের হিসাব উপস্থাপন করবেন মর্মে চুক্তিবদ্ধ সিদ্ধান্ত হয়।
কয়েক মাস বাড়ি ভাড়া দেয়ার পর হঠাৎ করে বিদ্যুৎ বিলসহ অন্যান্য সব কিছুর বিল পরিশোধ করা বন্ধ করে দেয় জসিম। অদ্যাবধি বাড়ী ভাড়া বিদ্যুৎ বিল সহ যাবতীয় পাওনা দেনা বন্ধ করে দিয়ে প্রতিষ্ঠানের সমুদয় টাকা নিজ হেফাজতে নিয়ে যান। তার স্ত্রী লুৎফুন নাহার পারভিনকে ভাইস চেয়ারম্যান করে প্রায় ৮০ লাখ টাকা সরিয়ে নেন। প্রতিষ্ঠানের মালিকদের কাছে কোন আয় ব্যয়ের হিসাব উপস্হাপন না করে জোর পুর্বক প্রতিষ্ঠানটি দখল করে নেন।বিষয়টি সমাধানের জন্য বার বার বসে তারিখ নির্ধারণ করলেও জসিম চেয়ারম্যান কোন কর্ণপাত করেনি। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে কয়েকবার সালিশ হলেও তিনি আমলে নেননি। দীর্ঘদিন যাবৎ বাডী ভাড়া না দেওয়ায় ঘরের মালিক ভাড়া না দেয়ায় উকিল নোটিশ পাঠিয়ে ভবনটি ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলেন। বিষয়টি আমরা ফেনী শহর ব্যবসায়ী সমিতি, ফেনী মডেল থানা, ফেনী পুলিশ সুপার ও স্থানীয় সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীকে অবহিত করি।কিন্তু সালিশী বৈঠকে ডাকা হলে তিনি উপস্থিত না হয়ে, প্রভাব খাটিয়ে নানাবিধ ভয়ভীতি, প্রাননাশ ও মিথ্যা মামলায় জড়ানোর হুমকি প্রদান করে যুবদল সভাপতি জসিম।ফলে আমরা নিরাপত্তাহীনতার কারণে ফেনী মডেল থানায় সাধারন ডায়েরী করি।
আমরা দল মতের উর্ধে এসে ব্যবসায়িক পরিবেশ বজায় রাখতে বদ্ধ পরিকর। কিন্তু কতিপয় ব্যক্তি ব্যবসায়িক দ্বন্ধের ঘটনাকে রাজনৈতিক তকমা লাগিয়ে ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। এঘটনায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ পত্র-পত্রিকায় মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে আমাদেরকে সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করাসহ প্রতিষ্ঠানের সম্মানহানী ঘটছে। ঘটনাটি রাজনৈতিক কারনে না ঘটলেও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের বিবৃতির সাথে দ্বিমত প্রকাশ করে মালিকগন ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবী করেন।