*যুবদল নেতা উপজেলা আ.লীগের সহ-সভাপতি পদে,
*সরকারি চাকুরিজীবিকে উপজেলা আ.লীগের কমিটিতে পদায়ণ,
*বহিষ্কৃত ও বিতর্কিত নেতাদের পদায়ণ,
*মূল ও সক্রিয় নেতাদের বাদ দিয়ে নিষ্ক্রিয়দের পদায়ণ ,
ফেনী প্রতিনিধি :
আবু সুফিয়ান মাস্টার ফেনীর সোনাগাজী উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক। সম্প্রতি ঘোষিত উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে সহসভাপতি পদেও তাঁর নাম আছে। কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক না হলেও এলাকায় তিনি পরিচিত ‘সুফিয়ান মাস্টার’ নামে। আবু সুফিয়ানের দুই সংগঠনের কমিটিতে পদ পাওয়া নিয়ে উভয় দলের নেতা-কর্মীদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর ফেসবুকে নানা মন্তব্য করেছেন তাঁরা।
আওয়ামী লীগের কমিটিতে নিজের নাম দেখে হতাশ হওয়ার কথা জানিয়েছেন আবু সুফিয়ান মাস্টার। আর শফি উল্যাহ মাস্টারের নাম লিখতে গিয়ে কম্পিউটারে টাইপিংয়ে ভুলবশত সুফিয়ান মাস্টারের নাম লেখা হয়েছে বলে জানান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
জানা যায়, ২০ জুন উপজেলা আওয়ামী লীগের ৭১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। ঘোষিত কমিটিতে আবু সুফিয়ান মাস্টারকে ৭ নম্বর সহসভাপতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। দলীয় প্যাডে স্বাক্ষর দিয়ে এ কমিটির অনুমোদন দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাফেজ আহাম্মদ ও সাধারণ সম্পাদক সাংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারী।
অনুমোদীত কমিটিতে পুর্বে সংগঠনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বহিষ্কৃত শেখ ইসমাইলকে সহ সভাপতি ও নুরুল আবছারকে যুগ্ন সম্পাদক করা হয়েছে। কমিটিতে অতিরিক্ত গুরুত্বপূর্ন এক নং সদস্য পদে আবদুল খালেক নামে এক ব্যাক্তিকে পদায়ন করা হয়েছে । যিনি কখনো আ.লীগের কোন কমিটিতে ছিলেন না বা কখনো দলের কোন কর্মসূচিতেও ছিলেন না। নুন্যতম যাদের আ.লীগ দলীয় কর্মী হিসেবে পরিচিতি নেই আবদুল খালেক’র মত এমন আরো ১৫জনকে উপজেলা আ.লীগের কমিটিতে স্থান দেয়া হয়েছে।
তারা হলেন, অনুমোদীত কমিটির আইন সম্পাদক তাজুল ইসলাম, ত্রান সম্পাদক বেলাল হোসেন, বিজ্ঞান সম্পাদক আমিনুল হক, মহিলা সম্পাদক উম্মে রুমা, সদস্য রফিক উল হক, আলা উদ্দিন মিয়া প্রমুখ। এ ছাড়া কমিটিতে সাংস্কৃতিক সম্পাদক করা হয়েছে সরকারি (বি.জি প্রেস) চাকুরিজীবি আনোয়ার হোসেন সুমনকে। পদবঞ্চিত নেতাদের দাবি , ব্যাক্তিগত বলয় সৃষ্টি করতে উপজেলা কমিটিতে সক্রিয় ও সাবেক নেতাদের বাদ দিয়ে নিষ্ক্রিয় এবং অন্য দলের লোকদের দিয়ে কমিটি করেছে সাধারন সম্পাদক খোকন।
সাবেক সাধারন সম্পাদক শামসুল আরেফিন জানান, কমিটিতে সকল সিনিয়র নেতাদেরকে জুনিয়রদের নিচে লিপি করে অপমানিত করা হয়েছে ।
সাবেক সদস্য ডা. গোলাম মাওলা জানান, সভাপতি-সম্পাদক তাদের পদ দীর্ঘস্থায়ী করতে এভাবে মুল নেতৃবৃন্দকে বাদ দিয়ে বিতর্কিতদের দিয়ে কমিটি সাজিয়েছেন।
সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সলিম উল্যাহ সেলিম জানান, উপজেলা আ.লীগের ২১সদস্যের উপদেষ্টা কমিটি করা হয়েছে । সেখানে ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে । উপজেলা বর্তমান ও সাবেক ৬ ইউপি সদস্য এবং জুনিয়র কর্মীদের উপজেলা আ.লীগের উপদেষ্টা করা হয়েছে। যা রীতিমত হাস্যকর।
সুফিয়ানের উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে পদ পাওয়া নিয়ে সংগঠনটির উপজেলা সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের ৭ নম্বর সহসভাপতি হবেন শফি উল্যাহ মাস্টার। ভুলবশত যুবদল নেতা আবু সুফিয়ান মাস্টারের নাম লেখা হয়েছে । আরো যেসব অসংগতি দেখা গেছে জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সংশোধন করে কমিটি প্রকাশ করা হবে।
জেলা আ’লীগের দপ্তর সম্পাদক শহীদ খোন্দকার জানান, উপজেলা আ.লীগের সভাপতি-সম্পাদকের স্বাক্ষরিত প্রস্তাবিত কমিটি যাচাই করে অনুমোদন দেয় জেলা আ.লীগ। ভুল থাকলে উপজেলা কমিটির পক্ষ থেকে লিখিত আবেদন করলে সংশোধন করা হবে।