ফেনী প্রতিনিধি :
ফেনীতে গরু ব্যবসায়ী শাহজালালকে গুলি করে হত্যা মামলার প্রধান আসামী কাউন্সিলর কালাম এর সহযোগী এবং এ হত্যা মামলার আসামী আশরাফ হোসেন রাজু (২৩) পরশুরামের বিলোনিয়া স্থলবন্দর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায় আটককৃতরা রাজুকে আদালতে তোলা হলে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা করা হয়। আদালত আসামীর তিন দিনের রিমান্ডের আবেদন মঞ্জুর করেন।
হত্যা ঘটনার দুই মাস পর মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত চারটার সময় ফেনী জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) থোয়াই অংপ্রু মারমার নেতৃত্বে পরশুরাম থানা পুলিশের সহযোগিতায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে রাজুকে পরশুরামের ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকার বিলোনীয়ার তালুকপাড়া থেকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃত রাজু কালামের ভাতিজা বলে জানা গেছে। জানা যায় গত ১৬ জুলাই (শুক্রবার) চাঁদা না দেয়ায় ফেনীর সুলতানপুরে শাহজালাল নামে এক গরু ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যা করে ফেনী পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলর কালাম ও তার তিন সহযোগী।
এই ঘটনায় ফেনী মডেল থানায় তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করে নিহত শাহজালালের পরিবার। পরে পুলিশ ওই ঘটনায় সগর নামে একজনকে আটক করলেও বাকী আসামীরা আত্মগোপনে চলে যায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে আটককৃত আসামী আশরাফ হোসেন রাজু (২৩) ফেনী পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড মধ্যম বিরিঞ্চি এলাকার মফিজ মেম্বার বাড়ির ইসমাইল হোসেন দুলাল এর ছেলে।
গত ১৬ জুলাই (শুক্রবার) গরু ব্যবসায়ী শাহজালালকে গুলি করে হত্যা মামলায় কাউন্সিলর কালামকে প্রধান আসামী করে ফেনী মডেল থানায় তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন নিহত গরু ব্যবসায়ী শাহজালাল পরিবার।
মামলার প্রধান আসামী কাউন্সিলর আবুল কালাম ও তার সহযোগী ও ভাতিজা আশরাফ হোসেন এসময় আত্মগোপনে চলে যান। ১৪ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) পুলিশ আসামী আশরাফ হোসেন রাজুকে পরশুরামের বিলোনীয়া এলাকার কাউন্সিলর কালামের মামার বাড়ি থেকে আটক করে।
উল্লেখ্য: গত ১৬ জুলাই চাঁদা না দেয়ায় ফেনীর সুলতানপুরে গরু ব্যবসায়ী শাহজালালকে গুলি করে হত্যা করে কাউন্সিলর কালাম ও তার দুই সহযোগী। ওই ঘটনায় পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান গরু ব্যবসায়ী শাহজালাল ১৫টি গরু বিক্রির জন্য ঘটনার দিন রাতে বাড়ির সামনে রাখে। একপর্যায়ে চাঁদা না দেয়ায় গরুগুলো ছিনতাই করতে স্থানীয় কাউন্সিলর আবুল কালামসহ তার তিন সহযোগী অস্ত্র নিয়ে ব্যবসায়ী শাহজালালকে জিম্মি করে।
পরে শাহজালালের চাচাতো ভাই আল আমীন বের হয়ে আসলে তাকেও মারধর করে সন্ত্রারীরা। পরে আল আমীনের স্ত্রী সুমি অনেক অনুরোধ করলে তারা চলে যায়। ঘটনাটি জানাজানি হলে কাউন্সিলরসহ তার সহযোগীরা মোটরসাইকেলে শাহজালালকে তুলে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে জমিতে মৃতদেহ ফেলে রেখে যায়।
পরে পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। ওই ঘটনায় জড়িত থাকায় ঘটনার দিনই সাগর নামে একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পরশুরাম মডেল থানার ওসি মু. খালেদ হোসেন রাজুকে গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ফেনী থানার পুলিশ জানায় আটককৃতরা রাজুকে আদালতে তোলা হলে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা করা হয়। আদালত আসামীর তিন দিনের রিমান্ডের আবেদন মঞ্জুর করেন।