পানি কমে যাওয়ার পর ক্ষয়ক্ষতির চিত্র ফুটে উঠছে

ফুলগাজীর দেরপাড়া পাকা সড়কে ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন ছবি- বাংলারদর্পণ

ফেনী :
ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র ফুটে উঠছে । বন্যার পানি কিছুটা নেমে গেলেও দুর্ভোগ এখনো কমেনি । রাস্তা ভেঙে পড়ায় চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে । কিছু এলাকা এখনো বন্যাকবলিত । বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন নিম্ন আয়ের হতদরিদ্র, দিনমজুর ও প্রান্তিক কৃষকেরা ।

পানি উন্নয়ন বোর্ডও স্থানীয় সূত্র জানায় , গত সোমবার ভারতের ত্রিপুরা থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণে মুহুরী নদীর পানি বেড়ে যায় । এতে ফুলগাজী উপজেলা সদর ইউনিয়নের দৌলতপুর, দেড়পাড়া ও দরবারপুর ইউনিয়নের বরইয়া, পরশুরাম উপজেলার অলকা এলাকাসহ মোট চারটি স্থানে বাঁধ ভেঙে ১২ টি গ্রাম প্লাবিত হয় ।

বর্তমানে পানি বিপৎসীমার নিচে থাকলেও নদীগুলোর বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে এখনো পানি ঢুকছে । সব এলাকার নিম্নাঞ্চলগুলো এখনো পানিতে তলিয়ে রয়েছে ।

ইতিমধ্যে বন্যায় ফলে ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরামে কমেছে পানি পাকা রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় যাতায়াত করা যাচ্ছে না কিছু এলাকার ঘরবাড়ি এখনো পানির নিচে পানি নামার পর দ্রুত রাস্তা সংস্কারের আশ্বাস ঘরবাড়ি , ফসলি জমিসহ অনেক গ্রামীণ সড়ক নষ্ট হয়ে গেছে । পানিতে ভেসে গেছে শত শত পুকুর ও মাছের ঘের ।

ফুলগাজীর উত্তর দৌলতপুর সেকেন্দার মাষ্টারের বাড়ির পাশে ভাঙ্গনের স্থানে দেখা যায় , রাস্তার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ার কারণে উত্তর দৌলতপুর , দক্ষিণ দৌলতপুর সংযোগ সড়কে বড় ধরনের গর্তের সৃষ্টি হয়েছে । পাকা রাস্তা ভেঙে চলাচলে দুর্ভোগে পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা । গাছ ফেলে ভাঙা অংশ পার হচ্ছেন তাঁরা । এ ছাড়া দৌলতপুরবাসীর চলাচলের জন্য একমাত্র সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ । তা ছাড়া ওই এলাকায় এখনো অনেক ঘরবাড়ি পানির নিচে রয়েছে ।

দৌলতপুর গ্রামের কৃষক মো . ফিরোজ( ৩৩ ) বলেন , এলাকায় ৭০ থেকে ৮০ টি পরিবারের ঘরবাড়ি এখনো পানির নিচে রয়েছে । শুধু পাকা সড়ক দিয়ে উত্তর – দক্ষিণ দৌলতপুরবাসী চলাচল করতে পারছে । কিন্তু স্রোতে সড়কে বড় ধরনের গর্তের সৃষ্টি হয়েছে । এতে প্রয়োজন থাকলেও মানুষ এদিক ওদিক চলাফেরা করতে পারছে না ।

ফুলগাজী উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ আসিফ মাহমুদ বলেন , নদীভাঙনের ফলে অনেকগুলো রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে । ইতিমধ্যে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে , আমরা পর্যবেক্ষণ করছি । ভাঙনকবলিত এলাকায় চলাচলের জন্য রাস্তাঘাট সংস্কার করতে হবে । পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সংস্কারের ব্যবস্থা করব ।

ফুলগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো . আবদুল আলিম বলেন, আকস্মিক বন্যায় ফুলগাজীতে রাস্তাঘাট, মাছের ঘের, ফসলের জমি, মানুষের বাড়িঘর নষ্ট হয়েছে ।

ভাঙনকবলিত এলাকার অনেকগুলো পাকা রাস্তা স্রোতের কারণে ভেঙে রয়েছে । পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে এগুলো দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ নেব । এদিকে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ করা হলেও অনেক স্থানে ত্রাণের সংকটে রয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা ।

জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ উল হাসান বলেন , ভুক্তভোগীদের ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে । ক্ষতিগ্রস্ত এবং ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ।

পাউবোর প্রকৌশলী জহির উদ্দিন বলেন , ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পানি ও স্থানীয়ভাবে ভারী বৃষ্টি হলে পানি নামতে এই অবস্থার সৃষ্টি হয় । ইতিমধ্যে ফুলগাজীর দরবারপুর ইউনিয়নের বরইয়া বাঁধ মেরামত করা হয়েছে । এ ছাড়া সবকটি বাঁধ মেরামতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *