টেষ্ট ও ওয়ানডের পর পাহাড় টপকে টি-টোয়েন্টি সিরিজও জিতল বাংলাদেশ

বাংলারদর্পণ :
একমাত্র টেস্টে বিশাল জয়ের পর ওয়ানডে সিরিজে জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করা বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি সিরিজটা জিততে পারবে তো? সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এমন প্রশ্ন বড় হচ্ছিল।

কারণ দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি জিতে তিন ম্যাচ সিরিজে সমতায় ফেরা জিম্বাবুয়ে আজ তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে যে ১৯৩ রানের পাহাড় গড়ল। টি-টোয়েন্টিতে বিদেশের মাটিতে এর চেয়ে বড় রান তাড়া করে মাত্র একবারই জিতেছে বাংলাদেশ। তবে বড় টার্গেট পেরিয়ে আজও ঠিকই ম্যাচ জিতে নিল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল।

সৌম্য সরকারের ভীত গড়ে দেওয়া এক ফিফটির পর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দায়িত্বশীল ইনিংস ও শেষ দিকে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামা শামীম পাটোয়ারীর দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে পাঁচ উইকেটে ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। ৪ বল হাতে রেখে জিম্বাবুয়ের ১৯৩ রান পেরিয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে সফরকারীরা। সব মিলিয়ে এবারের জিম্বাবুয়ে সফরে সাত ম্যাচের ছয়টিতেই জিতল বাংলাদেশ।

রোববার (২৫ জুলাই) হারোরে স্পোর্টস ক্লাব মাঠের পিচ ছিল পুরো ব্যাটিং সহায়ক। তবুও টি-টোয়েন্টিতে ১৯৩ রান তাড়া করা চাট্টিখানি কথা নয়। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে শুরুতেই বিপদে পড়েছিল বাংলাদেশ। আজ সেই রাস্তায় এগুয়নি মাহমুদউল্লাহর দল। শুরুতে নাইম শেখ ফিরলে সাকিব আল হাসান ও সৌম্য সরকার প্রাথমিক ধাক্কাটা কাটিয়ে তুলেছেন। সাকিব ১৩ বলে ১ চার ২ ছয়ে ২৫ রান করে ফিরলে ৫০ রানের জুটি ভেঙেছে।

এরপর তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৬৩ রান তোলেন সৌম্য ও মাহমুদউল্লাহ। এই জুটিটাই বাংলাদেশের ইনিংসের মেরুদণ্ড। উইকেট ধরে রেখে রানের চাকাও সচল রেখেছিলেন দুই ব্যাটার। তাতে শেষ দিকে ঝড় তুলতে পেরেছেন আগের ম্যাচে অভিষিক্ত তরুণ শামীম পাটোয়ারী।

সৌম্য রান বাড়াতে গিয়ে ফিরেছেন ৪৯ বলে ৬৮ রান করে। তার ইনিংসে চার ৯টি, ছক্কা ১টি। বড় না হলেও আফিফ হোসেন ধ্রুবর ৫ বলে ১৫ রানের ইনিংসটিও ছিল কার্যকারী। এরপর শামীমকে নিয়ে দলকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে গেছেন মাহমুদউল্লাহ।

দল যখন জয় থেকে ৬ রান দূরে তখন মুজারাবানির দারুণ এক বলে রেগিজ চাকাভার দুর্দান্ত ক্যাচ হওয়ার আগে ২৮ বলে ৩৪ রান করেছেন মাহমুদউল্লাহ। শামীম ১৫ বলে ৬টি চারের সাহায্যে ৩১ রান করে অপরাজিত ছিলেন। জিম্বাবুয়ের হয়ে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন লুক জংওয়ে ও ব্লেসিং মুজারাবানি।

এর আগে ওয়েসলে মাদভেরে, রেগিজ চাকাবা ও রায়ান বার্লের ব্যাটে ১৯৩ রানের বড় সংগ্রহ গড়েছিল জিম্বাবুয়ে। শুরুতে বারবার শর্ট বল করে গেছেন তাসকিন আহমেদ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনরা। নাসুম আহমেদদের বল সহজেই ব্যাটে পেয়েছেন জিম্বাবুয়ানরা। এই সুযোগটা দারুণভাবে কাজে লাগিয়ে রানের পাহাড় বানিয়েছে চাকাভা, মাদভেরে, বার্লরা।

বাংলাদেশের বাজে বোলিংয়ের সুযোগ নিয়ে ছয় ওভারে ৬৩ রান তোলেন দুই ওপেনার মারুমান ও মাদভেরে। মারুমানি সাইফউদ্দিনের বলে ২০ বলে ২১ করে ফিরলে তিনে নেমে ঝড় তোলেন রেগিস চাকাভা। ২২ বলে ৪৬ রান করেছেন চাকাভা। তার ইনিংসে চারের মার নেই, ছক্কা মেরেছেন ৬টি। ওয়েসলে মাদভেরে ছক্কা হাঁকাতে পারেননি, তবে চার হাঁকিয়েছেন ৬টি। সাকিব আল হাসানের বলে ফেরার আগে ৩৬ বলে ৫৪ রান করেছেন মাদভেরে।

সংগ্রহটা দুইশর কাছাকাছি নিতে এরপর বড় ভূমিকা রাখেন রায়ান বার্ল। ফর্মে থাকা হার্ড হিটার ব্যাটার শেষ দিকে মাত্র ১৫ বলে ৩ চার ২ ছয়ে ৩১ রান করেন। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৯৩ রান তোলে জিম্বাবুয়ে।

অন্য সকার উদার হাতে রান বিলানোর দিনে বাংলাদেশের সফল বোলার সৌম্য সরকার। তিন ওভার বোলিং করে ১৯ রান খরচায় দুই উইকেট নিয়েছেন। সাকিব আল হাসান ৪ ওভারে ২৪ রানে নিয়েছেন এক উইকেট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *