চট্টগ্রাম ব্যুরো : জঙ্গীবাদের ভয়াল থাবা থেকে দেশকে রক্ষা এলিট ফোর্স র্যাব তার সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকেই জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ এর বিরুদ্ধে আপোষহীন অবস্থানে থেকে নিরলস ভাবে কাজ করে আসছে। র্যাবের কর্ম তৎপরতার কারনেই সারাদেশে একযোগে বোমা বিস্ফোরণসহ বিভিন্ন সময়ে নাশকতা সৃষ্টিকারী জঙ্গি সংগঠন সমূহের শীর্ষ সারির নেতা থেকে বিভিন্ন স্তরের নেতা কর্মীদেরকেও গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা সম্ভবপর হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে কারো কারো মৃত্যুদন্ড, যাবজ্জীবন কারাদন্ড হয়েছে, কেউ কেউ বিভিন্ন মেয়াদের কারাভোগ করেছে এবং বেশকিছু মামলা এখনো বিচারাধীন। উল্লেখ্য যে, সাংগঠনিকভাবে পূর্বের মতো সারাদেশে একযোগে নাশকতা সৃষ্টি করাসহ পরিকল্পিতভাবে কোথাও বোমা বিস্ফোরণের সক্ষমতা না থাকলেও, যে সকল জঙ্গি এখনো আত্মগোপন করে আছে তাদের তৎপরতা একেবারে বন্ধ হয়ে যায়নি। তবে র্যাবের কঠোর গোয়েন্দা নজরদারী ও অভিযানের ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনগুলোর নেতা কর্মীরা পুনরায় সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা চালিয়েও বার বার ব্যর্থ হয়েছে এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে আটক হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর নিয়মিত টহল দল গত ২৯ নভেম্বর ২০১৭ ইং তারিখ ২২০০ ঘটিকার সময় চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড থানাধীন ফৌজদারহাট ষ্টেশন সংলগ্ন উত্তর সলিমপুর এলাকায় চেকপোষ্ট স্থাপন করে গাড়ী তল্লাশী করতে থাকে। এ সময় চেকপোস্টের কাছ থেকে ০২ জন লোক সন্দেহজনকভাবে হেটে যেতে থাকলে র্যাব সদস্যরা তাদেরকে থামতে বললে তারা দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। পরবর্তীতে র্যাব সদস্যরা ধাওয়া করে ১। মোঃ শাকিল হোসেন @ সাব্বির (১৯), পিতা-মোঃ সারোয়ার হোসেন, ২। মোঃ রাহাদুল ইসলাম @ রাহাত @ রুদ্র (১৮), পিতা-মোঃ আবু কালাম পাইকার, উভয় গ্রাম-বারপুর স্কুল পাড়া, ওয়ার্ড নং-৪, থানা-বগুড়া সদর, জেলা-বগুড়াদেরকে আটক করে। এ সময় উপস্থিত স্বাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃতদের দেহ এবং সাথে থাকা ব্যাগ তল্লাশী করে ০১টি চাকু, বিপুল পরিমান জঙ্গী উস্কানিমিূলক লিফলেট এবং জিহাদী বই উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, তারা ণড়ঁঃঁনব এ ‘উম্মাহ’ নেটওয়ার্ক থেকে জিহাদী ভিডিও ও বিভিন্ন দেশের মুসলিম নর-নারীদের উপর নির্যাতনের চিত্র দেখে তাদের জিহাদে অংশগ্রহনের আগ্রহ জন্মে। পরবর্তীতে ২০১৬ সালের শেষের দিকে ফেইসবুকের মাধ্যমে এক জিহাদি ভাইয়ের সাথে তাদের পরিচয় হয় এবং সে তাদেরকে বিভিন্নভাবে জিহাদি দাওয়াত দিতে থাকে। প্রায়ই তাদেরকে জিহাদে যাওয়ার জন্য বলতে থাকায় তারা ধীরে ধীরে জিহাদী কাজে উদ্বুদ্ধ হয়ে জিহাদের উদ্দেশ্যে বগুড়া থেকে হিজরত করে কক্সবাজারে আসে। তারা তাদের বাবা মাকে বলে আসে তারা চাকরির উদ্দেশ্যে কক্সবাজার যাচ্ছে। তাদের প্ল্যান ছিল টহলরত পুলিশ এবং বিজিবির উপর হামলা করে অস্ত্র/গুলি লুট করে জঙ্গীবাদি কার্যক্রম পরিচালনা করবে। কিন্তু কক্সবাজার এলাকার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তার কারনে তারা তাদের প্ল্যান বাতিল করে এবং পুনরায় সুবিধা জনক সময় তারা কক্সবাজার জড়ো হয়ে তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে এই উদ্দেশ্যে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এ সময় তারা পথিমধ্যে চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড থানাধীন ফৌজদারহাট ষ্টেশন সংলগ্ন উত্তর সলিমপুর এলাকায় র্যাবের হাতে ধরা পড়ে।
গ্রেফতারকৃত জঙ্গী এবং উদ্ধারকৃত মালামাল এর বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।