মায়ের সাথে প্রেমের অভিনয় করে শিশু অপহরন, ৫ জন গ্রেপ্তার।

জেড. এ. মাসুদঃ চট্টগ্রাম চান্দগাঁওয়ে মায়ের সাথে প্রেমের অভিনয়ের মাধ্যমে শিশু সন্তানকে অপহরণ করে বিক্রি করেছে এক অপহরণকারী। পুলিশ অভিযান চালিয়ে অপহরণকারীসহ ৫জনকে গ্রেপ্তার এবং শিশু সন্তানকে উদ্ধার করেছে। উদ্ধার হওয়ার শিশুর নাম আহসান হাবিব (৩)। অনেক দৌড়ঝাঁপ করে তাকে উদ্ধার করে মায়ের কোলে দিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, নোয়াখালীর সুধারাম থানার নেওয়াজপুর ইউনিয়নের দেবীপুর গ্রামের আসাদ আলী হাজি বাড়ির রহমত মিয়ার পুত্র মো. আকাশের রহমান খোকা (৩৫), একই থানার দারবক্স হাজি বাড়ির তাজুল হকের পুত্র মো. সিরাজ ড্রাইভার (৫০), ফটিকছড়ির ধর্মপুর গ্রামের বিষু শীলের বাড়ির মনোরঞ্জন শীলের পুত্র দোলন শীল (৩২), তার স্ত্রী রেখা শীল (২৫), রাউজানের সুলতানপুর গ্রামের মহিন্দ্র কবিরাজ বাড়ির লিটন শীলের স্ত্রী নিলী শীল (৩২)।

পুলিশ জানায়, আহসানের মা হালিমা আকতার রেখা। তিনি যখন দুই মাসের গর্ভবতী তখনি স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি। স্বামী চলে যান বরিশালে। রেখা থেকে যান চট্টগ্রামে। কখনো ভিক্ষা আবার কখনো গৃহকর্মীর কাজ করে মা-ছেলের কেটেছে সাড়ে তিন বছরের বেশি সময়। রেখার সাথে মাস দুয়েক আগে পরিচয় হয় নোয়াখালীর সুধারাম থানার দেবীপুর-নেওয়াজপুরের আকাশের রহমান খোকার। আকাশ প্রেমের অভিনয় করে। এক পর্যায়ে বিয়ের পাকা কথা দিয়ে চান্দগাঁও ফরিদের পাড়ার খলিল মাস্টারের বাড়িতে ঘরভাড়া নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মতো সংসার শুরু করেন। এদিকে রেখা চাপ দিতে থাকেন বিয়ের। এক পর্যায়ে ২০১৬ সালের ২৭ ডিসেম্বর নিরুদ্দেশ হয়ে যান আকাশ। একই সময় থেকে রেখার ছেলে আহসান হাবিবও নিখোঁজ। অনেক খোঁজ করেও বিফল হয়ে রেখা দ্বারস্থ হন পুলিশের। চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি সাধারণ ডায়েরি করেন চান্দগাঁও থানায়। বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব পান উপ-পরিদর্শক মো. আবদুল কাদের। তিনিই শুক্রবার এসব তথ্য জানান।

KIDNAP-CHANDGAON-PSএসআই আবদুল কাদের বলেন, আমরা প্রথমে আকাশের মোবাইল ফোনের অবস্থান শনাক্ত করি। এরপর আকাশের গ্রামের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করি। আকাশ স্বীকারোক্তি দেন যে, আহসান হাবিব নামের শিশুটি এক লাখ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দিয়েছে। এরপর আমরা শিশুটির প্রথম ক্রেতা হাটহাজারীর ফতেয়াবাদ বটতলী এলাকার সিরাজ ড্রাইভারকে জিজ্ঞাসাবাদ করি। তার কথা মতো ফটিকছড়ির দোলন শীল-রেখা শীল দম্পতির কাছে যাই। তারা জানায় শিশুটি বর্তমানে রাউজানের সুলতানপুর মাহেন্দ্র কবিরাজ বাড়ির লিটন শীল-নীল শীল দম্পতির ঘরে পালিত হচ্ছে। কারণ তাদের একটি কন্যা সন্তান থাকলেও বংশের প্রদীপ হিসেবে ছেলেটিকে লালন-পালন করছেন। পরে সেখানে গিয়ে শিশুটি উদ্ধার করে শুক্রবার ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে শিশু আহসান হাবিবকে পরিবারের জিম্মায় দেয়া হয়। শিশু অপহরণের ঘটনায় রেখা বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *