তাড়াইল(কিশোরগঞ্জ)প্রতিনিধি:
কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত তাঁর ফুলের ফসল কবিতায় লিখেছেন,যদি জোটে একটি পয়সা খাদ্য কিনিয়ো ক্ষুধার লাগি’ দুটি যদি জোটে অর্ধেকে তার ফুল কিনে নিও হে অনুরাগী।তেমনি কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও দারিদ্রতার মাঝেও নিজের সামান্য আয়ে সংসারের খাদ্য কিনে বাকী টাকায় ফুল না কিনলেও প্রতিবন্ধী চা-পান বিক্রেতা কাঞ্চন মিয়া মাস্ক বিতরণ করে যাচ্ছেন পথচারীদের মাঝে।
জানা গেছে,তাড়াইল উপজেলার দামিহা ইউনিয়নের কাজলা সিংগুয়ার পাড় গ্রামের কৃষক মৃত আবদুল হেকিমের ছেলে কাঞ্চন মিয়া গেলো বছর সড়ক দূর্ঘটনায় নিজের একটি পা হারান।স্ত্রী-পুত্র নিয়ে দিশেহারা কাঞ্চন মিয়া নিজ এলাকায় একটি চায়ের দোকান খোলেন।সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত একাই দোকানে সময় দেন কাঞ্চন।সারাদিনে দোকান থেকে ৩থেকে চারশ টাকা আয় করে স্ত্রী ১ছেলে ও ১মেয়েকে নিয়ে কোনও রকমে দিনাতিপাত করেন কাঞ্চন মিয়া। দেশে প্রথম দিকে যখন করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে তখন থেকেই নিজ উদ্যোগেই তাঁর দোকানে আসা খরিদ্দারদের পাশাপাশি পথচারীদের মাঝে মাস্ক বিতরণ করে যাচ্ছেন তিনি ।প্রতিদিন ৫০থেকে ১শ মাস্ক বিতরণ করেন।এ পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ৫ শতর উপড়ে মাস্ক বিতরণ করেছেন কাঞ্চন মিয়া।
আজ ২৮ জুলাই বুধবার দুপুরে তাঁর দোকানে গিয়ে দেখা যায়,মাস্ক ব্যাতীত যে কোনোও লোক দেখলেই নিজ হাতে মাস্ক পড়িয়ে দিয়ে করোনা থেকে সুরক্ষিত থাকার কথা বলেন।এলাকার লোকজন প্রথম দিকে কাঞ্চন মিয়াকে নিয়ে হাসি তামাসা করলেও থেমে যাননি তিনি।
সিংগুয়ারপাড় গ্রামের লোকজনের সাথে কথা তাঁরা জানান,প্রতিবন্ধী চা-বিক্রেতা কাঞ্চন মিয়াকে সকলের সাহায়্য সহযোগীতা করা দরকার।অথচ তিনি নিজের সংসার চালাতেই যেখানে হিমশিম খায় সেখানে প্রতিদিন মাস্ক বিতরণ করে এলাকার জনগনকে করোনা থেকে সুরক্ষিত রাখছে।
চা-বিক্রেতা কাঞ্চন মিয়ার বলেন,কে কি বলে তার জন্যে আমার কিছু যায় আসেনা।সারাদেশে মহামারি করোনা ভাইরাসে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ সংক্রমিত হচ্ছে তাছাড়া অসংখ্য লোকের প্রাণহানি ঘটছে।
তাই সরকারের পাশাপাশি দেশ ও দশের জন্য আমারও কর্তব্য আছে বলে মনে করি।আমার সল্প আয়ে যতটুকু পারি গ্রামের মানুষকে মাস্ক দেয়ার চেষ্টা করি।সবাই করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে মুক্ত থাকুক এটাই আমার চাওয়া।