চট্টগ্রাম ব্যুরো :
দেশের একমাত্র মিঠা পানির প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে এবার রেকর্ড পরিমাণ ডিম ছেড়েছে মা-মাছ।
১০ বছরের মধ্যে এবার কার্পজাতীয় (রুই, কাতল, মৃগেল ও কালোবাইশ) মা-মাছ বিপুলসংখ্যক ডিম ছেড়েছে। এতে করে হালদাপারের ডিম সংগ্রহকারী পল্লীতে বিরাজ করছে খুশির আমেজ। এবার সাড়ে ২২ হাজারেরও বেশি ডিম সংগ্রহ করা হয়েছে।
বহুল প্রত্যাশিত কার্পজাতীয় মা-মাছ ডিম ছাড়তে শুরু করেছে। প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের তোড়ে সৃষ্ট স্রোতে জেলেদের জালে বৃহস্পতিবার বিকালে প্রথম ধরা পড়ে মৌসুমের প্রথম ‘নমুনা ডিম’। এরপর রাতে হাটহাজারী ও রাউজান উপজেলার ডিম সংগ্রহকারীরা জাল ও নৌকাসহ নানা সরঞ্জাম নিয়ে ডিম সংগ্রহে নেমে পড়েন।
হালদা নদীর গড়দুয়ারা থেকে মাদার্শা পর্যন্ত চলে ডিম সংগ্রহ অভিযান। শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত নদীর বিভিন্ন স্পটে ডিম সংগ্রহ করতে দেখা যায়। এ সময় ডিম সংগ্রহকারীদের মাঝে খুশির আমেজ লক্ষ করা গেছে।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ৮০০-৯০০ ডিম সংগ্রহকারী বিভিন্ন স্পটে ডিম সংগ্রহ করেন। এ সময় ৪০৫টি নৌকা ব্যবহার করা হয়। হালদার হাটহাজারী অংশের গড়দুয়ারা, নয়াহাট বাজার, মেখল কাটাখালীর টেক, গড়দুয়ারা পুরালিয়া খাল, পাতাইজ্যার টেক, আজিমার ঘাট, আমতোয়া, উত্তর মাদর্শা মাছুয়াঘোনা, রহমত ঘোনার টেক, রামদাশ্যার হাট, দক্ষিণ মাদার্শা আমতলী, কেরাম তলীর বাঁক, সিপাহির ঘাট, বাড়িয়া ঘোনা ও রাউজান অংশের কচুখাইন, মোকামী পাড়া, আবুর খিল, মগদাই, কাগতিয়ার টেক, উরকিরচর, পশ্চিম বিনাজুরী, কলিপা ঘোনা, মইশকরম, নাফিতের ঘাট, দক্ষিণ গহিরা, মোবারক খিল, মঘাশাস্ত্রি বড়ুয়া পাড়া, অংকুরি ঘোনা, বদুর ঘোনা, কোতোয়ালি ঘোনা এলাকায় জেলেদের ডিম সংগ্রহ করতে দেখা যায়। প্রতিটি নৌকায় গড়ে সাড়ে তিন বালতি (১২-১৬ কেজি ধারণক্ষমতাসম্পন্ন) করে ডিম সংগ্রহ করা হয়েছে। ডিম সংগ্রহকারীরা জানান, এ বছর প্রতিটি নৌকায় গড়ে প্রায় ৫-৬ বালতি করে ৬টি নৌকায় প্রায় ৩৫ বালতি পর্যন্ত ডিম সংগ্রহ করা হয়েছে। অংকুরি ঘোনা এলাকার বিতান বড়ুয়া জানান, তিনটি নৌকা দিয়ে গড়ে ৩-৪ বালতি পর্যন্ত ডিম সংগ্রহ করেছেন। তারা বলেন, এবারের ডিম সংগ্রহ গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি।