নোয়াখালী প্রতিবেদক: নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার অধিকাংশ গ্রাম গুলো প্রতিনিয়ত মাদক, পতিতাবৃত্তি, ভূমিদখল ও নানা অপরাধের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। তাদের মধ্যে এই উপজেলায় রাস্তারমাথা স্পটটি অনেক আগ থেকেই সুপ্রাচীন এলাকা। রাস্তারমাথা সড়কটিই হল সেনবাগের মূল প্রাণ কেন্দ্র। উপজেলার কোথাও যেতে হলে এই সড়কটি দিয়েই মানুষের একমাত্র চলাচলের ¯স্থান। এটি উপজেলার ৬নং কাবিলপুর ইউনিয়নের অবস্থিত। এই ইউনিয়নে রয়েছে বাংলাদেশের বিভিন্ন উচ্চ পদস্থ¯ সরকারি বেসরকারি ও সংসদ সদস্য, বিশ্লিষ্ট রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব গন্যমান্য ব্যাক্তিদের মাতৃআশ্রায়স্থল।
এছাড়াও এখানে রয়েছে অনেকগুলা ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ। এ ইউনিয়নটি সেনবাগ পৌরসভার পাশ্ববর্তী হওয়ায় এক পর্যায়ে ভিআইপি এলাকায়ই বলা হয়ে থাকে। এখানে অনেক গুণীজন, রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ ও সরকারি অনেক বড় কর্মকর্তা দেশের বিভিন্ন ¯স্থানে গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত আছেন বলে এ এলাকার বেশ সুনাম ও ঐতিহ্য রয়েছে। কি এমন একটি সুখ্যাতি অঞ্চলের সকল সুনাম ধংস করে দিচ্ছে অবাধ মাদক ব্যবসা, পতিতাবৃত্তি, ভূমিদস্যুতা ও চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ড। এসব অপরাধ ও এখানকার কিছু ব্যক্তির কাছে যেনো পান্তাভাত। এখানে জনগুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বড় বড় ব্যবসায় প্রতিষ্টান অবস্থানের ফলে প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন উপজেলা ও জেলা শহরের মানুষ এখানে আসা-যাওয়া করেন।
এছাড়াও এই ইউনিয়নে বিভিন্ন প্রতিষ্টানের কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী, শ্রমিকগণও এ এলাকায় বসবাসের ফলে এখানে নতুন নতুন মানুষের পদচারণা প্রায়ই লেগেই থাকে। আর এ সুযােগেই এক শ্রেণী মাদক, চাঁদাবাজি, ভূমি দখল, পতিতাবৃত্তিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ড রমরমাভাব চালিয়ে যাচ্ছে। অনেকেই রাস্তারমাথা নামক এ অঞ্চলটিকে অপরাধের স্বর্গরাজ্যও বলে থাকেন। আর এখানে মাদক নামের নেশাদ্রব্য গুলো হাতের নাগাল সহজেই পাওয়া যায় বলে এর পরিধি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাদকের সাথে সংশ্লিষ্ট অপরাধগুলোও দিন দিন বিস্তার লাভ করছে। নেশাদ্রব্য বিক্রি ও সেবন আসক্ত হচ্ছে এখানকার ১৪ থেকে ৪০ বছর পর্যন্ত শিশু, কিশাের, তরুণ ও যুবসমাজ। ¯স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া ছাত্ররাও এ মরণ নেশায় আসক্ত হচ্ছে। ইয়াবাসহ নানা নেশাদ্রব্য ¯স্থানীয় বিপথগামী বেশ ক’জন প্রভাবশালী কিছু যুবককে দিয়ে সুকৌশলে বিক্রি করছে। এখানকার একাধিক মাদক ব্যবসায়ী পুলিশের হাত আটক হলেও কিছুদিন পর তারা জামিনে মুক্তি পেয়ে পরে আবার অনেকটা প্রকাশ্য মাদক বিক্রি শুরু কর। তাদের নিজস্ব একটি বাহিনী রয়েছে এই নেশাদ্রব্য বিক্রির জন্য। মাদকসেবীরা মাদকের টাকা যোগানাের জন্য নানারকম অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছে। ফলে এখানকার পাশ্ববর্তী গ্রামগুলোতে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই দিন দিন বেড়েই চলেছে। মাদক ব্যবসায় জড়িত কতিপয় যুবক সমাজের কিছু নামিদামী ও প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তির আত্মীয় বলে তারা মাদকসহ নানা ধরনের অপকর্ম লিপ্ত হলেও তাদেরকে কেউ কিছু বলতে সাহস পায় না। সচেতন অভিভাবকগণ নিজেদের সন্তানদের নিয়ে মারাত্মক দুশ্চিন্তার মধ্যে দিনযাপন করছেন। রাস্তামাথার পাশ্ববর্তি এলাকার বিপথগামী মুখােশধারী কিছু লােক নিজেদের ধরা ছােঁয়ার বাইরে রেখে নিরাপদে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে ।
সম্প্রতি এইসব মাদক ব্যবসায়ী অনককে পুলিশ হাতে নাতে মাদকসহ গ্রেফতার করলেও দেখা যায় যে তাদেরকে থানায় পৌছানাের আগে একটি প্রভাবশালী চক্র থানায় গিয়ে বসে থাকে ওই ব্যবসায়ীকে বের করে ফেলার জন্য। আসল মূলত তাদেরই সম্পূতার কারনেই এই ব্যবসাটি প্রসার ঘটেছে।
যার ফলে এখানকার পাশ্ববর্তী গ্রামঅঞ্চল গুলােতে অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধ নেই। আরও কয়েকটি ¯স্থানে ভ্রাম্যমাণ বা ¯স্থায়ীভাবে এই অসামাজিক কার্যকলাপ চলছে অত্যন্ত নিবিড়ভাবে। বিষয়টি নিয়ে এলাকার প্রভাবশালীরা কেন মাথা ঘামাচ্ছেন না এমন প্রশ্ন জবাব মিললো ক’জন সাধারণ মানুষর কাছ থেকে। তারা জানান, এখানকার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এ সকল অসামাজিক কার্যকলাপ ও মাদক ব্যবসা থেকে সুবিধা ভােগ করে থাকেন। যার ফলে তারা এসব দেখেও না দেখার ভান করে থাকেন। এদিকে এখানকার পাশ্ববর্তী গ্রামগুলােতে কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম অনেকটা নেই বললেই চলে। এছাড়াও এখান কমিউনিটি পুলিশিংয়ের কােনো মহল্লায় কমিটি এবং রাতে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের কোনো টহল ব্যবস্থা নেই। নাম মাত্র কমিউনিটি পুলিশিং থাকলেও নেই কােনো তৎপরতা। ওয়ার্ডগুলো ঘুর দেখা যায় অনেককে ছিনেও না তাদেরকে।
এমতাবস্থায় এখানকার স্থানীয় এলাকাবাসী এইসব মাদক ব্যবসায়ীদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তিদাবি করেছে।
সম্পাদনা/মো: শামীম;