ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, কৃষিজমি বিলীন হওয়ার শঙ্কা

আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় একটি পুকুরে ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে বালু উত্তোলন করায় কৃষি জমিসহ আশপাশের ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট এখন হুমকির মুখে পড়েছে। এদিকে পুকুর থেকে দিনের পর দিন বালু উত্তোলন করলেও পরিবেশ অধিদপ্তরসহ স্থানীয় প্রশাসন একেবারেই নিরব ভূমিকা পালন করছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের টেংরাপাড়া এলাকায় স্থানীয় প্রভাবশালী আফছু মিয়া ও তার ছেলে রাজীব মিয়া পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই তাদের নিজেদের একটি পুকুরে ড্রেজার বসিয়ে ভ’গর্ভস্থ থেকে বালু উত্তোলন করছে। স্থানীয়রা জানায়, আফছু মিয়া ও তার ছেলে রাজীব ২০২০ সালে ফসলী জমি নষ্ট করে একটি পুকুর খনন করে। তারপর এতে কিছুদিন মাছ চাষ করে।

গত ২ জুন ওই পুকুরে তারা ড্রেজার বসিয়ে ভূগর্ভস্থ থেকে বাণিজ্যিকভাবে বালু উত্তোলন শুরু করে।পরে উত্তোলনকৃত বালু পাইপের মাধ্যমে কোড়াতলী, টানপাড়া ও টেংপাড়াসহ আশপাশের এলাকায় নিয়ে বিক্রি করছে। এতে এক দিকে যেমন নষ্ট হচ্ছে কৃষি জমি অন্যদিকে ভরাট হয়ে যাচ্ছে এলাকার অনেক জলাশয়সহ পুকুর।

টানপাড়া গ্রামের সংগীত শিক্ষক আসারুল ইসলাম জানান, পুকুরের পাশে আমাদের কয়েকটি জমি রয়েছে। জমি বিলীন হয়ে যাওয়ার শঙ্কায় আমিসহ গ্রামের আরো কয়েকজন মিলে তাদেরকে বালু উত্তোলন না করতে অনুরোধ করি। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে হুমকি ধামকিমূলক আচরণ করে।

তিনি আরো জানান,অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়টি লিখিতভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করা হয়েছে। একই গ্রামের মোহাম্মদ হোসেন মিয়া জানান, উক্ত জায়গায় আমার একটি ধানী কৃষিজমি ছিল। তারা পুকুর খনন করায় আমার জমিটি ভেঙে বিলীন হতে থাকে। পরে এক প্রকার বাধ্য হয়েই জমিটি কম দামে তাদের কাছে বিক্রি করতে হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায় এভাবে অনেকেই তাদের কাছে জমি বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছে।

আখাউড়া উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান ভূঁইয়া স্বাপন বলেন, পুকুরের ভ’গর্ভস্থ থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করায় এই এলাকার কৃষি জমিসহ রাস্তাঘাটের ক্ষতি হচ্ছে। বালু উত্তোলন বন্ধ করার জন্য একাধিকবার তাদের বলেছি। তারা কর্ণপাত করেনি। পরে এসিল্যান্ডকে বিষয়টি অবগত করেছি।

এ ব্যাপারে রাজীব মিয়া বলেন, পুকুরের গভীরতা বাড়াতেই ড্রেজার দিয়ে পুকুর থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।

পাশের জমির কোনো ক্ষতি হবে না। তাছাড়া পুকুরের পাশে আমারও জমি রয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ নূরুল আমীন বলেন, বালু উত্তোলন করার বিষয়টি ভ’মি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন। তারপরও পরিবেশের কোনো ক্ষতি হচ্ছে কিনা তা আমরা খতিয়ে দেখবো।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আক্তার বলেন, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথেই তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যএসিল্যান্ডকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *