মহেশখালিতে বন্দুকযুদ্ধে সন্ত্রাসী জাম্বু নিহত : বিপুল পরিমান অস্ত্র উদ্ধার

মোঃ আলাউদ্দীন :

কক্সবাজার জেলার মহেশখালী থানাধীন দূর্গম সোনাদিয়া দ্বীপ এলাকায় র‌্যাবের সাথে গুলি বিনিময়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী জাম্বু বাহিনীর প্রধান জাম্বু নিহত, বিদেশী পিস্তলসহ মোট ৪৪ টি অস্ত্র ও ১,২১৫ রাউন্ড গুলি/কার্তুজ উদ্ধার।

 

১। র‌্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদ্ঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃংখলার সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। র‌্যাবের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, ডাকাত, খুনি, বিপুল পরিমান অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার, মাদক উদ্ধার, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগনের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম এ বৎসর ০১ জানুয়ারি ২০১৭ হতে অদ্য ১৯ নভেম্বর ২০১৭ ইং তারিখ পর্যন্ত সর্বমোট ২৮৫ টি বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রসহ মোট ৪২টি ম্যাগাজিন এবং ৩,৪১৮ রাউন্ড বিভিন্ন ধরনের গুলি/কার্তুজ উদ্ধারের পাশাপাশি ৬৬ লক্ষ ৫৬ হাজার ৭৫৬ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট এর পাশাপাশি ২৩ হাজার ৬২৮ বোতল ফেন্সিডিল, ১,৪৩৮ বোতল বিদেশী মদ ও বিয়ার, ০২ লক্ষ ৯৪ হাজার ৯৩০ লিটার দেশীয় তৈরী মদ, ৬৫৬ কেজি ১৮০ গ্রাম গাঁজা, ৩৬০ গ্রাম হেরোইন এবং ৪০০ গ্রাম আফিম উদ্ধার করেছে।

 

২। গত ইলিশ মৌসুমে নোয়াখালী এবং হাতিয়া এলাকায় বিভিন্ন মাছ ধরার ট্রলারে ডাকাতি সংঘটিত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে আসন্ন ইলিশ মৌসুমকে কেন্দ্র করে যাতে বঙ্গোপসাগর ও উপকেূলীয় এলাকায় জলদস্যুদের অপতৎপরতা বৃদ্ধি না পায় তা প্রতিরোধে র‌্যাব-৭ জলদস্যু প্রবণ এলাকা বাঁশখালী, কুতুবদিয়া, সোনাদিয়া, গহিরা ও সন্দ্বীপের সমুদ্র সংলগ্ন যে সকল স্থলভাগ আছে সে সমস্থ স্থানসমূহে জলদস্যুদের বাসস্থান এবং তাদের সহযোগীদের চিহ্নিত করণের লক্ষ্যে ব্যাপক গোয়েন্দা নজরধারী অব্যাহত রাখে।  এছাড়াও বঙ্গোপসাগর উপকূলীয় এলাকায় নদীর মোহনাগুলোতে জেলেদের মৎস্য আহরণ নির্বিঘœ ও নিশ্চিত করণ এবং অপহরণ প্রতিরোধের লক্ষ্যে দস্যু প্রবণ এলাকায় র‌্যাবের নিরাপত্তা টহল জোরদার করা হয়।

 

৩। এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, একটি সংঘবদ্ধ ডাকাতদল সমুদ্রে ডাকাতি করার উদ্দেশ্যে কক্সবাজার জেলার মহেশখালী থানাধীন সোনাদিয়ান কুতুবজোম এলাকায় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে অবস্থান করছে।  উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে অদ্য ১৯ নভেম্বর ২০১৭ ইং তারিখ ১৪১৫ ঘটিকার সময় উধ্বর্তন কতৃপক্ষকে অবগত করতঃ র‌্যাবের একটি আভিযানিক দল বর্ণিত স্থানে পৌঁছালে র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা র‌্যাবকে লক্ষ করে এলোপাথারিভাবে গুলি বর্ষণ শুরু করে। আত্মরক্ষা ও সরকারী জানমাল রক্ষার্থে র‌্যাবও পাল্টা গুলি বর্ষণ করে। প্রায় ৩০ মিনিট গোলাগুলির এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পিছু হটে পালিয়ে যায়। এ সময় ঘটনাস্থলে একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। তাৎক্ষণিকভাবে আহত ব্যক্তিকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে ঘটনাস্থল তল্লাশী করে সর্বমোট ৪৪ টি অস্ত্র (০১টি ৭.৬৫ মিঃ মিঃ বিদেশী পিস্তল, ২৩ টি ওয়ানশুটার গান, ২০টি এসবিবিএল), ০১টি ম্যাগাজিন, ১,২১৫ রাউন্ড গুলি/কার্তুজ (৫৭ ী .১২ বোর, ০৩ ী . ৩০৩ মিঃ মিঃ, ৩১ ী .২২ মিঃ মিঃ, ০২ ী ৭.৬৫ মিঃ মিঃ পিস্তল এবং ১,১২২ ী ৫.৫ মিঃ মিঃ ) এবং ২৭ রাউন্ড খালি খোসা উদ্ধার করে। এ সময় স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা যায় যে, নিহত ব্যক্তি কক্সবাজারের মহেশখালীর শীর্ষ সন্ত্রাসী/জলদস্যু মোকাররম হোসেন ওরফে জাম্বু (৩৮), পিতা-মৃত এখলাস, গ্রাম- পূর্ব পাড়া সোনাদিয়া, কুতুবজোম, থানা-মহেশখালী, জেলা-কক্সবাজার। নিহত মোকাররম হোসেন ওরফে জাম্বু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের ২০১৭ সালের তালিকাভুক্ত কক্সবাজার জেলার মহেশখালী এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী/কুখ্যাত জলদস্যু এবং জাম্বু বাহিনীর প্রধান। তার বিরুদ্ধ খুন, ধর্ষন, ডাকাতি, অপহরণ এবং চাঁদাবাজিসহ অসংখ্য মামলা রয়েছে বলে জানা যায়। উল্লে¬খ্য যে, উক্ত ঘটনায় ০৩ জন র‌্যাব সদস্য আহত হলে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়।

 

৪। নিহত ব্যক্তি, উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও অন্যান্য আলামত পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *