ফেনী প্রতিনিধি :
ফেনীতে হাসপাতাল বেডে যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে আমেনা আক্তার নামে ১০ বছরের এক শিশু গৃহকর্মী। নিষ্ঠুর নির্যাতনে ঝলসে গেছে শিশুটির শরীরের পিছনের অংশ। নির্মম নির্যাতনের পর নির্যাতনকারী গৃহকর্তী শিশুটিকে ঘর থেকে তাড়িয়ে দিয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে।
নির্যাতিত শিশু আমেনা আক্তার জানায়, ফেনীর পরশুরাম উপজেলার সীমান্তবর্তী বিলোনিয়া এলাকার জনৈক্য আবুল কালেম ও শেফালি বেগমের শিশু কন্যা আমেনা আক্তার। কয়েক বছর আগে আমেনার বাবা-মা এর মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। পরবর্তীতে টুনি নামে এক নিকটআট তীয় শিশু আমেনাকে ফেনী শহরের একাডেমির এলাকার নুরিয়া মসজিদের পেছনে আফরোজা ম্যানসনে কাজে দেয়। কিছুদিন পর শিশু আমেনাকে ওই বাড়ির গৃহকর্তী ঢাকায় তার ননদের বাসায় পাঠিয়ে দেয়। ওই বাসায় নির্মম নির্যাতন চালানো হয় শিশু আমেনার উপর। অমানুষিক কাজের পাশাপশি শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়। এক পর্যায়ে শিশুটির শরীরের পিছনের অংশে চুলার আগুন দিয়ে ঝলসে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে অসুস্থ্য আমেনাকে ঘরে রেখে চিকিৎসা দিয়ে ক্ষত কিছুটা সেরে গেলে ঢাকা থেকে ফেনীর একাডেমীর আফরোজা ম্যানশানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিছুদিন ওই বাসায় থাকার পর বাড়ির গৃহকর্তী শিশু আমেনাকে রাতের অন্ধকারে ঘর থেকে বের করে দেয়। আমেনা কিছুটা সময় ফেনী রেলওয়ে স্টেশনে অবস্থান করে।
নির্যাতিতা শিশু আমেনাকে পথ থেকে উদ্ধারকারী শহরের তাকিয়া রোডের বাসিন্ধা মিজানুর রহমান জানান, শনিবার মধ্যরাতে তিনি বাসায় ফেরার সময় তাকিয়া রোড এলাকায় শিশু আমেনাকে দেখতে পায়। একপর্যায়ে শিশুটিকে তিনি তাঁর ঘরে নিয়ে যায়। পরে তার শারীরিক অবস্থা দেখে রোববার সকালে শিশু আমেনাকে ফেনী জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়।
ফেনী জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) অসীম কুমার সাহা জানান রোববার দুপুর থেকে হাসপাতালে শিশুটির সব রকমের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। ক্ষতস্থানটি তিন/চার মাস পূর্বের হওয়ায় শিশুটির শারীরিক অবস্থা নাজুক। তার ক্ষতস্থানে ইনফেশন হয়ে গেছে। মানুষিক নির্যাতনের শিকার শিশুটি কিছুটা অসংলগ্ন আচারণ করছে। শিশুটির স্বজনের খোঁজ না পাওয়া গেলেও তারা চিকিৎসায় কোন রকম গাফিলতি করবে না বলে জানিয়েছে।
ফেনী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শহিদুল ইসলাম জানান, নির্যাতিত শিশুটির খবর পেয়ে পুলিশ তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী শহরের একাডেমী এলাকার আফরোজা ম্যানশানে অভিযান চালিয়েছে। তবে পুলিশ যাওয়ার আগেই ওই ঘরের গৃহকর্তী তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে যায়। এঘটনায় নির্যাতিত পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ।