সোনাগাজীর মাটি ও মানুষের নেতা মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আ.ক.ম ইসহাক’র ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী

সৈয়দ মনির :
মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক আ.ক.ম ইসহাক’র অাজ ২৭এপ্রিল ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী। দিবসটি উপলক্ষে পারিবারিকভাবে দোয়া, মিলাদ মাহফিল, কোর’আন তেলাওয়াত ও স্থানীয় মসজিদ গুলোতে দোয়া অায়োজন করা হয়েছে। তিনি ২০০৫ সালের ২৭ এপ্রিল চিকিৎসাধিন অবস্থায় মৃত্যুবরন করেন।

পরিশীলিত, মানবিক গুনাবলীর অধিকারী, আপামর গন-মানুষের পরম আস্থাভাজন, নির্লােভ, নিরহংকারী দল-মত নির্বিশেষে সকলের শ্রদ্ধার পাত্র ছিলেন জননন্দিত রাজনীতিক আ.ক.ম ইসহাক। মাটি মানুষের জন্য আজীবন লড়াকু দক্ষসংগঠক আ.ক.ম ইসহাক মিয়ার বর্ণাঢ্য জীবন ও কর্ম বর্তমান প্রজন্মের তরুন রাজনীতিকদের অনেকেরই অজানা। অথচ দেশ মাতৃকার এ বীর সন্তানের সংগ্রামী জীবন ইতিহাস ভবিষ্যত প্রজন্মের রাজনীতিকদের জন্য অনুকরনীয় হতে পারে।

১৯৪৯ সালে সােনাগাজী থানা আওয়ামীলীগের প্রথম সাধারন সম্পাদক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আ.ক.ম ইসহাক সােনাগাজীর বাখরিয়া গ্রামে এক সম্ভান্ত পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। তিনি ছিলেন আপাদমস্তক দেশপ্রেমিক সৎ রাজনীতিবিদ।

তিনি সােনাগাজী আওয়ামীলীগের কর্ণধার হিসেবে ৫২‘র ভাষা আন্দােলন, ৬২‘র শিক্ষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহন করেন। ৬৬‘র ছয় দপা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে তিনি কারাবরন করেন। তিনি ৬৯‘র আইউব বিরোধী আন্দোলনে সাহসী নেতৃত্ব দিয়েছেন। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামী হয়ে আবারো কারাবরন করেন।

তিনি মুক্তিযুদ্ধ সংগ্রাম পরিষদ সােনাগাজী থানা কমিটির সভাপতি হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধকালে ভারতর মুহুরী প্রশিক্ষন ক্যাম্পের ইনচার্জ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।

এ রাজনীতিক ১৯৫২ সাল থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত একটানা সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও ফেনী মহকুমা অা’লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭৯ সালের জাতীয় নির্বাচনে মিজান চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন আওয়ামীলীগের মনােনীত প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্ধিতা করেন। ১৯৮০ সালে তিনি বি.এন.পিতে যােগদান করেন এবং সােনাগাজী থানা বি.এন.পির সাধারন সম্পাদক ও পরবর্তীতে সভাপতির দায়িত্বপালন করন। তিনি বি.এন.পি নেতৃত্বাধীন ৪ দলীয় জােটের সােনাগাজী উপজেলার আহবায়ক ছিলেন এবং অামৃত্যু জেলা বিএনপির সহ সভাপতি ছিলেন ।

তিনি সােনাগাজী মোঃ ছাবের পাইলট হাই স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সােনাগাজী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি, সােনাগাজী সরকারী কলেজের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও গভর্ণিং বডির সভাপতি ছিলেন এবং সোনাগাজী ফ্রি -ক্যাডেট ইনস্টিটিউট এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। এ সৎ সাহসী রাজনীতিবিদ ২৭ এপ্রিল ২০০৫ ইং তারিখে মত্যুবরন করেন।

জননেতা আ.ক.ম ইসহাক সম্পর্ক তথ্য অনুসন্ধানকালে তার পুত্র জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সােনাগাজী উপজেলা সভাপতি হাসান মাহমুদ জানান- আমার বাবা দেশ মাতৃকার কল্যানে নিজের ব্যাক্তিগত সুখ-স্বাচ্ছন্দ বিসর্জন দিয়ে অসীম ত্যাগ স্বীকার করে আমরন আন্দােলন সংগ্রাম করে গেছেন। তিনি ব্যাক্তিগতভাবে কোন কিছু পাওয়ার আশায় রাজনীতি করেন নি।

রাজনীতির পাশাপাশি তিনি স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, মসজিদসহ অনেক সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত থেকে পৃষ্ঠপােষকতা করেছেন। অনেক গরীব শিক্ষার্থীর পড়া-লেখার সুযােগ করে দিয়েছিলেন। গৃহহীনকে ঘরের ব্যাবস্থা করে দিয়েছিলেন। ভূমিহীনকে সরকারী খাসজমি বন্দোবস্ত করে দিয়েছিলেন। ব্যাক্তিগত জীবনে তিনি একজন সরলপ্রান ধার্মিক মানুষ ছিলেন।

সারা জীবনের সংগ্রাম সাধনাকে অমর করে রাখতে তার নামে একটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারী স্থাপনা ও একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের নামকরনের জন্য সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জােরদাবী জানান। বাংলারদর্পণ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *