কেম্পানীগঞ্জে হরতাল : সড়কে ক্রিকেট খেলছে

নোয়াখালী প্রতিনিধি:
কেম্পানীগঞ্জ উপজেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের ওপর কাদের মির্জার নেতৃত্বে হামলার প্রতিবাদে উপজেলা আ’লীগের ডাকা দ্বিতীয় দিনের হরতাল শেষে আজ তৃতীয় দিনের হরতাল চলছে। আতঙ্কে উপজেলা বিভিন্ন বাজারের অনেক দোকানপাট বন্ধ রয়েছে । তবে এ সময় সড়কে ক্রিকেট খেলতে দেখা যায় হরতাল সমর্কেদের।

সোমবার (১৪ জুন) সকাল ১১টার দিকে সেতুমন্ত্রীর ভাগনে ও উপজেলা আ.লীগের মুখপাত্র মাহবুবুর রশীদ মঞ্জু কোম্পানীগঞ্জ আওয়ামী লীগের চলমান হরতাল কাদের মির্জাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে সোমবার (১৪) জুন রাত ১২টা পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দেন।

হরতালের ঘোষণার সাথে সাথে উপজেলা আ.লীগের নেতাকর্মীরা উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের প্রধান প্রধান সড়ক দখলে নিয়ে কাদের মির্জাকে গ্রেপ্তারের দাবি বিভিন্ন স্লোগন দেয়। এতে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের প্রধান সড়ক গুলো দখলে নিলে কার্যত উপজেলার প্রধান বাণিজ্যক শহর বসুরহাটের সাথে পুরো কোম্পানীগঞ্জের যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যত অচল হয়ে পড়ে। এ সময় তারা উপজেলার বসুরহাট টু বাংলা বাজার সড়ক, কবিরহাট টু বসুরহাট সড়কে হরতাল সমর্থকদের সড়কে ক্রিকেট খেলায় মেতে উঠতে দেখা যায়।
সোমবার দুপুর থেকে হরতালের তৃতীয় দিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে পিকেটিং ও সড়ক অবরোধের খবর পাওয়া গেছে। উপজেলার বসুরহাট সড়ক-চাপরাশিরহাট সড়ক, বাংলাবাজার-চাপরাশিরহাট সড়ক, চরএলাহী সড়ক, বসুরহাট-চরপার্বতী সড়কসহ বিভিন্ন সড়কে অবরোধকারীরা গাছের গুড়ি ফেলে, টায়ারে আগুল জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করছে। ফলে ৮টি ইউনিয়নের অভ্যন্তরীণ সড়ক থেকে উপজেলার প্রধান শহর বসুরহাটের সঙ্গে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে বসুরহাট পৌরসভা এলাকায় ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকলেও অবরোধের তেমন প্রভাব পড়েনি। এছাড়া ৮টি ইউনিয়ন সর্বাত্মক অবরোধ কার্যত অচল ছিল।
উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ ও র‌্যাব অবস্থান নিয়েছে। র‌্যাব, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা সড়কগুলোতে টহল দিচ্ছে এবং সড়কে ফেলে রাখা গাছেরগুড়িসহ প্রতিবন্ধকতা তুলে নিচ্ছে। উপজেলা আ.লীগের মুখপাত্র মাহবুব রশিদ মঞ্জু বলেন, বাড়তি ২৪ ঘন্টার অবরোধের মধ্যে দাবী মানা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচী দেয়া হবে।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.সাইফুদ্দিন আনোয়ার জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য,গতকাল শনিবার (১২ জুন) দুপুর ১২টায় উপজেলা আ.লীগের মুখপাত্র ও সেতুমন্ত্রীর ভাগনে মাহবুবুর রশিদ মঞ্জু নিজের ফেসবুকে লাইভে এসে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আ.লীগের পক্ষ থেকে কোম্পানীগঞ্জে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি পালনের ডাক দেন। এরপর তিনি সোমবার সকাল ১১টায় লাইভে এসে অবরোধের সময় বাড়িয়ে দেন। তবে বাদলের ওপর হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি। মিজানুর রহমান বাদল সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের অনুসারী। আর আবদুল কাদের মির্জা ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র।

এর আগে, শনিবার (১২ জুন) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল তার ব্যক্তিগত গাড়িতে করে আ’লীগ নেতা আলালসহ ঢাকার উদ্দেশ্যে বসুরহাট হয়ে রহনা করে। যাত্রা পথে বসুরহাট বাজারের প্রেসক্লাব কোম্পানীগঞ্জের একটু সামনে পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে কাদের মির্জা তার ৪০-৫০জন অনুসারী নিয়ে বাজার পরিদর্শন করে আসার পথে বাদলের গাড়ির মুখোমুখি হয়। এ সময় কাদের মির্জার নেতৃত্বে তার অনুসারী কেচ্ছা রাসেল,ডাকাত মাসুদ,খান,শিহাব,সজল,আরিফ,ওয়াসিমসহ ৪০-৫০জন অনুসারী মিজানুর রহমান বাদলের গাড়ির গতি রোধ করে তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। উপজেলা আ’লীগের মুখপাত্র মঞ্জু অভিযোগ করেন,হামলাকারীরা বাদলের গাড়ির গতি রোধ করে তাকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে তার হাত-মাথা পাটিয়ে দেয়,পা ও বুকের হাড় ভেঙ্গে দেয় এবং কানে গুরুত্বর জখম করে। তবে এ বিষয়ে কাদের মির্জার নিজের ফেইসবুক অ্যাকাউন্টে দাবি করেন বাদলের ওপর হামলার ঘটনায় তিনি জড়িত নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *