ঘুষ নেওয়ার সময় দুদকের ফাঁদে ওয়াকফের সহকারী পরিচালক মোতাহার হোসেন

 

নিজস্ব প্রতিবেদক | ০৫ নভেম্বর ২০১৭।

ঘুষ নেওয়ার সময় ওয়াকফ প্রশাসনের সহকারী পরিচালক মোতাহার হোসেন খানকে হাতে-নাতে গ্রেপ্তার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি দল। আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর ইস্কাটনে ওয়াকফ প্রশাসনের কার্যালয় থেকে মোতাহারকে গ্রেপ্তার করা হয়। দুদকের হটলাইন (১০৬) নম্বরে সাধারণ একজন নাগরিকের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ফাঁদ পেতে ওই কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে দুদক সূত্রগুলো জানিয়েছে।

দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রনব কুমার ভট্টাচার্য বলেন, আজ বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ঘুষের ৫০ হাজার টাকাসহ মোতাহারকে গ্রেপ্তার করে দুদকের একটি বিশেষ দয়। ওই দলের নেতৃত্বে ছিলেন দুদকের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক নাসিম আনোয়ার। এছাড়া তাঁর পকেট ও আলমারি থেকে আরো ৭৯ হাজার টাকা পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের (ঢাকা-১) উপ সহকারী পরিচালক নাজিম উদ্দীন বাদী হয়ে রমনা থানায় একটি মামলা করেছেন।

দুদক সূত্র জানায়, কেরানীগঞ্জের বাঘৈর জামে মসজিদের মোতয়াল্লি কমিটির সদস্য ফারুক হোসেন দুদকের হটলাইন নম্বরে (১০৬) ফোন করে অভিযোগ করেন যে, ওয়াকফ প্রশাসনের সহকারী পরিচালক মোতাহার হোসেন তাঁর কাছে একটি কাজের জন্য পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেছেন। এরপর দুদক কর্মকর্তারা তাঁর সঙ্গে কথা বলে ফাঁদ পাতেন। সে অনুযায়ী গতকাল অভিযোগকারী ফারুক হোসেন ওই কর্মকর্তাকে ঘুষ দিতে ওই কার্যালয়ে যান। দুদকের বিশেষ দলের সদস্যরাও তাঁকে অনুসরণ করে ওয়াকফ কার্যালয়ের চারদিকে ওৎ পেতে থাকেন। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে নিজের কার্যালয়ে বসে মোতাহার হোসেন যখন ঘুষ নিচ্ছিলেন তখন দুদকের লোকজন তাঁকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। এছাড়া তাঁর পকেট ও আলমারি থেকে পাওয়া ৭৯ হাজার টাকার বিষয়েও কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি মোতাহার।

দুদক সূত্র জানায়, কেরাণীগঞ্জের বাঘৈর জামে মসজিদের নামে বাঘৈর মৌজার বিভিন্ন দাগে মোট সোয়া এক একর ওয়াকফকৃত সম্পত্তি রয়েছে। মসজিদের উন্নয়নের জন্য তাঁরা মসজিদের নামে ওয়াকফ জমি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন। নিয়ম অনুযায়ী এর জন্য সংশ্লিষ্ট ওয়াকফ প্রশাসকের অনুমতি নিতে হয়। সেজন্য বাঘৈর মসজিদের ওয়াকফ সম্মত্তির মোতয়াল্লি (হেফাজতকারী) আবুল বাশার চার বছর আগে ২০১৩ সালে ঢাকার ওয়াকফ প্রশাসক বরাবর জমি বিক্রির অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছিলেন। পরবর্তীতে ফারুক হোসেন নামে মসজিদের মোতয়াল্লি কমিটির আরেক সদস্যকে বিষয়টি পরিচালনার দায়িত্ব ও ক্ষমতা দেওয়া হয়। সেই ফারুক হোসেনের কাছেই জমি বিক্রির অনুমতি দিতে পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ চেয়েছিলেন সহকারী পরিচালক মোতাহার হোসেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *