ভেঙে পড়া সেতু নির্মাণ শুরু হয়নি ১৬ মাসেও – বাংলারদর্পন

 

নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৩ নভেম্বর ২০১৭।

ঝিনাইদহের সদর উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া-টিকারী সড়কের সানচাই নদের ওপর টিকারী সেতুটির মাঝখানের অংশ ১৬ মাস আগে ভেঙে পড়ে। পরে বাকি অংশও ভেঙে ফেলা হয়। ওপরের স্লাব নতুন করে নির্মাণ করা হবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত এই কাজ শুরুই হয়নি। ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় এলাকাবাসী চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার টিকারী বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে সানচাই নদ। বাজারের কাছেই নদের ওপর ১৯৯৪ সালে এলজিইডি ওই ঢালাই সেতু নির্মাণ করে। ওই সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করত জিতড়, মিয়াকুন্ডু, কুশোবাড়িয়া, ধনঞ্জয়পুর, মুক্তারামপুর, নারিকেলবাড়িয়া, টিকারী, দহখোলা, দীঘিরপাড়, লক্ষ্মীপুর, মালঞ্চি, বেরুইলসহ পাশের বেশ কিছু গ্রামের মানুষ। তা ছাড়া সড়কটি জেলা শহর থেকে নারিকেলবাড়িয়া, টিকারী হয়ে মাগুরা শহরে চলে গেছে। যে কারণে ভারী যানবাহনও চলাচল করত এই সেতুর ওপর দিয়ে। কিন্তু গত বছরের ৬ জুন সেতুটির মাঝখানের বড় একটি অংশ হঠাৎ ধসে পড়ে। এরপর এলজিইডির পক্ষ থেকে টপ স্লাবটি ভেঙে ফেলা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, সেতুটি ধসে পড়ার আগে তাঁরা এলজিইডি ঝিনাইদহ কার্যালয়ে খবর দিয়েছিলেন। খবর পেয়ে সেতুটির ওপর দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল না করার জন্য একটি সাইনবোর্ড দেওয়া হয়। এরপর ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়। ভ্যান, নছিমন, করিমন, বাইসাইকেলসহ হালকা যান চলাচল করত। মাঝেমধ্যে দু-একটি মোটরগাড়ি চলাচল করত।

 

এ অবস্থায় সেতুটির মাঝখানের অংশ ভেঙে নদীতে পড়ে যায়। এতে এলাকাবাসী পড়ে মহাবিপদে। তাদের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ে। এর প্রায় দুই সপ্তাহ পরে স্থানীয় বাসিন্দারা ভাঙা অংশে বাঁশের সাঁকো তৈরি করেন। প্রায় চার মাস আগে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ টপ স্লাবের পুরো অংশ ভেঙে ফেলে। এরপর টিকারী গ্রামের সুবোধ কুমার ওই বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেন। এতে লোকজন পারাপার হতে পারে। কিন্তু বাজারে ধান ও চাল আনা-নেওয়া করতে সমস্যা হয়। তা ছাড়া পাকা বাড়ি নির্মাণের জন্য ইট, রড, সিমেন্টসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী আনাও প্রায় বন্ধ রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, লোকজন বাঁশের সাঁকোর ওপর দিয়ে নদ পার হচ্ছে। জনপ্রতি তিন টাকা আর ছোট ছোট যানবাহনপ্রতি ১০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। কিন্তু ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষ কোনো মালামাল পারাপার করতে পারছে না। নৌকায় করে মালামাল এপার থেকে ওপারে নিতে হচ্ছে।

জানতে চাইলে সুবোধ কুমার বলেন, বাঁশের এই সাঁকো তৈরি না করলে জনসাধারণের ভোগান্তির আর অন্ত থাকত না। এ কারণে তিনি স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় সাঁকোটি নির্মাণ করেন।

এলজিইডির ঝিনাইদহ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল মালেক বলেন, সেতুটির টপ স্লাব নতুন করে নির্মাণ করা হবে। এ জন্য ইতিমধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। কিন্তু বৃষ্টির কারণে কাজ করা যাচ্ছে না। তিনি আশা করছেন, শিগগির নির্মাণকাজ শুরু হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *