আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) সংবাদদাতা :
আর মাত্র ক’দিন বাদেই কোরবানির ঈদ। ঈদকে সামনে রেখে এসময় কামারদের দম ফেলার ফুসরত থাকত না। দিনরাত কামারশালাগুলোতে টুং টাং শব্দ লেগেই থাকতো। কিন্তু এবারের চলমান লকডাউনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় কামারদের ব্যস্ততা নেই বললেই চলে।
পৌরশহরের কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, আগের মতো কামারদের ব্যস্ততা নেই। লকডাউনে কয়েকটি কামারশালা খোলা থাকলেও তাদের হাতে তেমন কোনো কাজ নেই। ঈদকে ঘিরে আগের মতো তাদের বাড়তি প্রস্তুতিও নেই।
সহযোগিদের নিয়ে দিনভর দোকানে বসে আছেন অথচ কাঙ্খিত বিক্রি নেই।পৌরশহরের সড়কবাজার কলেজ রোডের অমূল্য কর্মকার নামের এক দোকানী জানান, আগে কোরবানী ঈদ আসলেই কাজের চাপ কয়েকগুণ বেড়ে যেত।
কিন্তু এ বছর ব্যবসার সময়টায় লকডাউন। তাই এবার সে পরিমানে হাতে কাজ নেই। বিক্রির আশায় অনেক মালামাল বানিয়ে রেখেছি । এগুলো বিক্রি করতে না পাড়লে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়বো।
একই বাজারের উত্তম কর্মকার নামে আরেক দোকানী বলেন, কোরবাণী ঈদের একমাস আগে থেকেই দা, ছুরি, বটি,চাপাতিসহ নানা ধরনের হাতিয়ার তৈরির কাজ শুরু হতো। পাশাপাশি থাকতো পুরাতন হাতিয়ারের মেরামতের কাজ। সব মিলিয়ে প্রায় লাখ টাকার বেচাবিক্রি হতো কিন্তু লকডাউনের কারণে সব শেষ।
কাজল কর্মকার নামের আরেক ব্যবসায়ি বলেন, আগে এই সময়ে কামারশালার সামনে বিক্রি করার জন্য সাজানো থাকতো কোরবানি করার বিভিন্ন সরঞ্জামাদি। বিক্রি শুরু হতো কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই। এবার ঈদ ঘনিয়ে এলেও বেচাবিক্রি নেই। বেচাবিক্রি হবেই বা কিভাবে? পুলিশের ভয়ে যে বাজারে মানুষই আসে না।
শহরের বড়বাজারের বাদল কর্মকার নামের এক ব্যবসায়ি জানান, ঈদের মাসখানেক আগ থেকেই কাজের ব্যস্ততা বাড়তো। প্রতিদিন গড়ে এক থেকে দুই হাজার টাকার কাজ করতে পারতাম। এবার লকডাউনের কারণে কাজ নেই বললেই চলে। তিনি আরো বলেন, নতুন হাতিয়ার বিক্রি নেই বললেই চলে।
পুরাতন হাতিয়ারে শান দেয়াও কমে গেছে।
পৌরশহরের সড়কবাজার ব্যবসা পরিচালনা কমিটির সহ- সভাপতি হুমায়ন কবির খোকা বলেন, তারা সারা বছর এই সময়টার জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। অথচ করেনার জন্য তাদের হাতে কাজ নেই। অনেকই দুশ্চিন্তা করছেন আগামী দিনগুলোতে তারা কিভাবে চলবেন। তবে প্রত্যাশা করছি আগামী দিনগুলোতে তাদের হাতে কাজ আসবে।