মিরসরাইয়ে নির্বাচন অফিস ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র নেই বললেও প্রার্থীদের মাঝে শঙ্কা

মিরসরাই প্রতিনিধি :
মিরসরাইয়ে দ্বিতীয় ধাপের তফসীল অনুযায়ী ১৬ টি ইউনিয়ন পরিষদের
নির্বাচন আজ বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হবে। এখানকার ইউনিয়নগুলোতে
চেয়ারম্যান পদে ৯ জন, ৪৮৯ জন সাধারণ ও ১১৮ জন সংরক্ষিত সদস্য
প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।

মিরসরাই উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফারুক হোছাইনের দাবি
এখানকার কোন ইউনিয়নে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র নেই। সবগুলো কেন্দ্রে
সুষ্ঠ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
উপজেলার ১২ নম্বর খৈয়াছড়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের
বিদ্রোহী প্রার্থী জাহেদ ইকবাল চৌধুরী জানান, আমার এলাকার
নৌকা পদপ্রার্থী বহিরাগত ভাড়াটে লোকজন আনার প্ল্যান করছে। তারা
কেন্দ্রে ভোটারদের বাধা দিতে পারে। আমার ঘোড়া প্রতীকের এজেন্টদের
প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। এ জন্য আমি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে
লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।

৯ নম্বর সদর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য পদপ্রার্থী জসিম উদ্দিন
গত সোমবার (৯ নভেম্বর) কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ এবং তার নির্বাচনী
এলাকায় সহিংসতার আশঙ্কা করে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এছাড়া উপজেলার ১৬ ইউনিয়নের ছয়জন রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে
এ পর্যন্ত শ’খানেক অভিযোগ জমা পড়েছে প্রার্থীদের তরফ থেকে।
এদিকে মিরসরাইয়ের খৈয়াছড়া এবং ৯ নম্বর মিরসরাই ইউনিয়নে
মনোনয়নপত্র জমাদানের সময় থেকে একাধিক সহিংসতার ঘটনা
ঘটেছে। কোথাও কোথাও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অফিস ও পরিবারের
সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এখান এসব এলাকায় প্রার্থীরা
সুষ্ঠ নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন।

এদিকে উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ
মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এবং ৬ জন সংরক্ষিত ও ১৩ জন
সাধারণ সদস্য ইতোমধ্যে একক প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হয়ে
গেছেন। এখানকার ৩টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে এবং সবগুলো
ইউনিয়নে সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্য পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এখানকার ইউনিয়নগুলোতে চেয়ারম্যান পদে ৯ জন, ৪৮৯ জন সাধারণ ও ১১৮
জন সংরক্ষিত সদস্য প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।

৯ নং মিরসরাই সদর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দুই
বিদ্রোহী প্রার্থী সাইফুল্লাহ (ঘোড়া প্রতীক), খায়রুল বাশার
ফারুক (আনারস প্রতীক) আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শামছুল
আলম (নৌকা প্রতীক) কে সমর্থন দিয়ে সরে গেছেন। অন্য স্বতন্ত্র
প্রার্থী আজম খানকে (চশমা প্রতীক) প্রচার প্রচারণায় দেখা যায়নি।
১২ নং খইয়াছড়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত মাহফুজুল হক
জুনু (নৌকা প্রতীক) ও বিদ্রোহী প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান
জাহেদ ইকবাল চৌধুরীর (ঘোড়া প্রতীক) সাথে প্রতিদ্বন্দ্বীতা হবে।

এই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন জাতীয় পার্টি মনোনীত নুর
নবী (লাঙ্গল প্রতীক)। তবে নুর নবীকে গণসংযোগ করতেও দেখা যায়নি।
ইউনিয়নটিতে মূল প্রতিদ্বন্ধিতা হবে নৌকা ও ঘোড়া প্রতীকের
প্রার্থীর মধ্যে।
৬ নং ইছাখালী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে বর্তমান চেয়ারম্যান ও
আওয়ামী লীগ মনোনীত নুরুল মোস্তফা (নৌকা প্রতীক) ও বিদ্রোহী
প্রার্থী মোস্তফা ভূঁইয়ার (আনারস প্রতীক) সাথে প্রতিদ্বন্দ্বীতা
হবে।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা ফারুক
হোছাইন জানান, নির্বাচনে অস্থায়ী ৯ টি কেন্দ্রসহ মোট ভোট
কেন্দ্র ১৪৮ টি। ১৬ টি ইউনিয়নে কোন কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ
হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি। ৯ নং মিরসরাই সদর ইউনিয়নে ইভিএমে ও
বাকী ১৫ টি ইউনিয়নে ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

নির্বাচনে ১৪৮ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, ৯’শ জন সহকারি
প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, ১ হাজার ৮’শ জন পোলিং অফিসার দায়িত্ব
পালন করবেন। এছাড়া ১ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৫ জন নির্বাহী
ম্যাজিস্ট্রেট, ৩ প্লাটুন বিজিবি, প্রতি কেন্দ্রে ৫-৭ জন পুলিশ, ১৮-

২০ জন আনসার সদস্য নির্বাচনী কেন্দ্রে নিরাপত্তার দায়িত্বে
নিয়োজিত থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *