নোয়াখালী ম্যাট্স’র প্রশাসনিক ভবনে তালা, সংঘর্ষে আহত-৩

নোয়াখালী প্রতিনিধি :
স্টাফ সিন্ডিকেট মুক্ত ক্যাম্পাস, পরীক্ষায় স্টাফ গার্ড বাতিল, তিন শিক্ষকের বহিস্কার ও ছাত্রী হোস্টেলে নারী সুপার দেওয়ার দাবীসহ ৮ দফা দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান ধর্মঘট করেছে নোয়াখালী মেডিকেল এ্যাসিস্টেন্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাট্স) শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসনিক ভবনের মূলফটকে তালা দেয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় ৩ শিক্ষার্থী আহত হয় এবং ক্যাম্পাস ভাংচুর করে।

মঙ্গলবার ( ৯নভেম্বর) সকাল থেকে ক্লাস বর্জন করে ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা। পরে বেলা ১১টার দিকে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা ও পরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে সাঈদ সৈকতকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকী আহত দুজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, দেশের কোথাও ম্যাট্স’র হলগুলোর দায়িত্বে স্টাফ থাকে না, হলের দায়িত্বে থাকেন শিক্ষক। অথচ নোয়াখালী ম্যাট্স-এ ছাত্রী হলে পুরুষ স্টাফ ও ছাত্র হোস্টেলেও স্টাফ দায়িত্বে রয়েছে। এখানে স্টাফরা পরীক্ষায় গার্ড পড়ছে, স্টাফদের স্যার বলতে শিক্ষার্থীদেরকে বাধ্য করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা প্রাতিষ্ঠানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, ক্যাম্পাস খোলা থাকলেও লাইব্রেরি সুবিধা পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা।

ছাত্রী হোস্টেলের সিসি টিভি ক্যামেরার দায়িত্বও পুরুষ স্টাফদের দেওয়া হয়েছে। এসব ঘটনায় তারা অবস্থান নিলে দ্বিতীয় বর্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থী তাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থানে হামলা করে। এসময় আন্দোলনকারী ও হামলাকারীদের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও হামলার ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের ৩জন আহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। তাদের দাবী মেনে না নিলে আগামী ২৭ নভেম্বরের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা বর্জনের হুমকিও দেয়।

আন্দোলনরত তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মহি উদ্দিন হৃদয় বলেন, ক্যাম্পাসে স্টাফ সিন্ডিকেটের কারণে আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। তাদের বিরুদ্ধে কথা বললে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। পরীক্ষার হলে সাধারণ স্টাফরা গার্ড দেয়, তাদেরকে স্যার বলতে আমাদের বাধ্য করা হচ্ছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের জামায়াত শিবিরের কিছু শিক্ষার্থী স্টাফদের সাথে যোগসাজস করে আমাদের আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালিয়েছে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ফাতেমাতুজ জহুরা বলেন, দেশের কোথাও কোন মহিলা হোস্টেলের দায়িত্ব পুরুষ স্টাফের কাছে থাকে না কিন্তু আমাদের এখানে হোস্টেল ও হোস্টেলের ভেতরে সিসি টিভির দায়িত্ব পুরুষ স্টাফের কাছে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে আমাদের হোস্টেলে একজন মহিলা সুপার দেওয়ার দাবী জানাচ্ছি।

দুপুরের দিকে ম্যাটস ক্যাম্পাসে আসেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ-স্বাচিপ’র সভাপতি ডা. ফজলে এলাহী খান। তিনি শিক্ষার্থীদের ৮ দফা দাবির বিষয়ে ম্যাটস অধ্যক্ষের মাথে আলোচনা করে আন্দোলনকারীদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা একাডেমিক ভবনের তালা খুলে দেন এবং ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেন।
শিক্ষার্থীদের দাবি দাওয়া সম্পর্কে ম্যাটস্’র অধ্যক্ষ মো. হাবিব-উল-করিম বলেন, শিক্ষার্থীদের কিছু দাবী যৌক্তিক। আন্দোলনকারীদের দাবীগুলোর মেনে নিয়ে সেগুলো সমাধানে কাজ করছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *