এস,এম, ওয়াহিদুল ইসলাম, সুনামগঞ্জ :
|
সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় একের পর এক হত্যা সংঘটিত হওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে চরম আতংক বিরাজ করছে। গেল বছর দিরাইয়ে ট্রিপল মার্ডার সহ বেশ কয়েকটি চাঞ্চল্যকর হত্যার ঘটনায় জেলা জুড়ে আলোচনার ঝড় উঠে। গতকাল রবিবার দিরাই থানার বহুল আলোচিত তালিকা ভুক্ত সন্ত্রাসী আবু বক্কর কে প্রধান আসামী করে ১৪ জনের নামে সুনামগঞ্জ আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করা মামলাটি দিরাই থানায় রেকর্ডভুক্ত করা হয়েছে।
গত ৭ জানুয়ারী সুনামগঞ্জ (দিরাই জোন) আমল গ্রহণকারী চীপ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শহীদুল আমীন’র আদালতে কুলঞ্জ ইউনিয়নের উত্তরসুরিয়ার পাড় গ্রামের নিহতের ভাই ছালিম উদ্দিন বাদী হয়ে একই গ্রামের সন্ত্রাসী আবু বক্করকে প্রধান আসামী করে এই মামলা দায়ের করেন। মামলার সি আর নং- ৪/১৮ তারিখ০৭/০১/২০১৮ইং। বিজ্ঞ আদালত থেকে মামলাটি এফআইআর করার জন্য দিরাই থানা পুলিশের নিকট পাঠানো হলে পুলিশ মামলাটি আমলে নেন। দিরাই থানার মামলা নং-০৮, তারিখ ১০.০১.২০১৮ইং। এ ব্যাপারে মামলার বাদি নিহত মিনার উদ্দিনের ভাই ছালিম উদ্দিন গতকাল শনিবার(১৩/০১/১৮ইং) সকালে হত্যা মামলার আসামীদেরকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবীতে পুলিশ সুপার বরাবরে একটি লিখিত আবেদন করেন। আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, দিরাই থানার তালিকাভূক্ত সস্ত্রাসী ও মিনার হত্যা মামলার প্রধান আসামী সন্ত্রাসী আবু বক্কর মামলাটি তুলে নেয়ার জন্য বাদিকে বিভিন্নভাবে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করছেন।
উল্লেখ্য, মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, গত ২৯ ডিসেম্বর রাতে দিরাই থানার কুলঞ্জ ইউনিয়নের উত্তরসুরিয়ার গ্রামের মৃত রহিম উল্লার ছেলে মিনার মিয়া কে নির্মম ভাবে হত্যা করে লাশ পাশ্ববর্তী কুশিয়ারা নদীতে ফেলে দেয়। পরবর্তীতে চলতি ৪ জানুয়ারীতে লাশটি হবিগঞ্জ জেলার আজমীরীগঞ্জ থানার পাহাড়পুর বাজারের পশ্চিম দিকে কালনী নদীর দক্ষিণ পাশে ভাসমান অবস্থায় লাশটি দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। এর পর আজমীরী থানা পুলিশকে স্থানীয়রা বিষয়টি জানালে থানা কর্তৃপক্ষ লাশ উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য প্রেরণ করে।
লাশের গায়ে কয়েকটি আঘাতের চিহ্ণ আছে বলে ডাক্তার জানান। মামলায় বাদী আরো উল্লেখ করেন, ১ নং আসমী দিরাই থানার তালিকা ভুক্ত সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে দিরাই-জগন্নাথপুর থানায় খুন, ডাকাতি, চুরি, চাঁদাবাজীসহ অসংখ্য মামলা রয়েছে। অনুমান ২ বছর পূর্বে আমাদের এলাকার নিকটবর্তী জগন্নাথপুর থানা এলাকায় একটি খুনের ঘটনা সংগটিত হয়। এই ঘটনায় ১ নং আসামী আবু বক্কর আসামী শ্রেণিযুক্ত হয়। ওই মামলায় মৃত মিনার উদ্দিন সাক্ষী ছিলো। এ কারণে আবু বক্কর ও অন্যান্য আসামীগণ আমাদের সাথে আক্রোশান্বিত ছিলো। ঘটনার পূর্বে নিহত মিনার উদ্দিন কে ওই মামলার সাক্ষী দিতে চাপ প্রযোগ করে। ঘটনার দিন ও তারিখের পূর্বের রাতে আমার ভাই নিহত মিনার উদ্দিন কে আসামী আবু বক্কর সহ কয়েক জন বাড়িতে এসে দাওয়াত খাওয়ার কথা বলে নিয়ে গেলে এর পর তিনি আর বাড়িতে ফিরে আসেননি। এর কদিন পরেই হবিগঞ্জের আজমীরি গঞ্জের নদীতে তার লাশের সন্ধান পাওয়া য়ায়।
বিশ্বস্থ সূত্রে আরো জানা যায়,মিনার হত্যা মামলার প্রধান আসামী ও কুখ্যাত সন্ত্রাসী আবু বক্কর সুনামগঞ্জ পৌর শহরে এক তথাকথিত বিতকির্ত এক গণমাধ্যমকর্মীর আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে শহরে কিছুদিন অবস্থান করলেও যখন মামলাটি বিজ্ঞ আদালত আমলে নেন ঠিক তখনই মিনার হত্যা মামলার প্রধান আসামি আবু বক্কর গ্রেফতার এড়াতে শহর ছেড়ে পালিয়ে বর্তমানে আত্মগোপনে রয়েছেন।
এ ব্যাপারে দিরাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তফা কামাল বলেন,আবু বক্করের বিরুদ্ধে জগন্নাথপুর থানায় ৩টি হত্যা মামলাসহ মোট ১১টি মামলা রয়েছে। তাকে গ্রেফতারে পুলিশের পক্ষ থেকে জোর তৎপরতা চালানো হচ্ছে বলে জানান তিনি।
|