চট্টগ্রাম ব্যুরো:
চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ এলাকায় আবুল কাশেম (২০) নামে এক যুবক ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, বান্ধবীকে উত্যক্তের জেরে বখাটে আবুল কাশেমকে খুন করেছে আবছার উদ্দিন (২৪) নামের আরেক যুবক।
শুক্রবার (১১ মে) রাতে এই ঘটনার পর আবুল কাশেমকে নিজেদের কর্মী দাবি করে এলাকায় ভাংচুর করেছে ছাত্রলীগ নামধারী কিছু তরুণ-যুবক।
নিহত আবুল কাশেম চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার শীলকূপ গ্রামের আব্দুস সবুরের ছেলে। এলাকায় বখাটে হিসেবে পরিচিত কাশেম চট্টগ্রামের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রলীগের একাংশের সঙ্গে থাকে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
সূত্রমতে, কাঠমিস্ত্রি আবছার থাকে নগরীর বাকলিয়া থানার কালামিয়া বাজার এলাকায়। একই এলাকা থেকে বান্ধবীকে নিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় আবছার যান বায়েজিদ বোস্তামির মাজারে। শুরু থেকেই ৪ থেকে ৫ জন বখাটে মেয়েটিকে উত্যক্ত করা শুরু করে। বখাটেরা মাজারের গেটে অবস্থান নিলে তাদের ভয়ে আবছার ও তার বান্ধবী বের না হয়ে ভেতরে বসে থাকে।
এ সময় আবছারের পূর্বপরিচিত স্থানীয় বাসিন্দা এক দম্পতি মাজারে আসেন। আবছার তাদের পুরো ঘটনা খুলে বলেন। তখন তারা আবছার ও তার বান্ধবীকে মাজার থেকে বের করে গাড়িতে তুলে দেওয়ার উদ্যোগ নেন। স্থানীয় বাসিন্দা দেখে বখাটেরা কিছুটা আড়ালে গেলেও পরে আবার তাদের দলনেতা পরিচয়ে আবুল কাশেম আসেন ঘটনাস্থলে।
ততক্ষণে মেয়েটিকে অটোরিকশায় তুলে দেয় আবছার। কিন্তু তাকে আটকে ফেলে বখাটেরা। কাশেম আবছারকে নিয়ে বায়েজিদ বোস্তামির মাজার ও চা বোর্ডের মাঝামাঝি একটি নির্জন স্থানে যান। পরে সেখানে আবুল কাশেমকে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। স্থানীয়রা কাশেমকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে যায়। রাত ১১ টার দিকে কর্তব্যরক চিকিৎসক কাশেমকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানিয়েছেন চমেক পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আলাউদ্দিন তালুকদার।
বায়েজিদ বোস্তামি থানার পরিদর্শক ( তদন্ত) মুহাম্মদ মঈন উদ্দীন বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, আবুল কাশেমের কাছে একটি ছোরা ছিল। আবছারকে মারধর করে কাশেম তার কাছ থেকে মোবাইল-টাকাপয়সা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছিল। এ সময় ধস্তাধস্তিতে কাশেমের ছোরা কেড়ে নিয়ে তার বুকে ছুরিকাঘাত করে আবছার।
এদিকে কাশেমের মৃত্যুর খবর জানাজানির পর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রলীগ নেতা জনৈক মহিউদ্দিনের অনুসারীরা এলাকায় মিছিল বের করে। তারা বায়েজিদ বোস্তামির মাজারের সামনে জনৈক শুক্কুরের ভবনে ভাংচুর চালায়। পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ এলাকায়ও মিছিল করে।
পুলিশ পরিদর্শক মঈন উদ্দীন বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল থেকে আমরা আবছারের মোবাইল জব্দ করি। পালিয়ে যাবার সময় অথবা ধস্তাধস্তির সময় মোবাইলটি পড়ে গিয়েছিল। পরে সেই মোবাইলের সূত্র ধরে রাতেই তার বান্ধবীকে হেফাজতে নিই। তার কাছে ঘটনার বিবরণ পাই। উত্যক্তের কারণে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার পর মিছিলকারীরা চলে যায়।