নিজস্ব প্রতিবেদক :
ইলিশ শিকার নিষেধাজ্ঞা শুরুর সাত দিনেও ফেনীর জেলেরা চাল পাননি। ফেনীর উপকূলীয় উপজেলা সোনাগাজীতে দেড় হাজার জেলে ডাঙায় বসে অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। মা ইলিশ রক্ষায় নিষেধাজ্ঞার কারণে তারা মাছ ধরতে পারছেন না। প্রতিজনে বরাদ্দের ২০ কেজি চালের ১ ছটাক চালও তাদের ভাগ্যে এখনও জোটেনি।
সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিনহাজুর রহমান বলেন, ‘বরাদ্দ চাল শিগগিরই পাওয়া যাবে। চাল আসার পর জেলেদের মধ্যে চাল বিতরণ করা হবে।’ তিনি জানান, উপজেলায় এক হাজার আট শত জেলে রয়েছে। এর মধ্যে এক হাজার ২৬৮ জন জেলে তালিকাভুক্তির আওতায় এসেছে। বাদ পড়া জেলেদেরকে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা চলছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ব্যস্ততায় এখনও বরাদ্দ আসেনি।’
জেলা প্রশাসক মনোজ কুমার রায় বলেন, ‘মৌসুম শুরুর দুই সপ্তাহ আগেই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বরাবর চিঠি লিখেছি। আশা করি দ্রুত বরাদ্দ পাওয়া যাবে।’
চরখোন্দকার জেলে সমিতির সভাপতি প্রিয় লাল জল দাস বলেন, ‘মাছ ধরতে না পারায় জেলেরা বেকার অবস্থায় আছেন। ফেনী নদীতে নামতে পারছেন না, বঙ্গোপসাগরেও যেতে পারছেন না। নিষেধাজ্ঞার সময়ে বিভিন্ন এনজিওগুলো জেলেদের কাছ থেকে যেন ঋণের কিস্তি না গ্রহণ করে সে ব্যাপারে স্থানীয় জেলেরা জেলা প্রশাসকের কাছে দাবি জানালেও তার বাস্তবায়নও হয়নি।’
চরচান্দিয়া এলাকার জেলে মানিক লাল দাস জানান, তিনি কার্ড না পাওয়ায় এবার চাল সহায়তা পাচ্ছেন না। এ অবস্থায় কীভাবে সংসার চালাবেন, জানা নেই।
চর সোনাপুরের জেলে স্বপন দাস ও মরণ জলদাস বলেন, ‘২২ দিনের অবরোধ সত্ত্বেও বিকল্প কোনও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়নি। চাল সহায়তাও দেওয়া হচ্ছে না।’
চরখোয়াজের স্বপন জলদাস বলেন, ‘অনেক দিন মাছ ধরতে পারেননি তিনি। সংসারও চলছে না। সরকার তাদের সহায়তা দেবে বললেও এখন পর্যন্ত কিছুই পাননি।‘জেলেরা আশায় ছিলেন চাল পাবেন। তবে নিষেধাজ্ঞা সাত দিনে গরিব সব মানুষের কাছে চাল পৌঁছায়নি।’
জেলা মৎস্য অধিদফতরের উদ্যোগে গত ২৭ সেপ্টেম্বর সোনাগাজীর বড় ফেনী নদীর উপকূল চরখোন্দকারে মা ইলিশ সংরক্ষণ উদ্বুদ্ধকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় ইলিশের প্রজনন বাড়াতে ফেনীতে ১ অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত সব ধরনের ইলিশ ধরা, বিক্রি, মজুদ ও পরিবহন নিষেধ করেন জেলা প্রশাসক মনোজ কুমার রায়।
এ সময়ের মধ্যে জেলেদের মাঝে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে ২০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হবে বলে জানানো হয়।