রাণীনগরে দেশী মাছের প্রভাবে ব্যপক ক্ষতিগ্রস্থ্য মৎস্য চাষীরা

 

 

এ বাশার(চঞ্চল) : নওগাঁর রাণীনগরের প্রতিটি বাজারে ছোট জাতের দেশী মাছের ব্যপক প্রভাব দেখা দিয়েছে। প্রতিটি বাজারেই অল্প পরিমান দামে এসব দেশী মাছ অহ রহ বিক্রি হওয়ায় এবং পুকুরের চাষকৃত মাছের দাম একেবারেই কমে যাওয়ায় চরম বিপাকে পরেছেন মৎস্য চাষীরা । ফলে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পরেছেন তারা। সম্প্রতি নওগাঁর রাণীনগরে ভয়াবহ বন্যায় এলাকার খাল বিল,মাঠ-ঘাট প্লাবিত হয়ে যায়। এসময় প্রাকৃতিক উৎস থেকে জন্মানো ট্যাংরা,গুচি,পাপদা,পুটিসহ নান প্রজাতীর দেশী মাছে ছেয়ে যায় খাল বিল থেকে শুরু করে উমুক্ত জলাশয়গুলো । এছাড়া এলাকার পুকুর গুলো ডুবে যাওয়ায় লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ ভেসে যায়। খাল-বিল ও মাঠ থেকে পানি কমার সাথে সাথে জেলেরা নিষিদ্ধ সুঁতিজাল,কারেন্ট জাল,ভাদায় জালসহ মাছ ধরার নানা রকম উপকরণ দিয়ে দেশী জাতের ছোট/বড় মাছ ধরছেন। প্রতিদিনই বাজারে মনকে মন মাছ আমদানী হচ্ছে। এর আগে ট্যাংরা,গুচি,ইচাসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশী মাছ যেখানে প্রতি কেজি চারশত থেকে ছয়শত টাকা কেজি দরে বিক্রি হতো সে মাছগুলো বর্তমানে একশত থেকে সোয়াশত টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর এসব ছোট জাতের মাছগুলো সারা বছর না মিললেও বর্তমানে প্রচুর পরিমানে আমদানী হওয়ায় চাষকৃত মাছ থেকে মূখ ফিরিয়ে নেয়ার কারনে চাষকৃত

পাংগাস,রুই,কাতলা,মৃগেল,সিলভারসহ বিভিন্ন প্রজাতীর মাছের দাম একেবারেই নিন্মে চলে এসেছে । ফলে চাষের মাছ নিয়ে চরম বিপাকে পরেছেন চাষীরা। তারা বলছেন,একদিকে মাছের খাদ্যের চরা দাম,অন্য দিকে

বাজারে মাছের নিন্ম মূল্যের কারনে ব্যাপক ক্ষতির মূখে

পরেছেন মৎস্য চাষীরা। উপজেলার আবাদপুকুর বাজার এলাকার বিশিষ্ট মৎস্যচাষী ও ইউপি মেম্বার হেলাল উদ্দীন হেলু মন্ডল জানান,তিনি ১১টি পুকুর মিলে প্রায় দুই শতাধীক বিঘা জলাশয় চাষ করেন। প্রায় সবগুলো পুকুরেই পাংগাসসহ বিভিন্ন প্রজাতীর মাছ রয়েছে

। বর্তমানে চাষকৃত মাছের বাজার মূল্য নিন্ম মূখী হওয়ায় মাছ নিয়ে চরম বিপাকে পরেছেন তিনি। তিনি আরো জানান,প্রতি কেজি পাংগাস মাছ উৎপাদন করতে প্রায় ৬৫ থেকে ৭০ টাকা খরচ হয়। কিন্তু বর্তমানে বাজারে এই মাছ গুলো মাত্র ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে । এই দামে মাছ বিক্রি করলে তার কয়েক লক্ষ টাকা লোকসান হবে জন্য মাছ বিক্রি করতে পারছেন না।

মিরাট ধনপাড়া গ্রামের মৎস্যচাষী ইয়ারুল জানান, তিনি প্রায় শতাধীক বিঘা জলাশয় পুকুরে মাছ চাষ করছেন। বর্তমানে মাছের বাজারে ধ্বস দেখে তিনি মাছ গুলো বিক্রি করতে পারছেন না। উপজেলার সর্ব বৃহৎ মাছ বাজারের মৎস্য আড়ৎদার গৌতুম কুমার হালদার জানান,বর্তমানে বাজারে ছোট জাতের দেশী মাছের আমদানীই বেশি। আর দেশী মাছের আমদানীতে চাষের মাছের দাম অনেক কমে যাওয়ায় চাষীরা বাজারে তেমন মাছ দিচ্ছেননা। দেশী মাছের প্রভাবের কারনে চাষের মাছগুলো প্রতি কেজি প্রায় ২৫ থেকে ৩০ টাকা কমে গেছে । এই দামে মাছ বিক্রি করলে চাষীদের ব্যপক লোকসান হবে বলে জানান তিনি। এব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা মৎস্য অফিসের (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা কামরুজ্জামান জানান, প্রতি বছরের তুলনায় এবার

অনেক বেশি ছোট জাতের দেশী মাছ জন্মেছে। ফলে বাজারেও খুব বেশি আমদানী হচ্ছে । এতে চাষকৃত মাছের দাম কমে গেছে । তবে আগামী এক/দেড় মাস পর খাল বিল থেকে দেশী মাছ একে বারেই কমে গেলে চাষের মাছের বাজার আবারো চাঙ্গা হয়ে উঠবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *