ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ’র সহকারী পরিচালকের দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযোগ

মোঃ জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ:
ঝিনাইদহ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সুচন্দন মন্ডলের বিরুদ্ধে
মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছে ঝিনাইদহের স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। শনিবার বেলা ১১টার
দিকে শহরের ব্যাপারীপাড়া এলাকার জোড়াপুকুর এলাকায় এই মানববন্ধন কর্মসুচি পালন
করা হয়। মানববন্ধন শেষে ঝিনাইদহ জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন ব্যবসায়ীরা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ঝিনাইদহ জেলা পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতির
সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, শ্রীকৃষ্ণ ভান্ডারের মালিক সুব্রত সাধুখাঁ, জেলা
পরিবেশক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুশীল কুমার, বাগাট মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিক
সুব্রত ঘোষসহ প্রমুখ ব্যবসায়ী। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঝিনাইদহ
চেম্বার অব কমার্সের সহ-সভাপতি নাসিম উদ্দীন।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ঝিনাইদহের
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সুচন্দন মন্ডলের বেপরোয়া কর্মকান্ডে
ক্ষুদ্র, মাঝারী উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা অতিষ্ঠ। তিনি অভিযানের নামে র্দুর্ণীতি, ক্ষমতার
অপব্যবহার ও স্বেচ্ছাচারিতা করে যাচ্ছেন।

তিনি ২০১৭ সালের ১৭ জুলাই যোগদানের পর থেকে জেলার ৬টি উপজেলার বিভিন্ন বীজের দোকান, তেলপাম্প, ব্রেড ফ্যাক্টরি, চানাচুর
কারখানা, রেস্টুরেন্ট, হোটেল-রেস্তোরাঁ, বেকারিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে দশ হাজার
থেকে শুরু করে লক্ষাধিক টাকা জরিমানা করে ব্যবসায়ীদের ক্ষতিগ্রস্থ করছেন। ব্যবসায়ীরা
অভিযোগ করেন, সুচন্দন মন্ডল ব্যবসায়ীদের অফিসে ডেকে নিয়ে জরিমানা ও ব্যবসা
প্রতিষ্ঠান সিলগালা করার ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করেন।

তার চাহিদা পূরণ না হলে ওই প্রতিষ্ঠানে ভ্রাম্যমাণ অভিযান পরিচালনা করাসহ তাকে বিভিন্নভাবে
হয়রানি করেন। ঝিনাইদহ শহরের অগ্নিবীনা সড়কের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শহীদ বীজ ভান্ডারের
মালিক শহিদুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সুচন্দন মন্ডলের কারণে এখন ব্যবসা করাই
দুরূহ হয়ে পড়েছে। তার ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে ব্যবসার পুঁজি হারানোর
উপক্রম হয়েছে। কয়েকদিন আগে তার বীজের দোকানে (শহীদ বীজ ভান্ডার) অভিযান চালিয়ে
২ লাখ ২৯ হাজার ৫শ’ টাকা জেলা তথ্য কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিকের মাধমে আদায়
করেন, যা সম্পুর্ন অবৈধ।

জেলা পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক
শরিফুল ইসলাম অভিযোগ করেন, সুচন্দন নিজেকে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট পরিচয় দিয়ে
টাকা আদায় করে বেড়ান। সৎ ব্যবসায়ীদের কাছে সুচন্দন মন্ডল এখন ‘মূর্তিমান
আতংক’ বলেও অভিযোগ করেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ী নেতা নাসিম উদ্দীন বলেন,
“সুচন্দন মন্ডলের চাঁদাবাজির বিষয়ে আমরা জেলা প্রশাসনকে অবহিত করেছি। কিন্তু
তার আচরণ পরিবর্তন হয়নি।

এ ব্যাপারে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী
পরিচালক সুচন্দন মন্ডল বলেন, তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ সত্য নয়। যাদের কাছ থেকে
জরিমানার টাকা আদায় করা হয়েছে তা বিধি মোতাবেক করা হয়েছে। অসৎ ব্যবসায়ীদের
বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করায় তার বিরুদ্ধে এমন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা
চরম অন্যায় বলে তিনি মনে করেন।

তিনি বলেন, মনোরঞ্জন সাধুখা বেশি দামে তেল বিক্রি
করছিল। এ জন্য তাকে জরিমনা করা হয়। সুশীল ব্রাদার্স মেয়াদুত্তীর্ন পন্য বিক্রি করছিল।
তার দোকানে তা সাজিয়ে রাখা হয়। সততা বেকারীতে সাল্টু মিশিয়ে পন্য তৈরী করা
হচ্ছিল।

শরিফুলের ভাড়া করা পাম্পে ভোক্তা অভিযান চালায়নি। চালিয়েছে নির্বাহী
ম্যাজিষ্ট্রেট। তাচাড়া শহীদ বীজ ভান্ডারে কোন জরিমানা নয়, কৃষকদের ক্ষতিপুরণের টাকা
আদায় করে দেওয়া হয়েছে বলে সুচন্দন মন্ডল জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *