উচ্চ শিক্ষার আশায় সম্পদ বিক্রি : দালালের খপ্পরে পড়লেন মেধাবী ছাত্র হাসেম

নিজস্ব প্রতিবেদক :
কে না চায় সন্তানকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করতে, তেমনি গাইবান্ধায় এক অসহায় নিম্ন আয়ের পরিবার, শেষ সম্বল বিক্রয় করে মেধাবী ছেলে হাসেম আলীকে, উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য, চিনের Nanjing University of information science and technology (versity) তে ভর্তির জন্য চপল চয়ন নামে দুই প্রতারকের হাতে তুলে দিয়েছে ৫ লক্ষ টাকা।

প্রতারক চপল ও চয়ন দুই ভাই, হাসেমের পরিবারের কাছে ৫ লক্ষ টাকা নিয়ে, সুকৌশলে মেধাবী ছাত্র হাসেম আলীকে ৬ মাসের জন্য গত ২৩/০২/২০১৯ ইং তারিখে চিনে পাঠান।


হাসেম চিনে ৬ মাস অবস্থানের পর, হাসেমের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়, হাসেম-কে গত ২১/০৮/২০১৯ রাতিখে চিন থেকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়।

হাসেম ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরে কি জবাব দিবে পিতা মাথার কাছে, কি উচ্চ শিক্ষা লাভ করে দেশে ফিরলেন তিনি।

এ প্রশ্ন শুধু পিতা ও মাথার নয়, এ প্রশ্ন এলাকাবাসীরও মহা বিপাকে পরেছেন হাসেম আলী।

একপর্যায়ে হাসেম আলী এলাকায় ফোনে জানান, চপল ও চয়ন টাকা আত্মসাৎ করার জন্য আমাকে মাত্র ৬ ভিসা দিয়ে চিনে পাঠানো হয়।

কি ভাবে এ কথা অসহায় পিতা মাথাকে জানাবে হাসেম, সে নিজেও জানে শেষ সম্বল জমি বিক্রয় করে আমাকে উচ্চ শিক্ষার জন্য চিনে পাঠানো হয়েছে।

বিষয়টি এলাকাবাসী জানতে পেয়ে হাসেম আলীকে ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরিয়ে আনেন, বাড়ি ফেরার কিছু দিন পর হাসেম পিতা, মাথা ও স্থানীয় ইউপি সদস্য-সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতে প্রতারক চপল ও চয়নের বাড়িতে সালিশ বৈঠক আয়োজন করা হয়।

সালিশে চপল ও চয়ন দুই ভাইয়ের প্রতারণার গুমর ফাঁস হয়, স্থানীয় এলাকাবাসীর কাছে।

সালিশ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, চপল চয়ন দুই ভাই পিতা মোজাম্মেল হক, স্থানীয় ইউপি সদস্যের স্বামী আলম মিয়া ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, তাদের উপস্থিতে চপল ও চয়ন দুই ভাই খাতা কলমে লিখে ৩ লক্ষ ৪ হাজার ৫ শত টাকা খরচের হিসেব প্রকাশ করে, এরমধ্যে মাস্তান ভারার টাকাও হিসাব করা হয়।

বাকি ২ লক্ষ টাকার হিসেব দিতে পারেনি চপল ও চয়ন, স্থানীয় সালিসি মিটিংয়ে বিষয়টি সমাধাণ আনতে না পারায়, চপল ও চয়নের প্রতারণার বিষয়ে বেশ কয়টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় নিউজ প্রকাশ হয়।

দি-ধা দন্ডের এক পর্যায়ে, হাসেম জমি বিক্রয়ের অর্থ প্রতারকদের হাত থেকে ফেরত পেতে, গত ১০/০১/২১ ইং তারিখে চপল ও চয়ন-কে আসামী করে একটি প্রতারণার মামলা দায়ের করেন।

মামলা দায়ের হলে পুলিশ আসামীদের গ্রেফতারের জন্য বিভিন্ন ভাবে অভিযান চালাতে থাকে।
এক পর্যায়ে ডিবি পুলিশের একটি চৌকস টিম আসামী চপল ও চয়নকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতার কৃত আসামী চপল ও চয়ন কিছু দিন পরেই জামিনে বেড়িয়ে আসেন।

এখন পর্যন্ত বিষয়টি সমাধানে আসেনি, তাই ভুক্তভুগী অসহায় নিম্ন আয়ের পরিবারের সন্তান হাসেম আলী কি ন্যায় বিচার থেকে ছিটকে পরবে না আসলেই ন্যায় বিচার পাবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে পরিবারটি।

তাই সংশ্লিষ্ট বিচার বিভাগের কাছে, আত্মসাৎ হওয়া অর্থ ফেরত পেতে জোরালো দাবি জানিয়েছেন অসহায় শিক্ষার্থী হাসেম আলী।

মামলা সুত্রে জানা যায়, বাদী ও বিবাদী গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের বাসিন্দা।

একই ভাবে প্রতারণার শিকার হয়েছেন শিক্ষার্থী আহসান হাবিব ও রাশেদ মিয়া, ভবিষ্যতে আর কোন শিক্ষার্থী, চপল ও চয়নের কাছে, প্রতারণার শিকার না হয়, সে দিক খেয়াল রাখার জন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন সচেতন নাগরিক মহল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *